আহসান হাবিবঃ আশ্বিনের বিদায়ের পর থেকেই কার্তিকের শুরুতেই শীতের পরশ ছুঁয়ে যাচ্ছে উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের প্রকৃতিতে। ভোরে ঘাসের ডগায় টলমল করছে শুভ্র শিশির। হাওয়ায় হিমেল পরশ বলে দিচ্ছে শুরু হয়ে গেছে শীত। আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেয়া তথ্যে কয়েকদিন ধরে তাপমাত্রা নেমে এসেছে ২১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) ভোর ৬টায় জেলায় সর্বনিম্ন ২১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে প্রথম শ্রেণির তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিস। এর আগের দিন শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) রেকর্ড করা হয় ২১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ভোর সকালে বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা যায়, সবুজ ঘাসের ডগায় ও চা পাতায় শিশির বিন্দু ঝরছে। ভোরের আলোয় চকচক করছে শিশির বিন্দু। কিছুটা কুয়াশা জড়ানো প্রকৃতি। শিশির মাড়িয়ে কাজে যেতে দেখা যায় চাষিদের। স্থানীয়রা জানান, উত্তরের জেলাটি বরফের পাহাড় হিমালয়-কাঞ্চনজঙ্ঘার বিধৌত এলাকা হওয়ায় উত্তরের এ জেলায় অন্যান্য জেলার আগেই এ অঞ্চলে শীতের আগমন ঘটে। নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে জানুয়ারী পর্যন্ত শীতের দাপট বেশি হয়ে থাকে। তবে অক্টোবর থেকেই শুরু হয় শীতের আমেজ। এ বছরও অক্টোবরের থেকেই তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে। এখন মাঝরাতের পর থেকেই শীত অনুভব হতে থাকে। ভোর পর্যন্ত গায়ে কাঁথা নিতে হচ্ছে।
নজরুল,তাহেরুল,আশরাফুল, কমরুলসহ তেঁতুলিয়ার কয়েকজন জানান, ঠান্ডা পরতে শুরু করেছে। দিনে গরম থাকলেও রাত বাড়তে থাকলে দুইদিন ধরে হালকা ঠান্ডা লাগে। রাতে এখন কাঁথা ও পাতলা কম্বল গায়ে নিতে হয়। কার্তিক শুরু হয়েছে, এখন দিন যাবে শীত বাড়তে থাকবে। আবহাওয়াবিদদের মতে, আশ্বিন মাসে মৌসুমি বায়ু কম সক্রিয় থাকায় এবং উত্তরীয় বায়ুর কিছুটা প্রভাব থাকায় শেষ রাতে শীত নেমে এলে ঠান্ডা অনুভূত হয়। বিশেষ করে মৌসুমি বায়ু যখন বাংলাদেশের ওপর আর সক্রিয় থাকবে না। অক্টোবর থেকে উত্তরাঞ্চলে কুয়াশা পড়া শুরু হয়। এখন থেকেই উত্তরের জেলাগুলোতে তাপমাত্রা কমতে থাকবে। নভেম্বরের শুরু হয়ে ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে পুরোপুরি শীতের প্রভাব পড়বে। শীতকে কেন্দ্র করে ব্যস্ততা বেড়ে যায় লেপ-তোষক কারিগরদের। শীতের প্রস্তুতি হিসেবে শীত আসার দুয়েক মাসের আগে থেকেই কর্মব্যস্ততা বেড়ে যায় কারিগরদের। এছাড়াও ব্যবসায়ীরা তাদের দোকানে শীতের কাপড় আনতে শুরু করেছেন। শীতের আগেই শীতের কাপড় এবং লেপ-তোষক তৈরি করে আগাম প্রস্তুতি নিতে যায় অনেককে।
এদিকে এখনো সেভাবে শীত না পড়ায় দিনে বেশ গরম অনুভব হচ্ছে। ফলে দিনে গরম ও রাতে হালকা শীতের কারণে আবহাওয়ার কারণে বেড়েছে শীতজনিত বিভিন্ন রোগব্যাধি। পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে শিশু ও বয়স্করা সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। পঞ্চগড়ের প্রথম শ্রেণির তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাশেল শাহ জানান, তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে। ভোর থেকে সকাল কুয়াশা দেখা যাচ্ছে। আজ (শনিবার) ভোর ৬টায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ২১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগের দিন শুক্রবার রেকর্ড হয়েছিল ২১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এখন দিন যত যাবে তাপমাত্রা কমতে শুরু কর।
পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক।। বিডি টাইমস নিউজ