বাড়িতে লাগানো স্থায়ী গাছ, কিংবা বাগানে লাগানো গাছ কাটতেও এখন থেকে সরকারের অনুমতি নিতে হবে। ব্যক্তি মালিকানায় লাগানো গাছ কাটতে অনুমতির বিধান রেখে ‘বাংলাদেশ বনশিল্প উন্নয়ন করপোরেশন আইন ২০২১’-এর খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভা বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘মানুষ যারা সাধারণ বাগান করবে বা স্থায়ী যে গাছ লাগাবে, সেগুলোও তারা তাদের ইচ্ছামতো কাটতে পারবে না। এটা পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই এরকম নিয়ম আছে। সৌদি আরবে ইউ ক্যান নট ইমেজিন। আমার বাড়িতে একটি গাছ পড়ে গেছে এটা আমি সিটি করপোরেশন বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কাটতে পারব না। এটা ভারতেও আছে। এটাকে ভালোভাবে ইমপ্লিমেন্ট করতে বলা হয়েছে।’

বৈঠকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত ছিলেন সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা। পরে সাংবাদিকদের সভার বিস্তারিত ব্রিফ করেন মন্ত্রিসভা সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘মানুষ যারা সাধারণ বাগান করবে বা স্থায়ী যে গাছ লাগাবে, সেগুলোও তারা তাদের ইচ্ছামতো কাটতে পারবে না। এটা পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই এরকম নিয়ম আছে। সৌদি আরবে ইউ ক্যান নট ইমেজিন। আমার বাড়িতে একটি গাছ পড়ে গেছে এটা আমি সিটি করপোরেশন বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কাটতে পারব না। এটা ভারতেও আছে। এটাকে ভালোভাবে ইমপ্লিমেন্ট করতে বলা হয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘এটার মাধ্যমে সব বনাঞ্চলকে প্রটেকশন দেয়া হয়েছে। সামাজিক বনায়নের মাধ্যমে যে গাছ রয়েছে, সেগুলোও এর আওতায় আসবে। এখানে বুঝতে হবে স্থায়ী গাছের কথা বলা হয়েছে। লাউ গাছ কাটতে কোনো সমস্যা নাই। তবে এটাকে ইজি করে কর্তৃপক্ষকে অনুমতি দিতে বলা হয়েছে। কারণ একটা মানুষ বিপদে পড়লো তার গাছ ভেঙে গেল, এটা যদি সাত দিন পড়ে থাকে, সময় লাগে অনুমতি নিতে সেটা হলে তো মুশকিল। তাই এটাকে একটু সহজ করতে বলা হয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘ফরেস্ট ইন্ডাস্ট্রি ডেভেলপমেন্ট অর্ডিনেন্স ছিল, সেটা ১৯৫৯-এর আওতায় চলতো। সেটাকে হালনাগাদ করে আইন হিসেবে নেয়া হয়েছিল। অনেকগুলো বিষয় আছে, যেমন এটা একটা করপোরেশন হবে। করপোরেশনের একজন চেয়ারম্যান এবং পরিচালক থাকবে। তারা এটাকে প্রশাসনিকভাবে দেখবেন। বোর্ড থাকবে, সেটা নীতিগত বিষয়গুলো তদারকি করবে। এর কাজ হবে করপোরেশনের অধীনে উৎপাদিত কাঠ বা কাঠের আসবারপত্র আইনের অধীনে আনা। করপোরেশনের অধীনে রাবার বাগান থেকে রাবার কীভাবে আহরণ করা যায় এবং উন্নয়ন করা যায় তা এর মধ্যে থাকবে। বনজ সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর বিভিন্ন কৃত্রিম রাবার পণ্য বন্ধে আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব শিল্প সৃষ্টির বিষয়টি এখানে থাকবে।

সংরক্ষিত বনের পাশাপাশি অন্যান্য বনাঞ্চলকেও এই আইনে সুরক্ষা দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘অন্যান্য বনজ শিল্প যেমন আগর, যেটা সিলেটের একটি এলাকাতে হয়, পাশাপাশি সরকারি বন ছাড়াও অন্যান্য যে সব বন আছে সেগুলোকেও সংরক্ষণের বিশেষ ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। যেমন, পদ্মাতে আমরা ওপারে একটি বড় বন করেছি। যদিও এটি বন শিল্পের সংরক্ষিত বন না, তারপরেও এ বনগুলোকেও সংরক্ষণে রাখতে হবে। বঙ্গবন্ধু সেতুর উপরে যদি যান দেখবেন দুপারে আমরা যে বন করেছি এটা বাংলাদেশের সবচেয়ে সম্ভবত গভীর অরণ্য। এতো গভীর বন সুন্দরবনেও নেই বলে আমার ধারণা। ওখানে কিন্তু বিশাল এলাকায় আমাদের ফরেস্ট। এখনে আমরা গোখরা সাপ, অজগর সাপ, বানর, হরিণ আরও অনেক রকম পোকা মাকড় ছেড়ে দিয়েছি। এটাকেও এর আওতায় আনা হয়েছে, যদিও এটা বন না, কিন্তু তবুও এটাকে নিধন করা যাবে না। এগুলোকে সংরক্ষণ করতে হবে। তিনি বলেন, ‘এটা ব্যাপক প্রচারণা করতে বলা হয়েছে। কেবিনেট থেকে বলা হয়েছে পরিবেশ মন্ত্রণালয় এই আইনগুলোর কমপালশনগুলো বাস্তবায়নের আগে প্রোমশন ক্যাম্পেইন করে মানুষের দৃষ্টিতে আনতে হবে।

এলেঙ্গা থেকে যে রোডটা হলো হাটিকুমরুল পর্যন্ত সেখানে ৭৫ হাজার গাছ কাটতে হয়েছে, যখন ফোর লেন রোড করা হলো। এখন কিছু করার নেই। ৭৫ হাজার গাছ কাটা হয়েছে। আমি নিজে আড়াইলাখ গাছ বুনে এসেছি এটার জন্য। আগেই বোনা শুরু করে দিয়েছি। আমি শুরু করে দিয়ে এসেছি, আমার ধারণা এগুলো এতোদিনে বোনাও হয়ে গেছে। সুতরাং ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। যেটা কমপলসারি সেটা তো করতে হবে। এ সময় কক্সবাজারে সংরক্ষিত বনাঞ্চলে বিসিএস প্রশিক্ষণ একাডেমির জায়গা বরাদ্দের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ‘বিসিএস প্রশিক্ষণ একাডেমির জন্য কক্সবাজারে যে জায়গা দেয়া হয়েছে সেটা আমি পুরোটা জানি না। এটা জনপ্রশাসন দেখছে। আমি যতটুকু দেখেছি, যে জায়গায় গাছ নেই সেখানে স্থাপনাগুলো হবে।

গাছ কাটলে বনের অনুমতি নিয়ে কীভাবে ক্ষতিপূরণ করা যায় সেটা করতে হবে। সরকারি প্রকল্পে ক্ষতিপূরণের বিধান রাখা হয়। বাজেটও থাকে।

নিউজ ডেস্ক ।। বিডি টাইম্‌স নিউজ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে