পূর্ণিমা সরকার, বশেমুরবিপ্রবি সংবাদদাতাঃ ‘বিদ্যুৎ বিদ্যুৎ বিদ্যুৎ চাই, হলে হলে বিদ্যুৎ চাই’-এমনি স্লোগানে মুখরিত ক্যাম্পাস। বিদ্যুতের দাবিতে এবার উপাচার্য ভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের(বশেমুরবিপ্রবি) আবাসিক হলের সাধারন শিক্ষার্থীরা। আজ ১৯’শে মে(রবিবার) বেলা ৩ঘটিকায় এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোর কয়েক শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
তীব্র তাপদাহে পুড়ছে দেশ, সাথে যুক্ত হয়েছে বিদ্যুৎ বিভ্রাট। বিদ্যুতের অভাবে শ্রেণীকক্ষে পাঠদান বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের। নিয়মিত ক্লাস বাদ দিয়ে নিজ নিজ মেসে ফিরে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। এমনি ঘটনা ঘটেছে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে(বশেমুরবিপ্রবি)। গত কয়েকদিন যাবৎ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা দিয়েছে, নিয়মিতভাবে আবাসিক হল, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ভবন, একাডেমিক ভবন এবং প্রশাসনিক ভবনে চলছে বিদ্যুৎ বিভ্রাট। বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারনে তীব্র গরমে শ্রেণীকক্ষগুলোতে নিয়মিত পাঠদান সম্ভব হচ্ছেনা, এরই মধ্যে অতিষ্ট জনজীবন। অনেক বিভাগে চলছে পরীক্ষা, তীব্র গরমে শিক্ষার্থীরা বাধ্য হয়েছে পরীক্ষা দিচ্ছে। এতে অনেক শিক্ষার্থী শারীরিক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে।
আবাসিক হলগুলোতেও চলছে একই অবস্থা। তাছাড়া আবাসিক হলের গণরুমগুলোতে প্রবেশ করলে মনে হচ্ছে যেন আগুনের গোহায় প্রবেশ করা হয়েছে। এতে মারাত্মকভাবে অসুস্থ হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। প্রতিদিন একাধিক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। বিদ্যুতের তীব্র অভাবে অমর ২১শে ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ভবনেরও একই অবস্থা। বিদ্যুতের এমন অবস্থা দেখে পূর্বের তুলনায় শিক্ষার্থীরা এখন গ্রন্থাগারে যাচ্ছে না। এবিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গ্রন্থাগারে নিয়মিত পড়ুয়া গণিত বিভাগ ২০১৯-২০সেশনের এক শিক্ষার্থী বলেন, সামনে আমার পরীক্ষা। মেসে ঠিকভাবে পড়তে পারি না সেজন্য গ্রন্থাগারে পড়তে আসি। কিন্তু এখানে বিদ্যুতের মারাত্মক সমস্যা। দিনের বেশিরভাগ সময়ই বিদ্যুৎ থাকে না। এভাবে যদি চলতে থাকে তাহলে আমার মত বাকি শিক্ষার্থীদের অবস্থা বেগতিক হয়ে যাবে।
শিক্ষার্থীদের সূত্রে জানা যায়, গত কয়েকদিন যাবৎ বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে বিদ্যুৎ থাকছে না। এতে মাত্রাতিরিক্ত গরমে শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে। এমনকি দিনের বেশিরভাগ সময় স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবন, প্রশাসনিক ভবন, অমর ২১শে ফ্রেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ভবনে বিদ্যুৎ থাকছে না। যত সময় বিদ্যুৎ থাকছে তা পর্যাপ্ত পরিমাণ না। বিদ্যু বিভ্রাটের কারনে নিয়মিত শ্রেণীকক্ষে পাঠদান করানো সম্ভব হচ্ছে না বলে জানা যায়। এতে শিক্ষার্থীরা বাধ্য হয়ে অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। অবস্থান কর্মসূচি সম্পর্কে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সোহাগ বলেন, তীব্র গরমে আবাসিক হলে থাকা যায় না। গণরুম গুলো যেন গনকবরে পরিণত হয়ে গেছে। শিক্ষার্থীরা রুমের মধ্যে থাকতে পারছে না। বাধ্য হয়ে তারা দিনের বেশিরভাগ সময় গাছতলা কিংবা ছায়াযুক্ত স্থানে বসে বসে সময় পাড় করে। এভাবে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল চলতে পারে না বলে জানা তিনি।
এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. দলিলুর রহমান বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রান্সফর্মারের ধারন ক্ষমতা কম। একসাথে বিভিন্ন জায়গায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করলে ট্রান্সফর্মার নষ্ট হয়ে যাবে। একবার ট্রান্সফর্মার নষ্ট হয়ে গেলে এটা সাড়াতে অনেক সময় লাগবে। সেজন্য আমরা যতটুকু বিদ্যুৎ পাচ্ছি সেটা প্রতিটি জায়গায় অল্প অল্প করে সরবরাহ করছি। তিনি বলেন, শিক্ষার্থী বিদ্যুতের অভাবে কষ্ট পাচ্ছে। এটা আমরা অনুভব করছি। সেজন্য আমরা খুব দ্রুত এবিষয়ে বিকল্প ব্যবস্থা নিচ্ছি। আশা করি খুব দ্রুত ব্যবস্থা করতে পারবো।