ব্রাহ্মণবাড়িয়া সংবাদদাতাঃ ধর্ম প্রতিমন্ত্রী আলহাজ অ্যাডভোকেট শেখ মো. আব্দুল্লাহ ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি…রাজিউন)।শনিবার রাত ১১টা ৪৫ মিনিটে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তিনি ডায়াবেটিকস সহ নানা স্বাস্থ্যগত জটিলতায় ভুগছিলেন।

ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মুক্তিযাদ্ধা অ্যাডভোকেট শেখ মো. আব্দুল্লাহর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি।

শনিবার (১৩ জুন) রাতে এক শোকবার্তায় মোকতাদির চৌধুরী এমপি বলেন, শেখ আব্দুল্লাহর মৃত্যুতে দেশের রাজনীতিতে অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল। তিনি ছিলেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শের একজন পরীক্ষিত সৈনিক। তিনি আমৃত্যু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শকে ধারণ করে দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করে গেছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ, গণতন্ত্র ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে তার অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। আমি তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।

উল্লেখ্য, শেখ মো. আব্দুল্লাহ ১৯৪৫ সালের ৮ সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জ জেলার মধুমতী নদীর তীরবর্তী কেকানিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মরহুম আলহাজ শেখ মো. মতিউর রহমান এবং মা মরহুমা আলহাজ মোসাম্মৎ রাবেয়া খাতুন। চার ভাই তিন বোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়।তিনি স্থানীয় গওহরডাঙ্গা হাফেজিয়া মাদ্রাসায় কোরান হেফজের মাধ্যমে শিক্ষা জীবন শুরু করেন। শিক্ষা জীবন শেষে তিনি সুলতানশাহী কেকানিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। পরবর্তীতে অ্যাডভোকেট হিসেবে গোপালগঞ্জ জজকোর্ট এবং ঢাকা জজকোর্টে প্র্যাকটিস শুরু করেন।

ছাত্রজীবনেই তিনি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। খুলনার আযম খান কমার্স কলেজে প্রথম ভিপি নির্বাচিত হন। গত শতকের ষাটের দশকে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে পূর্ব পাকিস্তানে ছয়দফার উত্তাল আন্দোলন চলছিল । এ সময় ১৯৬৬ সালের ছয়দফা আন্দোলনে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে রাজনীতিতে গভীরভাবে সম্পৃক্ত হন। যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা যুবনেতা শেখ ফজলুল হক মনির নেতৃত্বে তিনি আওয়ামী যুবলীগে যোগদান করেন ।

এ সময় তিনি বঙ্গবন্ধুর সরাসরি তত্ত্বাবধানে গঠিত গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর তিনি কেন্দ্রীয় আওয়ামী যুবলীগের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। এরপর ১৯৭০ এর নির্বাচনে স্থানীয় রাজনীতিতে জড়িত হয়ে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামীলীগের ব্যাপক নির্বাচনী কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন।

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ফ্রন্ট মুজিব বাহিনীর সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত হয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।আলহাজ অ্যাডভোকেট শেখ মো. আব্দুল্লাহ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্নেহধন্য ছিলেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে বৃহত্তর খুলনা অঞ্চলে বিভিন্ন সাংগঠনিক ও রাজনৈতিক দায়িত্ব পালন করেন।শেখ মো. আব্দুল্লাহ দীর্ঘ দিন যাবত ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বোর্ড অব গভর্নরসের সম্মানিত গভর্নর হিসেবে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেন। এছাড়া ১৯৯৬-২০০১ সাল পর্যন্ত অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেডের পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন।

জহির সিকদার
নিউজ ডেস্ক ।। বিডি টাইম্‌স নিউজ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে