শুষ্ক মৌসুমে ব্রহ্মপুত্র নদীর দুই-তৃতীয়াংশ পানি যদি, চীন কিংবা ভারত সরিয়ে নেয়, বাংলাদেশের অর্ধেক এলাকা, মানুষ বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়বে। এমন আশঙ্কা করছেন, বিশেষজ্ঞরা। বাস্তবতা হচ্ছে, পানি সরিয়ে নেয়ার সেই পরিকল্পনা, ভারত আর চীনের আছে। অথচ বাংলাদেশ এ নিয়ে, একেবারেই নিশ্চুপ।
ব্রহ্মপুত্র। চীন থেকে ভারত হয়ে বাংলাদেশে এসে নাম নিয়েছে যমুনা। শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশের মোট পানি প্রবাহের ৭৫ ভাগ আসে এই নদী থেকে। যার ওপর নির্ভরশীল দেশের ৭০ ভাগ মানুষ।
উৎসস্থল চীনে এই নদীর নাম ইয়ারলাং সাংপো। যেখানে এরিমধ্যে একটি ড্যাম তৈরি হয়েছে। আরো তিনটির অনুমোদন দিয়ে রেখেছে চীন। তাদের দাবি, এগুলো সবই জলবিদ্যুৎ প্রকল্প, পানি প্রত্যাহারের জন্য নয়। তবে, তাদের যে উত্তরমুখী পানি প্রত্যাহার পরিকল্পনা আছে, তাতে এই নদীর পানিও যুক্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা আছে।
চীন থেকে অরুনাচল দিয়ে ভারতে ঢুকে এর নাম হয়েছে ব্রহ্মপুত্র। এরপর আরো কিছু রাজ্য ঘুরে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ কিংবা বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য, এই নদীর অববাহিকায় বেশ কয়েকটি ড্যাম তৈরি করেছে ভারতও; এখন তারা মেগা ড্যাম প্রকল্পের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয়, ভারতের আন্ত নদী সংযোগ প্রকল্প। তাদের ২৬টি প্রকল্পের মধ্যে অন্যতম, ব্রহ্মপুত্রের পানি সরিয়ে, দক্ষিণ ভারতে নিয়ে যাওয়া।
বাংলাদেশ তার অধিকার রক্ষা করতে পারবে কি, পারবে না, তা রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। সমস্যা সমাধানে দরকার, অববাহিকা ভিত্তিক ব্যাবস্থাপনা। আর, তা ভরত-বাংলাদেশ-চীনের যৌথ উদ্যোগ ছাড়া সম্ভব নয়। অনেকবার যোগাযোগ করেও, এ বিষয়ে কথা বলতে পানি সম্পদ মন্ত্রীর দেখা মেলেনি। তবে, কিছুদিন আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, এ নিয়ে তারা কাজ করছে।
চীন ও ভারতের বিতর্কিত সীমা দিয়ে প্রবাহমান এই নদী, যেখানে যুদ্ধও হয়েছিল একবার। তাই অনেকে মনে করেন, ভবিষ্যতে আঞ্চলিক বিবাদের কারণ হতে পারে ব্রহ্মপুত্রের পানি।