ব্যক্তির দায় বাংলাদেশ পুলিশ নেবে না বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম কমিশনার (অপারেশসনস) বিপ্লব কুমার সরকার। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুই নেতাকে মারধরের ঘটনায় রমনা বিভাগ থেকে সদ্য কক্সবাজার এপিবিএন-এ বদলি হওয়া অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশিদের বিষয়ে সোমবার বিকেলে ডিএমপি সদর দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নে এ মন্তব্য করেন তিনি।
বিপ্লব কুমার বলেন, ‘ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ছয় সদস্যের একটি প্রতিনিধি টিম ডিএমপি কমিশনার স্যারের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন। সরাসরি একজন ভুক্তভোগীও এসেছিলেন। তারা তাদের মনের অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছেন। ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে তাদের বেশকিছু দাবি-দাওয়া উপস্থাপন করেছেন তারা। তিনি বলেন, ‘ডিএমপি কমিশনার স্যার ছাত্রলীগকে জানান, বাংলাদেশ পুলিশ অত্যন্ত পেশাদার একটি সংস্থা। ব্যক্তির দায় বাংলাদেশ পুলিশ বহন করবে ন। এটি একদম পরিষ্কার কথা। পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে ঘটনাটি যখন সবার নজরে আসায় তখন তাৎক্ষণিকভাবে কমিশনার স্যার তাকে (এডিসি হারুন) রমনা থেকে সরিয়েছেন। পরে আইজিপি স্যার ডিএমপি থেকে তাকে এপিবিএন-এ বদলি করেন। এছাড়া ডিএমপি একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করেছে।’
পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘তদন্ত কমিটিকে ডিএমপি কমিশনার স্যার বলেছেন, একেবারেই নিরপেক্ষ এবং কারো প্রতি পক্ষপাতিত্ব না করে পেশাদারিত্বের সঙ্গে তদন্ত সম্পন্ন করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য। এ অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সঙ্গে পুলিশের সর্বোচ্চ থেকে শুরু করে সর্বনিম্ন পর্যায়ের যে জড়িত থাকুক যার যতটুকু দায় দায়িত্ব রয়েছে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে কমিশনার স্যার আশ্বস্ত করেছেন। শুধু এডিসি হারুনই নয়, ভুক্তভোগীর দাবি তার সঙ্গে আরও ১০-১২ জন পুলিশ থানায় তাকে মারধর করেছে। প্রত্যেকের শাস্তি নিশ্চিত করার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘১০০ পার্সেন্ট নিশ্চিত থাকেন যারা জড়িত ছিল সবার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। একজন জড়িত নাকি পাঁচজন নাকি দশজন জড়িত তদন্ত কমিটি যাকে যতটুকু দায়ী করবে তার অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। এ ধরনের অপরাধের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা কী জানতে চাইলে যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, ‘দুই ধরনের দণ্ড রয়েছে। একটি লঘুদণ্ড অন্যটি গুরুদণ্ড। লঘুদণ্ডের মধ্যে চারটি বিষয় রয়েছে, গুরুদণ্ডের মধ্যেও চারটি বিষয় রয়েছে। তদন্ত কমিটি তাদের তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করে কাকে কতটুকু দায়ী করবে তার ভিত্তিতে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কেউ চাকরিচ্যুত হতে পারে কেউ বা তিরস্কারও হতে পারে। এটি নির্ভর করে ঘটনার ওপর। এর আগে ৯ সেপ্টেম্বর ব্যক্তিগত বিরোধের জেরে শাহবাগ থানায় নিয়ে এডিসি হারুনের নেতৃত্বে মারধর করা হয় ছাত্রলীগের দুই নেতা কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন এবং বিজ্ঞানবিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ। ওই ঘটনায় তদন্ত কমিটি করেছে ডিএমপি। দুই দিনের মধ্যে সেই প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া এডিসি হারুনকে প্রত্যাহারও করা হয়েছে।