আব্দুর রউফ পাভেলঃ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী’র কেন্দ্রীয় আমীর ডাঃ শফিকুর রমান বলেছেন জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ একটি মানবিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চায়। যে দেশে মানুষ মানুষকে সন্মান করবে, মানুষের সকল অধিকার নিশ্চিত হবে। যে দেশে কোন যুবক বেকার থাকবেনা। সকলের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হবে। তিনি বলেছেন জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ সরকার গঠন করলে আমাদের মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সঃ) নারীদের যে সন্মান দিয়েছেন তাদের সেই সন্মান নিশ্চিত করা হবে। সেই স্বপ্নের তেশ গঠন করা কেবল মাত্র জামায়াতে ইসলামী’র দ্বারা সম্ভব নয়। দেশের সকল জনগণের সহযোগিতা ও সমর্থন প্রয়োজন। তিনি শনিবার বিকাল ৩টায় নওগাঁ নওযোয়ান মাঠে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ নওগাঁ জেলা শাখার রোকন সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে এসব কথা বলেছেন।

তিনি বলেন আমরা সরকার গঠন করলে দেশের মালিক হবোনা, মানুষের সেবক হবো। ইতিপূর্বে দুর অতীতেও দেখেছে, নিকট অতীতেও দেখেছে যারা রাষ্ট্র ক্ষমতায় গিয়ে নিজেদের দেশের মালিক মনে করেছে তাদের কি ভয়াবহ পরিনতি। তারা অস্থাকুড়ে নিক্ষেপিত হয়েছে। একটি রাজনৈতিক দল নানাভাবে জাতিকে বিভক্ত করে রেখেছে। আমরা বিভেদ দেখতে চাইনা। ধর্ম যার যার রাষ্ট্র আমাদের সবার। কারন বিখেদ জাতির জন্য কোন মঙ্গল বয়ে আনতে পারেনা। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর বলেন বিগত সাড়ে ১৫ বছর শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থার মধ্যে আমরা ছিলাম। আল্লাহর ইচ্ছায় ছাত্র জনতার আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে জুলুমের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছি। এই ১৫ বছরে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এই দলের মত ক্ষতি আর কোন দলের করা হয় নি। অন্যায়ভাবে আমাদের নিবন্ধন কেড়ে নেয়া হয়েছে। প্রতীক কেড়ে নেয়া হয়েছে। বিচারের নামে প্রহসন করে আমাদের দলের ১১ জন নেতাকে হত্যা করা হয়েছে। পিলখানায় সেনা কর্মকর্তাদের হত্যার মধ্যে দিয়ে ঐ ফ্যাসিবাদী সরকার হত্যার রাজনীতি শুরু করে।

তিনি আরও বলেছেন যুব সমাজ যুগে যুগে দেশের ক্লান্তিলগ্নে, সকল অন্যায় জুলুমের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে দেশেকে রক্ষা করেছে। ঠিক তেমনই ছাত্র জনতার ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে গত ৫ আগষ্ট জুলুমবাজ সরকারের পতন হয়েছে। ছাত্রদের কোটা আন্দোলন পরবতীতে সরকার পতনের যে এক দফার আন্দোলন তা কোন দলের বকা কোন গোষ্ঠির আন্দোলন ছিলনা। সে আন্দোলন ছিল দেশের সকল মানুষের আন্দোলন। এর কৃতিত্ব ছাত্র জনতার। আল্লাহর ইচ্ছায় এই বিপ্লব সংঘটিত হয়েছে। এই আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন, যারা দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে নানাভাবে অসুস্থ্য হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন, পঙ্গুত্ব বরন করেছেন সেসব পরিবার জাতির বোঝা নয়, তারা জাতির সম্পদ। এসব পরিবারকে সন্মান দিতে হবে মর্যাদা দিতে হবে। মুক্তির এই আন্দোলনে শহীদের প্রত্যেকের পরিবার থেকে একজনকে চাকুরী দিয়ে সন্মানীত করতে হবে। আহতদের যোগ্যতা অনুযায়ী কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে। তাদের বীর বলে আখ্যায়িত করে পাঠ পুস্তকে সন্নিবেশিত করতে হবে। পরে তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে দীর্ঘ ১৮ বছর পর জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ নওগাঁ জেলা শাখার এই সম্মেলন যোগদান করেন।

নওগাঁ জেলা জামায়াতে ইসলামীর আয়োজিত রোকন সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও রাজশাহী অঞ্চল পরিচালক অধ্যক্ষ মোঃ শাহাবুদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও রাজশাহী অঞ্চল সহঃ পরিচালক মোঃ রফিকুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও রাজশাহী মহানগর আমীর ডঃ মোঃ কেরামত আলী, কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য খ,ম, আব্দুর রাকিব, ইঞ্জিনিয়ার মোঃ এনামুল হক, এ্যড. আ,স,ম সায়েম, অধ্যাপক মোঃ মহিউদ্দিন, মওলানা হাবিবুর রহমান,ছাত্র শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সেক্রেটারী জেনারেল ও খুলনা মহানগর কর্মপরিষদ সদস্য আ,স,ম মামুন শাহিন। রোকন সম্মেলন শেষে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ নওগাঁ জেলা শাখার জন্য কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চলছে।

নওগাঁ নিউজ ডেস্ক।। বিডি টাইমস নিউজ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে