রাশেদুল হাসান কাজল, ফরিদপুর সংবাদদাতা।। ফরিদপুর শহরের নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে স্যুটকেসের ভেতর পাওয়া লাশের মূল হত্যাকারীকে দুই দিনের মধ্যে গ্রেফতার ও মালামাল উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন ওই স্যুটকেসে পাওয়া লাশের ও হত্যাকারীর পরিচয় এবং হত্যার কারণ জানিয়েছে পুলিশ।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম বলেন, হত্যার শিকার ব্যক্তির নাম মিলন প্রামাণিক (৩৯)। তিনি পাবনা সদরের নতুন গোহাইবাড়ি মহল্লার কাশের প্রামাণিকের ছেলে। তিনি রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ ঘাট এলাকায় ইটভাটার শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। পুলিশ সুপার জানান, মিলন প্রামাণিকের সঙ্গে গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া যৌনপল্লির রোজিনা আক্তার কাজলের(৩২) সম্পর্ক ছিল। এ’সুবাদে রোজিনা বিভিন্ন সময় মিলনকে তিন থেকে চার লাখ টাকা ধার দেন। এ’টাকা ফেরত না দেওয়া নিয়ে তাঁদের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। গত শুক্রবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে রোজিনার ঘরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাস রোধ করে হত্যা করা হয় মিলনকে। পরে মাথা ও পা পেঁচিয়ে একটি লাগেজে (স্যুটকেস) ভরে একটি রিকশায় গোয়ালন্দ বাসস্ট্যান্ডে নিয়ে আসেন তিনি। সেখান থেকে ৬০০ টাকায় একটি মাহিন্দ্রা ভাড়া করে ফরিদপুর বাসস্ট্যান্ডে এনে ঢাকাগামী বিকাশ পরিবহনের একটি বাসের টিকিট কেটে স্যুটকেসটি বাসের লকারে তোলা হয়। বাস ছাড়ার সময় ওই নারীকে খুঁজে না পাওয়ায় বাসের লোকজন স্যুটকেসটি বাসস্ট্যান্ডের গোল্ডেন লাইন পরিবহনের কাউন্টারের সামনে একটি বৈদ্যুতিক খুঁটির কাছে রেখে যান। গত শনিবার বেলা ১১টার দিকে ৯৯৯ এর কল পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ সুপার বলেন, ওই নারী প্রশিক্ষিত খুনি ছিলেন না। এ জন্য লাশটি ফেলার জন্য তিনি এই অভিনব পদ্ধতি গ্রহণ করেন। ওই নারী যে রিকশা ও মাহিন্দ্রা ব্যবহার করেছেন, তাঁদের চালকদের আটক করা হয়েছে। তাঁদের
হত্যা মামলায় সাক্ষী করা হবে। রোজিনাকে গতকাল সোমবার রাত তিনটার দিকে ঢাকার জুরাইন এলাকা থেকে কদমতলী থানা পুলিশের সহায়তায় গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় এসআই মোহাম্মদ শামীম হাসান বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে গত রোববার ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। রোজিনার ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতের মাধ্যেমে জেল হাজতে প্রেরন করা হয়েছে।