ঋণ শোধ করে লাভের মুখ দেখছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। গেলো অর্থবছরে মুনাফা দাঁড়িয়েছে ৪শ’ ৩৬’কোটি টাকা। একের পর এক অত্যাধুনিক উড়োজাহাজ যুক্ত হয়েছে বিমানের বহরে। এগিয়ে চলেছে থার্ড টার্মিনালের নির্মাণ কাজ, বেড়েছে আন্তর্জাতিক রুট। সেইসঙ্গে অনলাইন সেবাসহ বেশ কিছু অর্জনে প্রতিষ্ঠার ৫১’বছর উদযাপন করছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। ৪ জানুয়ারি, ১৯৭২। এয়ার বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল নামে যাত্রা শুরুর সময়ে হাতে মাত্র একটি ডিসি-থ্রি বিমান। ৩৬’বছর পর্যন্ত খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলা। যাত্রী সন্তুষ্টির সমীকরণের খাতা শূণ্য। ২০০৮ সালে নতুন বিমান কেনার চুক্তির চার বছর পর ঘুরে দাঁড়ানোর সূচনা। এক দশকের মধ্যেই নতুন প্রজন্মের ১৫’টি বিমান সক্ষমতার নতুন মাত্রা। আন্তর্জাতিক রুট বাড়াতে ৬’টি ব্র্যান্ড নিউ বোয়িং ড্রিমলাইনারের সঙ্গে তিনটি ড্যাশ এইট ফোর জিরো জিরো- সব মিলিয়ে বিমানের বহরে উড়োজাহাজ সংখ্যা ২১টি। এর মধ্যে ১৮টিই নিজস্ব হওয়ায় যাত্রীসেবার মান ও মুনাফা বৃদ্ধির পাশাপাশি করোনা দুর্যোগেও সেবা দিচ্ছে লাল সবুজ পতাকার এই বিমান সংস্থা।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের এমডি ও সিইও শফিউল আজিম বলেন, “তিন বছর পর পর বিমানে যে সংস্কারমূলক কাজ করতে হয় সেগুলো এখন আমরা নিজেরাই করছি। প্রতিটা এয়ারক্রাপ্টে ২ মিলিয়ন ডলার আমরা সাশ্রয় করছি। সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য আরও পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এবছর বিমান ৪শ’ ৩৬ কোটি টাকা নীট মুনাফা অর্জন করেছে।”
আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণসহ ২০টি রুটে চলছে বিমান। প্রবাসীদের দাবি পূরণে এ বছরই টোকিও ও নিউইয়র্ক রুটে সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনার পরিকল্পনা বিমানের। দুর্নীতি-অনিয়মের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থানে লাভ আরও বাড়বে বলে আশা ব্যবস্থাপনা পরিচালকের। শফিউল আজিম বলেন, বিমান নতুন নতুন ডেস্টিনেশনে তাদের এয়ারলাইন্স পরিচালনায় বিশেষ করে জাপানের নারিতা, চেন্নাই, মালে- এই বিষয়গুলোতে আমরা অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছি। আশা করছি, হজ অপারেশনের পর পরই নারিতায় অপারেশন শুরু করতে পারবো।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে যাত্রী সেবাকেই পুঁজি করে এগোতে চায় বিমান কর্তৃপক্ষ। কেউ যদি অপকর্মে জড়ায় তাদের বিরুদ্ধে শুধুমাত্র প্রশাসনিক বিষয় নয়, সেটি যদি ফৌজদারী অপরাধ হয়ে থাকে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রতিষ্ঠার ৫ দশক পেরিয়ে গেলেও উন্নত বিমানবন্দর ফ্যাসিলিটিস বহরে নিজস্ব বিমান সংযুক্তির দিক থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের যতো অর্জন গেল ১৪ বছরে। আর তাই সব ঋণ পরিশোধ করে এই রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি এখন লাভজনক অবস্থায় আছে। ২০৩০ সালের মধ্যে এশিয়ায় শীর্ষে এবং বিশ্বের বুকে একটি স্মার্ট এয়ারলাইন্স হিসেবে পরিচিত হতে কাজ করে যাচ্ছে এই রাষ্ট্রীয় সংস্থা।