রাবি প্রতিনিধিঃ আধুনিতার ছোঁয়ায় সব ধরনের সংস্কৃতির পরিবর্তন ঘটছে। শুধু সংস্কৃতি নয় দেশের চিত্রও পাল্টে যাচ্ছে। একশত বছরের বাঙালি ঐতিহ্যের আজ কোনো মিল খুঁজে পাওয়া যায় না। তাইতো নিজেদের মধ্যে বাঙালীয়ানায় হাজার বছরের লালিত সংস্কৃতিকে আধুনিকতার মধ্যেও একটু ছোঁয়া লাগাতে প্রচেষ্টার কমতি নেই কারো। থেমে থাকেনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ও, উৎসবমুখর পরিবেশে, বর্ণিল আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ে পালিত হচ্ছে বাঙালির ঐতিহ্য পহেলা বৈশাখ। ক্যাম্পাস ঘিরে শিক্ষার্থী আর উৎসুক জনতা বাংলা নবর্ষকে স্বাগত জানাতে মেতেছেন উৎসবে । এদিন বর্ণিল শাড়ি, পাঞ্জাবি, ধুতি-লুঙ্গী পড়ে শিক্ষার্থীরা ইলিশ-পান্তা খেয়ে দিবসের কর্মসূচি শুরু করেছেন।
মস্তক তুলিতে দাও অনন্ত আকাশে প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে রোববার বেলা ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা চত্বরে উপাচার্য এম আব্দুস সোবহান বর্ষবরণের উদ্বোধন করেন।এসময় উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সকলকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান। নতুন বছরটি সকলের জন্য শুভ ও কল্যাণময় হোক, বয়ে আনুক সাফল্য ও সমৃদ্ধি এই প্রত্যাশাও ব্যক্ত করেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় উপ-উপাচার্য চৌধুরি মো. জাকারিয়া,অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা প্রক্টর প্রফেসর মো.লুৎফর রহমান, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক লায়লা আরজুমান বানু, জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক প্রভাষ কুমার কর্মকার প্রমুখ । এরপর সেখান থেকে একটি বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। শোভাযাত্রায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারীরা অংশ নেন। শোভাযাত্রা শেষে চারুকলা অনুষদ চত্বরে বিভিন্ন লোকসঙ্গীত, নাটক, নাচ, যন্ত্রসঙ্গীত ও কবিতা আবৃতি দিয়ে শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
বর্ষবরণে এবার ঘোড়া, হাতি ও ময়ুরের প্রতিকৃতি তৈরি করা হয়েছে। ঘোড়ার প্রতিকৃতি যা ‘গতি’র বার্তা বহন করছে। এটি দীর্ঘদিন ধরে ঝিমিয়ে থাকা বাংলাদেশে অর্থনীতির বর্তমান গতিকে উপস্থাপন করছে। আর ময়ুরের নাচ ও রঙিন পালক উৎসবের আমেজকে নির্দেশ করবে। হাতির প্রতিকৃতি বাংলাদেশের ধাবমান বৃহৎ অর্থনীতির প্রতীক হিসেবে বার্তা বহন করছে।
এছাড়া নববর্ষকে বরণ করতে সকাল ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা, বাংলা, দর্শন, আইন বিভাগ, ইতিহাস, নাট্যকলা, মার্কেটিং, ইসলামের ইতিহাস, আরবী সহ বিভিন্ন বিভাগ পৃথকভাগে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করে। এই শোভাযাত্রায় বাঙালি সংস্কৃতির বিভিন্ন চিত্র তুলে ধরা হয়। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাব, কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক জোটসহ বিভিন্ন সংগঠন নানা কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে দিবসটি উদযাপন করছেন।
বর্ষবরণের সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, বর্ষবরণ উপলক্ষে ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। ক্যাম্পাসজুড়ে মোতায়েন রয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ। বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকগুলোতে ব্যবস্থা করা হয়েছে বিশেষ নজরদারির। আশা করছি প্রতিবারের মতো এবারও নির্বিঘ্নে বৈশাখ উদযাপিত হবে।
মেশকাত মিশু
রাবি নিউজ ডেস্ক ।। বিডি টাইম্স নিউজ