ইয়াছির আরাফাত খোকন(বিশেষ প্রতিনিধি): কক্সবাজার শহরে গত ৪’ই ফেব্রুয়ারী ভোরে চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের গুলিতে মারাত্মক আহত হয়েছে শহর যুবদল নেতা সাইফুল ইসলাম (৩৮)। তিনি কক্সবাজার সদর এর বাস টার্মিনাল এলাকার নুরুল হুদা জুনুর জুনুর মেঝ মেঝ ছেলে। নিত্যদিনের কাজ সেরে বাড়ি যাওয়ার পথে সন্ত্রাসীরা পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে তাকে গতিরোধ করে গুলি করে। যুবদল নেতা সাইফুল ইসলামকে বহনকারী মোটরসাইকেল চালক সহযোগি মোহাম্মদ মুসা ও আশংকাজনক অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেলে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও আহত সাইফুল এবং মুসা জানান গতরাতে প্রতিদিনিরে মত নিয়মিত কাজ সেরে মোটরসাইকেল যোগে বাসায় যাওয়ার পথে এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা পূর্ব লার পাড়ার ব্যবসায়ী আরিফের বাসার সামনে পৌছানো মাত্রই এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়ে। সড়কে স্পীড ব্রেকার থাকায় গাড়ির গতি স্লো হলে সন্ত্রাসীদের গুলির টার্গেট করতে সহজ হয়। প্রথমে মোটরসাইকেল চালক মুসার মাথায় গুলি লাগলে সে সড়কে ছিটকে পড়ে। গাড়ির পেছনে থাকা সাইফুল ও গাড়ি হতে পড়ে গেলে গাড়ির সামনে পেছনে এবং ডান পাশ হতে সন্ত্রাসীরা এসে অত্যন্ত কাছ থেকে গুলি করে তার বুকে। গুলি খেয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে গেলে পেছন থেকে তিনিটি চাকুর স্টেপ করে মৃত্যু নিশ্চিতের লক্ষ্যে। গুলির আওয়াজ ও তাদের গোঙানির শব্দে আশপাশের মানুষ এগিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। মারাত্মক আহত যুবদল নেতা সাইফুল ইসলাম মুঠোফোন হতে কল করে সিএনজি চালককে। এরপর সকলের সহায়তায় কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় আহত সাইফুল ও মুসাকে। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে অবস্থা খুবই আশংকাজনক হওয়ায় দুজনকেই চট্টগ্রাম রেফার করেন সদর হাসপাতালের চিকিৎসক।
পরবর্তী শহরের প্রাইভেট হাসপাতাল ফুয়াদ আল খতিব হাসপাতালে সার্জারী বিশেষজ্ঞ ডাঃ শাহ আলমের তত্ত্বাবধানে যুবদল নেতা সাইফুল ইসলাম এর শরীর হতে বুলেট বের করে চাকু দিয়ে করা স্টেপগুলো হতে রক্ত পড়া বন্ধ করা গেলেও অপর আহত মুসার মাথায় লাগা গুলির অপারেশন করার মত বিশেষজ্ঞ সদরে না থাকায় দ্রুত তাকে চমেকে প্রেরণ করেন তিনি। যার নেতৃত্বে যুবদল নেতা সাইফুল এর উপর গুলি চালানো হয়েছে সে একসময় নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ এর বৃহত্তর বাস টার্মিনাল শাখার সভাপতি ছিলো বলে জানা যায়। বিষয়টি জানতে পেরে সকাল দশটায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে শহর যুবদল এর আয়োজনে একটি প্রতিবাদ সমাবেশ আয়োজন করে। এতে শহর ও জেলা যুবদলের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। সমাবেশ হতে এই চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়। অন্যতায় পরবর্তী পরিস্থিতির জন্য প্রশাসন দায়ী থাকবেন বলে হুশিয়ারী উচ্চারণ করা হয়। বিকেলে শহর যুবদল ও স্থানীয় জনমানুষ নিয়ে বাস টার্মিনাল এলাকার মহাসড়কে আরো একটি মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ এর আয়োজন করা হয়।
সমাবেশে আহত যুবদল নেতা হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানান স্থানীয় সাধারণ জনগণ। ঘটনার বেশ কয়েকদিন হয়ে গেলেও প্রশাসনের গাফলিতিতে কোন আসামি এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়নি এ নিয়ে জনমনে অসন্তুষ্টি দেখা গেছে বলে জানান স্থানীয় এক বাসিন্দা। বর্তমানে দেশে উদ্ধত পরিস্থিতি সামাল দিতে অপারেশন ডেভিড হার্ট পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। ইতিমধ্যে সেনাবাহিনী অপারেশন ডেভিড হার্ট নিয়ে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে। সারা দেশের ন্যায় কক্সবাজারেও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। সাধারণ জনগণের আশা অপারেশন ডেভিড হার্টের মাধ্যমে চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনা যাবে।