রাঙ্গামাটি-বান্দরবন-খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার পাশাপাশি কক্সবাজারের আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর কাছ থেকে জঙ্গিরা বিদেশি পিস্তল এবং একে টুয়েন্টি টু রাইফেলের মতো অত্যাধুনিক অস্ত্র সংগ্রহ করছে বলে ধারণা করছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। আর সংগৃহীত এসব অস্ত্র চট্টগ্রামকে ট্রানজিট রুট হিসেবে ব্যবহার করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। সে সাথে দেশে বৈধ অস্ত্রের বিপরীতে বরাদ্দকৃত বুলেট বা গুলি জঙ্গিদের কাছে যেতে পারে বলে আশংকা পুলিশের। গত বছরের শেষের দিকে নগরীর সদরঘাট এলাকায় জঙ্গি হামলার পর ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ উদ্ধার করে দু’টি একে টুয়েন্টি টু রাইফেল। পরবর্তীতে আমান বাজারে অপর একটি জঙ্গি আস্তানায় পাওয়া যায় আমেরিকায় তৈরি এমকে ইলেভেন রাইফেল। সে সাথে বাঁশখালী থেকে র্যাব উদ্ধার করে একে টুয়েন্টি টু’র পাশাপাশি একে ফোরটি সেভেন রাইফেলের মতো অত্যাধুনিক সব অস্ত্র।
সম্প্রতি ঢাকার গুলশানে ঘটে যাওয়া জঙ্গি হামলার ঘটনা এসব অস্ত্রকে আবারও সামনের দিকে নিয়ে এসেছে। কারণ ওই ঘটনায় ব্যবহৃত রাইফেল এবং পিস্তলের সাথে সাথে অনেকটা মিল রয়েছে এসব অস্ত্রের। এ অবস্থায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারাও মনে করছেন, জঙ্গিদের অস্ত্র পাচারের জন্য চট্টগ্রামকে ট্রানিজট রুট হিসেবে ব্যবহার করা হতে পারে। চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডি আই জি শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিস্তীর্ণ এলাকা হওয়ার কারণে সন্ত্রাসীদের কাছে ব্যবহার করার জন্য এটি সুবিধাজনক রুট। বান্দরবন, খাগড়াছড়ি, কক্সবাজার রিমোট এলাকা দিয়ে এই সব অস্ত্র আসার সম্ভাবনা নেই তা আমরা বলছি না। আর এই সব বন্ধ করতে সীমান্ত রক্ষী ও কোস্ট গার্ড কাজ করছে।’
জঙ্গিদের কাছ থেকে অত্যাধুনিক অস্ত্র উদ্ধারের অন্তত পাঁচটি মামলার তদন্ত শেষ করেছে চট্টগ্রামের পুলিশ প্রশাসন। সিএমপি অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) দেবদাস ভট্টাচার্য বলেন, ‘সন্ত্রাসী সংগঠনের মধ্যে এই লিংক আছে। এইসব অস্ত্র কোথা থেকে এসেছে এর জন্য তদন্ত চলছে।’ পুলিশ কর্মকর্তাদের মতে, আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে অস্ত্র সংগ্রহ সহজ হলেও এর বুলেট বা গুলি পাওয়া যায় না। এক্ষেত্রে দেশে বিভিন্ন জনের কাছে থাকা বৈধ অস্ত্রের বিপরীতে বরাদ্দকৃত গুলি জঙ্গিসহ সন্ত্রাসীদের কাছে যাচ্ছে কি না তা খতিয়ে দেখতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ চট্টগ্রাম পুলিশ সুপার এ কে এম হাফিজ আকতার।
বাংলাদেশ-ভারত এবং মিয়ানমারের দুর্গম সীমান্ত এলাকায় সক্রিয় রয়েছে বেশক’টি সন্ত্রাসী গ্রুপ। মূলত তারাই এ দেশের সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর কাছে অত্যাধুনিক অস্ত্র সরবরাহ করে আসছে ধারনা গোয়েন্দাদের।