রাজধানীর থানাগুলোতে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিলের হার দিন দিন কমছে। ২০২১ সালের হিসাব অনুযায়ী, রাজধানীর ৫০টি থানায় ওয়ারেন্টভুক্ত আসামির প্রায় ৮৮ শতাংশই পলাতক রয়েছে। শুধু মিরপুর ও তেজগাঁও বিভাগেই ঝুলে আছে অর্ধেকের বেশি ওয়ারেন্ট। ২০২১ সালের হিসাব অনুযায়ী, সর্বোচ্চ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিলের হার,মতিঝিল থানায় ৪৭.৬৮%, উত্তরা পূর্ব থানায় ৪৪.৪৮%, পল্টন থানায় ৩৩.৩৯%, উত্তরা পশ্চিম থানায় ৩৩.২১%, শাহজাহানপুর থানায় ২৬.৮০%, কোতোয়ালি থানায় ২৬.৪৫%, কামরাঙ্গীরচর থানায় ২৩.৯৭%, খিলক্ষেত থানায় ২৩.৯৭% আর সূত্রাপুর থানায় ২৩.৯৪ %।
থানা হিসাবে সবচেয়ে তলানিতে মোহাম্মদপুর। মাত্র ৩.১৬ শতাংশ ওয়ারেন্টের আসামি গ্রেপ্তার করতে পেরেছে তারা। গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত আসামিদের সর্বনিম্ন গ্রেপ্তারের হার মোহাম্মদপুর থানায় ৩.১৬%, আদাবর থানায় ৪.০১%, যাত্রাবাড়ী থানায় ৪.৭৯%, শিল্পাঞ্চল থানায় ৫.৭০%, দারুস সালাম থানায় ৬.১২%, রূপনগর থানায় ৬.২০%, ভাষানটেক থানায় ৬.৫৫%, পল্লবী থানায়, ৭.৩২%, মিরপুর থানায় ৭.৬৮% আর শেরেবাংলানগর থানায় ৭.৭৮%। নিজের বাইক ছিনতাই হওয়ার পর ২০১৯ সালে ব্যাপক আলোচনায় এসেছিলেন রাইড শেয়ারিং করা এক নারী। ছিনতাইয়ের ১২ ঘন্টার মধ্যে বাইক উদ্ধার করে দেওয়ায় সেসময় পুলিশের ব্যাপক সুনামও করেন তিনি। তবে এখন সেই পুলিশের বিরুদ্ধেই তার অনেক অভিযোগ। আতঙ্কে এলাকা ছাড়লেও তার করা মামলায় ওয়ারেন্টভুক্ত আসামিদের ধরেও ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ এ নারীর। তবে বিষয়টি অস্বীকার করছে পল্লবী থানা পুলিশ। অবশ্য এই নারীর মামলায় ওয়ারেন্টভুক্ত অনেক আসামিকেই পাওয়া যায় এলাকায়। কথাও হয় তাদের দুই-একজনের সাথে।
ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি গ্রেপ্তারে পুরো ডিমএমপির সব থানার অবহেলাই এখন স্পষ্ট। তাদের নিজেদের করা ২০২১ সালের প্রতিবেদনই বলছে, ওয়ারেন্টভুক্ত আসামির ৮৮ শতাংশই লাপাত্তা। বিষয়টি নিয়ে উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করলেও এ নিয়ে উদ্বেগের কিছু দেখছেন না ডিএমপি মিডিয়া সেলের পরিচালক।
গ্রেপ্তারি পরোনায়া তামিলে থানাগুলোর মধ্যে পার্থক্যও উল্লেখযোগ্য। মতিঝিল থানায় যেখানে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিল হয়েছে ৪৭.৬৮ শতাংশ, সেখানে মোহাম্মদপুরে এই হার মাত্র ৩.১৬ ভাগ। অনেক থানাতেই এই হার ৮ ভাগের নিচে। আসামি ধরতে থানাগুলোর মধ্যে আন্তঃযোগাযোগ বাড়ানোর ওপরও জোর দিচ্ছেন অপরাধ বিশেষজ্ঞরা।