উপমহাদেশের সংগীতজগতের কিংবদন্তি ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ১৯৭২ সালের আজকের এই দিনে ভারতের মাইহারে মারা যান এ অঞ্চলের রাগসংগীতের নতুন অনেক রাগের স্রষ্টা এই সংগীতজ্ঞ। নামকরা অনেক উচ্চাঙ্গ সংগীত বাদকের গুরু ছিলেন তিনি। এই সুরসাধককে ব্রিটিশ সরকার ‘খাঁ সাহেব’ উপাধিতে ভূষিত করে। তিনিই প্রথম বাঙালি, যিনি সর্বপ্রথম পাশ্চাত্যে উপমহাদেশের রাগসংগীতকে পরিচিত করান।

ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার শিবপুর গ্রামে ১৮৬২ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন খ্যাতনামা উচ্চাঙ্গ সংগীতশিল্পী ও সরোদবিশারদ। তার বাবা সংগীতজ্ঞ সবদর হোসেন খাঁ ওরফে সদু খাঁ। ছোটবেলায় অগ্রজ ফকির আফতাবউদ্দিন খাঁর কাছে সংগীতে হাতেখড়ি হয় আলাউদ্দিন খাঁর। মাত্র ১০ বছর বয়সে বাড়ি থেকে পালিয়ে এক যাত্রাদলে যোগ দেন তিনি। সুরের সন্ধানে যাত্রাদলের সঙ্গে ঘুরে বেড়ান গ্রামে গ্রামে। ওই সময় তিনি জারি-সারি, বাউল, ভাটিয়ালি, কীর্তন, পাঁচালি প্রভৃতি গানের সঙ্গে পরিচিত হন। পরে কলকাতায় গিয়ে প্রখ্যাত সংগীত সাধক গোপাল কৃষ্ণ ভট্টাচার্য ওরফে নুলো গোপালের শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। বাঁশি, পিকলু, সেতার, ম্যাডোলিন, বেঞ্জো ইত্যাদি বাদ্যযন্ত্র বাজানো শেখেন সংগীত পরিচালক অমৃত লাল দত্ত ওরফে হাবু দত্তের কাছে। সেই সঙ্গে তিনি লবো সাহেব নামে এক গোয়ানিজ ব্যান্ডমাস্টারের কাছে পাশ্চাত্য রীতিতে এবং বিশিষ্ট সংগীতজ্ঞ অমর দাসের কাছে দেশীয় পদ্ধতিতে বেহালা শেখেন। এ ছাড়া হাজারী ওস্তাদের কাছে শেখেন মৃদঙ্গ ও তবলা। এভাবে তিনি সর্ববাদ্যবিশারদ হয়ে ওঠেন।

ভারত সরকার ১৯৫২ সালে তাকে ‘সংগীত নাটক আকাদেমি সম্মান’, ১৯৭১ সালে ‘পদ্মভূষণ’, ১৯৬১ সালে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় ‘দেশিকোত্তম’ এবং দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় ‘ডক্টর অব ল’ উপাধিতে ভূষিত করে।নবীনগরের শিবপুরে রয়েছে তার নিজ হাতে গড়া একটি মসজিদ, এলাকাবাসীর উদ্যোগে গড়ে তোলা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। দিনটি উপলক্ষে আজ নবীনগরে আলাউদ্দিন খাঁ স্মৃতি সংসদ, শিবপুর আলাউদ্দিন খাঁ মহাবিদ্যালয় ও উপজেলা প্রশাসন কোরআনখানি, মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে। এ ছাড়া স্মৃতিচারণমূলক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।

অনলাইন নিউজ ডেস্ক ।। বিডি টাইমস নিউজ 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে