কে এম মিঠু,টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক জননেতা হাতেম আলী তালুকদারের ২৪ তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রবিবার সকাল ১১টায় টাঙ্গাইলের গোপালপুর পৌরশহরের সূতী ভিএম সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত স্মরণ সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সাংসদ ছোট মনির। মরহুমের করব জিয়ারত ও পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট শামছুল আলমের সভাপতিত্বে সভায় স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য রাখেন, টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শামছুল হক, বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট কে এম আব্দুস সালাম, আনিসুর রহমান (দাদু ভাই), টাঙ্গাইল এডভোকেট বার সমিতি সাবেক সভাপতি এডভোকেট আব্দুল গফুর, প্রয়াত হাতেম আলী তালুকদারের স্ত্রী আমিরুননেসা তালুকদার, গোপালপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম তালুকদার প্রমুখ। বক্তব্য রাখেন গোপালপুর ও ভূঞাপুর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, মহিলালীগের নেতৃবৃন্দ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত নানা পেশার ব্যক্তিবর্গ। উল্লেখ্য, প্রয়াত হাতেম আলী তালুকদার ১৯২৭ সালের ১১ জানুয়ারি গোপালপুর উপজেলার মাহমুদপুর গ্রামে পিতা আফছার আলী তালুকদার ও মাতা জামিরুন্নেছার গর্ভে জন্মগ্রহণ করেন। মাত্র ১২ বছর বয়সেই তিনি রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন। ১৯৪৮ সালে জামালপুর আশেক মাহমুদ কলেজ ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। পরে তিনি জামালপুর মহকুমা ছাত্রলীগের সভাপতি এবং ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭০ সালের জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে গোপালপুর-ভূঞাপুর আসন থেকে তিনি এমএনএ র্নিবাচিত হন। রাজনৈতিক কারণে নানামুখী অত্যাচার সহ্যসহ তিনি বহুবার কারা নির্যাতন ভোগ করেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক হিসেবে তাঁর রয়েছে গৌরবান্বিত ভূমিকা এবং ইতিহাস। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও রাজাকাররা মাহমুদপুরে তাঁর বাড়িতে লুটপাট চালানোসহ বসতঘর আগুনে জ্বালিয়ে দেয়। বাংলার স্বাধীনতা অর্জনের পর বঙ্গবন্ধু বাকশাল গঠন করলে হাতেম আলী তালুকদারকে টাঙ্গাইল জেলা বাকশালের দ্বায়িত্ব অর্পণ করেন। দেশে উপজেলা পরিষদ গঠিত হলে তিনি গোপালপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এলাকার শত শত মানুষকে তিনি চাকুরী প্রদানে সহযোগিতা করাসহ সামাজ উন্নয়নে রেখেছেন অগ্রণী ভূমিকা। শিক্ষার উন্নয়নে উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন প্রায় ২০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। জননেতা হাতেম আলী তালুকদার সময়মত চিকিৎসার অভাবে ১৯৯৭ সালের ২৪ অক্টোবর ঢাকার রাশমনো স্পেশালাইজড্ হাসপাতালে পরলোক গমন করেন। গোপালপুর পৌরশহরের নন্দনপুর নিজ বাসভবন দক্ষিণামলয়ে তাঁকে সমাহিত করা হয়।
নিউজ ডেস্ক ।। বিডি টাইমস নিউজ