কে এম শাহীন রেজাঃ কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে পদ্মা নদীতে পুলিশের ওপর হামলা চালিয়েছে দুষ্কৃতকারীরা। এ ঘটনায় নৌকা থেকে নদীর পানিতে পড়ে পুলিশের দুই সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) নিখোঁজ হন। নিখোঁজের ৩৪ ঘণ্টা পর এএসআই সদরুল আলমের মরদেহ উদ্ধার করেছেন ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। রোববার দিবাগত ভোর রাতে উপজেলার কয়া ইউনিয়নের বেড় কালোয়া এলাকায় পদ্মা নদীতে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন পুলিশের এক সদস্য ও তাদের সঙ্গে থাকা দুই ইউপি সদস্য।
স্থানীয় লোকজন ও জেলেরা জানান, কুমারখালীর বেড় কালোয়া এলাকায় পদ্মা নদীতে অবৈধভাবে জাল ফেলে মাছ ধরছিলেন জেলেরা। জেলেদের মাছ ধরা নিয়ে এই হামলার শিকার হন পুলিশ সদস্যরা। এ সময় তাদের হামলায় আহত হন এক পুলিশ সদস্য এবং দুই ইউপি সদস্য। নিখোঁজের ৩৪ ঘণ্টা পর এএসআই সদরুলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন আরেক পুলিশ কর্মকর্তা। নিহত সদরুল হাসান পাবনার আতাইকুলা থানার কাজিপুর গ্রামের আব্দুল ওহাবের বড় ছেলে। অপর নিখোঁজ এএসআই মুকুল হোসেন (৪০) মেহেরপুরের কালাচাঁদপুর গ্রামের মৃত আব্দুল লতিফ বিশ্বাসের ছেলে। আহতরা হলেন কুমারখালী থানার এসআই নজরুল ইসলাম, কয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার ছানোয়ার হোসেন ছলিম ও ৬ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার আনোয়ার হোসেন টিটন।
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) দুপর ২টা ৫৫ মিনিটে উপজেলার শিলাইদহ খেয়াঘাট এলাকা থেকে ভাসমান অবস্থায় মরদেহটি উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। নিখোঁজ আরেক এএসআই মুকুল হোসেনকে উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এর আগে দুর্বৃত্তদের হামলায় সোমবার (২৮ অক্টোবর) ভোরে উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের শ্রীখোল এলাকায় নিখোঁজ হন এ দুই এএসআই। এ ঘটনায় এক উপপরিদর্শকসহ (এসআই) আহত হয়েছেন আরও দুই ইউপি মেম্বার। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন উদ্ধার অভিযান পরিচালনাকারী ও কুমারখালী ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সাব অফিসার ফিরোজ আহমেদ। তিনি জানান, ঘটনাস্থল থেকে আনুমানিক দুই কিলোমিটার দূর থেকে ভাসমান অবস্থায় নিখোঁজ পুলিশ সদস্য সদরুলের মরদেহটি উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজ অপর পুলিশ সদস্যকে উদ্ধারে অভিযান চলছে।
কুমারখালী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম বলেন, রোববার দিবাগত রাতে মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য পদ্মার ওপারে চর সাদীপুর এলাকায় ছয়জন পুলিশের একটি টিম অভিযানে যাচ্ছিল। এ সময় পদ্মা নদীতে তাদের নৌকা ডুবিয়ে দেয় কতিপয় দুষ্কৃতকারীরা। চার পুলিশ সদস্য নদী থেকে উঠে আসতে পারলেও দুইজন এখনো নিখোঁজ ছিল। তাদের মধ্যে এএসআই সদরুল আলমের মরদেহ নদী থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। আরেক এএসআই এখনো নিখোঁজ রয়েছেন। কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) মিজানুর রহমান বলেন, ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ধরতে গিয়েছিলেন ওই পুলিশ সদস্যরা। কীভাবে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে তদন্ত করা হচ্ছে।
কুষ্টিয়া নিউজ ডেস্ক।। বিডি টাইমস নিউজ