ধর্মীয় ও সাম্প্রদায়িক চরম্পন্থিদের প্রতিরোধে বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় পরিপ্রেক্ষিত বিষয়ে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় জাতিসংঘের সদর দপ্তরে বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হলো ইউরোপীয় বাংলাদেশ ফোরামের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক সম্মেলন।
সম্মেলনে বক্তাগণ বাংলাদেশের পাশাপাশি দক্ষিণ এশিয়া এবং বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে সাম্প্রদায়িক চরমপন্থা ও জঙ্গিবাদের বিস্তারে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তারা বাংলাদেশে এবং দেশের বাইরে বিশেষভাবে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে মৌলবাদী চরমপন্থার বিস্তারের জন্য জামায়াতে ইসলামীসহ ধর্মভিত্তিক গোষ্ঠিগুলোকে দায়ী করেন। এছাড়া এশিয়ার বিভিন্ন দেশে চরমপন্থী সন্ত্রাসী তৎপরতা উস্কিয়ে দিতে অর্থায়নের অভিযোগ তোলা হয় মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের বিরুদ্ধে। সম্মেলনে বক্তাগণ এ ধরনের সন্ত্রাসী তৎপরতা প্রতিরোধে ধর্মনিরপেক্ষ সকল পক্ষকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।
সম্মেলনের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইউরোপীয় বাংলাদেশ ফোরামের ভাইস প্রেসিডেন্ট বিকাশ চৌধুরী বড়ুয়া। সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন নেদারল্যান্ডস-ভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংগঠন দ্য হেগ পিস-এর পরিচালক ইয়াকব দে ইয়ঙ্গে।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বেলজিয়াম-ভিত্তিক সংগঠন দক্ষিণ এশিয়া গণতান্ত্রিক ফোরাম-এর গবেষণা পরিচালক ডঃ জিগফ্রিড ও ভোলফ, জেনেভাভিত্তিক সংগঠন আর্থ ফোকাস ফাউন্ডেশন-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট নিকোলা স্পাফোর্ড ফুরি, জাতিসংঘের অর্থনৈতিক এবং সামাজিক বিভাগ– ডিইএস-’র প্রাক্তন পরিচালক ও মুখ্য অর্থনীতিবিদ প্রফেসর ডঃ ভিলহেলম ফন ডার খেস্ট এবং আন্তর্জাতিক রেডক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট ফেডারেশনের এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সাবেক উপদেষ্টা ডঃ শাম্মী আহমেদ।
অন্যান্যের মধ্যে সম্মেলনে আলোচনায় অংশ নেন একাত্তর টেলিভিশনের সম্পাদক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সামিয়া জামান, হেলথ টেক ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ডঃ বিদ্যুৎ বড়ুয়া, ব্রাসেলস-ঢাকা সলিডারিটি ফর পিস কমিটি বিডিএসপিসি’র সমন্বয়কারী এম এম মুর্শেদ, জেনেভাভিত্তিক ইউনাইটেড কাশ্মীর পিপলস ন্যাশনাল পার্টির চেয়ারম্যান সর্দার শওকত আলী কাশ্মীরি, মানবাধিকারকর্মী এবং সাংবাদিক নাসির আজিজ খান এবং বালুচ ভয়েস অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট মুনির মেঙ্গাল।
সম্মেলনে উপস্থাপিত প্রবন্ধ এবং আলোচনার সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করেন এবং জেনেভাস্থ ওএইচসিএইচআর এ জাতিসংঘের বিশেষ র্যাপোর্টিয়ার কারিমা বেনোনের লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান ইউরোপীয় বাংলাদেশ ফোরাম ইবিএফ’র বেনোনে তাঁর বক্তব্যে বলেন, বিশ্বজুড়ে মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদের উত্থানের পেছনে রয়েছে সামগ্রিক সাম্য এবং মানবাধিকার নিশ্চিত না করা। তাই শক্ত হাতে জঙ্গিবাদ দমন করতে সর্বাগ্রে মানবাধিকারের সর্বজনীনতা নিশ্চিত করতে হবে। যখন রাষ্ট্র ও সরকার এই সার্বজনীনতাকে অস্বীকার করে, তখন প্রকারান্তরে তারা জঙ্গিবাদকেই উস্কে দেয়। আগত অতিথিবৃন্দ এবং অংশগ্রহণকারীদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ইবিএফ’র সুইজারল্যান্ড সমন্বয়কারী খলীলুর রহমান।
জেনেভা থেকে মীর জাবেদা ইয়াসমিন
বিডি টাইম্স নিউজ