রাজশাহী নগরীতে মোটরসাইকেল আটকে কাগজপত্র দেখতে চাওয়ায় ট্রাফিক পুলিশের ক্ষিপ্ত হয়ে নিজের বাইকে আগুন দিয়েছেন আশিক আলী (৩০) নামে এক যুবক। ঘটনার পর যুবককে আটক করে পুলিশ। পরে মুচলেকা নিয়ে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। সোমবার দুপুর পৌনে ২’টার দিকে নগরীর হড়গ্রাম এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। মোটরসাইকেল আরোহী আশিক আলী নগরীর কাশিয়াডাঙ্গা থানার কাঁঠালবাড়িয়া হাড়ভাঙ্গা এলাকার আসাদ আলীর ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হড়গ্রাম বাজারে রুটিন দায়িত্বে ছিলেন রাজশাহী নগর পুলিশের ট্রাফিক সার্জেন্ট আব্দুল কাইয়ুম। দুপুর পৌনে ২টার দিকে আরও দুই আরোহীসহ আশিক আলী ওই এলাকা অতিক্রম করছিলেন। চেকপোস্টে সার্জেন্ট তাদের আটকে দেন। কাগজপত্র দেখতে চাইলে আপত্তি জানায় মোটরসাইকেল আরোহী। চাবি নিতে চাইলে বাধাও দেন।
এসব নিয়ে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে নিজের মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেন আশিক আলী। ওই সময় কোর্ট রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় টহল দায়িত্বে ছিলেন নগরীর কাশিয়াডাঙ্গা থানার উপপরিদর্শক মৌসুমী আক্তার। খবর পেয়ে তিনি সেখানে যান। মৌসুমী আক্তার জানান, একে তো মোটরসাইকেলে তিনজন আরোহী ছিলেন। তার ওপর তাদের কারও মাথায় হেলমেট ছিল না। সঙ্গে মোটরসাইকেলটির কাগজপত্রও নেই। চেকপোস্টে মোটরসাইকেলটি আটকে মামলা দিতে চেয়েছিলেন ট্রাফিক সার্জেন্ট। এক পর্যায়ে তাকে কাগজপত্র এনে দেখানোর শর্তও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি সেই সুযোগ না নিয়ে নিজেই মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেন।
মৌসুমী আক্তার আরও বলেন, ঘটনাস্থলটি নগরীর রাজপাড়া থানা পুলিশের আওতাধীন। আগুনে পুড়ে যাওয়া মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করে রাজপাড়া থানায় নেয়া হয়েছে। এই ঘটনায় মোটরসাইকেল আরোহী আশিক আলীকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নগর ট্রাফিক পুলিশের হেফাজতে নেয়া হয়। পরে মুচলেকা নিয়ে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
নগর পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) অনির্বান চাকমা বলেন, ঘটনার পর মোটরসাইকেল আরোহী আশিক আলীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এছাড়া তার বাবার সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। সম্প্রতি একটি ব্যবসায় মোটা অংকের আর্থিক ক্ষতির শিকার হন আশিক আলী। এ’নিয়ে তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। এরই মাঝে ট্রাফিক পুলিশ কাগজপত্র না থাকায় তার বিরুদ্ধে মামলা দিতে চেয়েছিলেন। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই তিনি এই কাণ্ড ঘটান বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।