জাতীয় শ্রমিক লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের স্বাক্ষর জাল করার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের যৌথ সভায় ওবায়দুল কাদের নিজেই বিষয়টি উত্থাপন করেন। এ’সময় তিনি বলেন, জাতীয় শ্রমিক লীগের ঢাকা মহানগর সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি করতে গিয়ে এ-সংক্রান্ত চিঠিতে সংগঠনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতারা সই জাল করার ঘটনা ঘটিয়েছেন। বিষয়টি তদন্তে কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে শ্রমিক লীগের কোন্দল নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপসহ সংগঠনের কার্যক্রম নিবিড়ভাবে তদারকির নির্দেশ দেন ওবায়দুল কাদের।
জানতে চাইলে জাতীয় শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক কে এম আজম খসরু সমকালকে জানান, সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষর জাল করার বিষয় তাঁর জানা নেই। অসুস্থতার কারণে যৌথ সভায় থাকতে পারবেন না বলে আগেই জানিয়েছিলেন। সভায় না থাকায় কী আলোচনা হয়েছে, তা বলা সম্ভব নয়। যৌথ সভায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ছাড়াও দলের মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ এবং সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক উপস্থিত ছিলেন। এ সময় ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় মহিলা এবং যুব মহিলা লীগ নেতাদের অনুপস্থিতি নিয়ে ক্ষোভ ব্যক্ত করেন ওবায়দুল কাদের। সভায় উপস্থিত মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকী এ সময় দাবি করেন, আলোচনা সভার কর্মসূচি সম্পর্কে আমাদের জানা ছিল না। জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘মহিলা লীগের সভাপতি হয়ে দলীয় কর্মসূচি সম্পর্কে না জানলে ওই পদে থাকার দরকার কী? পদত্যাগ কর।’ পরে চুমকী এ জন্য দুঃখপ্রকাশ ও ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
সভায় ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের অন্তর্ভুক্ত থানা ও ওয়ার্ড কমিটি গঠনের বিষয়ে আলোচনা হয়। দ্রুত এসব কমিটি গঠনে ওবায়দুল কাদের আবারও নির্দেশ দেন। এ সময় ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান ও মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির উভয়ে জানান, ২০ মার্চের মধ্যেই সব থানা ও ওয়ার্ড কমিটি গঠন এবং অনুমোদনের কাজ শেষ করবেন তাঁরা। সভা থেকে আগামী ১১ মার্চ সারাদেশের জেলায় জেলায় শান্তি সমাবেশ ও মিছিল কর্মসূচি দেওয়া হয়। এ ছাড়া ১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন, ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস এবং ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে দলের কর্মসূচি বিষয়ে আলোচনা হয়।
ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে যৌথ সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা কাজী জাফরউল্লাহ, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, আব্দুর রহমান, কামরুল ইসলাম, মাহবুবউল-আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, আহমদ হোসেন, মির্জা আজম, আফজাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, আব্দুস সোবহান গোলাপ, ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, প্রকৌশলী আবদুস সবুর, ড. সেলিম মাহমুদ, সায়েম খান, ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি, যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ, সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল, কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম স্মৃতি, ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান প্রমুখ।