টানা তিন দিন ধরে মাঘের শীতে কাঁপছে দেশ। বিশেষ করে রংপুর-রাজশাহী বিভাগসহ উত্তরাঞ্চলের জনজীবন অনেকটা স্থবির হয়ে পড়েছে। রাতভর উত্তুরে হিমেল বাতাসের সঙ্গে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মতো ঝরতে থাকা ঘন কুয়াশায় অনুভূত হচ্ছে হাড় কাঁপানো শীত।

চার বিভাগের বিভিন্ন জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ। সকালে সর্ব উত্তরের জনপদ পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শীতের কারণে উত্তরের জেলাগুলোতে জরুরি কাজ ছাড়া মানুষ বাড়ি থেকে বের হচ্ছে না। বিপাকে পড়েছেন দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষরা। অনেকেই শীত উপেক্ষা করেই কাজের সন্ধানে ছুটছেন। দিনের বেলা লোকজনকে দেখা গেলেও সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত তীব্র শীতে অনেকটাই জনশূন্য হয়ে পড়েছে ব্যস্ততম সড়ক ও হাটবাজারগুলো। বেড়ে গেছে রোগ-বালাই।হাসপাতালগুলোতে ভিড় বাড়ছে। বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বয়স্করা।

আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, চলতি মৌসুমের তৃতীয় দফা শৈত্যপ্রবাহ চলছে। তবে এই শীত দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে না। শীতের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে চলেছে পশ্চিমী ঝঞ্ঝা। ৩ ফেব্রুয়ারি পশ্চিমী ঝঞ্ঝা প্রবেশ করতে চলেছে। যার সঙ্গে থাকা ঘূর্ণাবর্তের জেরে ৪ ও ৫ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে বৃষ্টির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার থেকে তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করবে। বৃষ্টির পর ফের শীত বাড়তে পারে বলে জানান আবহাওয়াবিদগণ।

আবহাওয়া অফিস জানায়, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগসহ টাঙ্গাইল, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, রাঙ্গামাটি, ফেনী, মৌলভীবাজার, যশোর, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, বরিশাল ও ভোলা জেলা এবং সীতাকুণ্ড উপজেলার ওপর দিয়ে গতকাল মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।

আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশে আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল ও নদী অববাহিকায় মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা এবং অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। এছাড়া সারা দেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। রোববার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ময়মনসিংহে ১১ দশমিক ২, চট্টগ্রামে ১২ দশমিক ৫, সিলেটে ১১ দশমিক ৯, রাজশাহীতে ৮ দশমিক ৬, রংপুরে ৯ দশমিক ২, খুলনায় ১১ এবং বরিশালে ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। পরে তিন দিনে রাতের তাপমাত্রা আরো বাড়তে পারে।

পূর্বাভাসে আরো বলা হয়, উপমহাদেশীয় উচ্চ চাপবলয়ের বাড়তি অংশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ এবং এর কাছাকাছি বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। রোববার সকাল থেকে ঢাকায় পশ্চিম অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হচ্ছে। সকালে ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৮৪ শতাংশ।

নিউজ ডেস্ক ।। বিডি টাইম্‌স নিউজ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে