ব্রাহ্মণবাড়িয়া সংবাদদাতাঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) হাসিবা খানের মেয়ে আনাবিয়া-নূরের বয়স সাড়ে সাত মাস। মা ঘরে এলেই ছুটে এসে কোলে উঠতে চায় ছোট্ট ওই দুধের শিশু।
কিন্তু নিজেকে ভালোভাবে জীবাণুমুক্ত না করে কোলে না নিতে পারার যন্ত্রণা হয়তো তাড়া করে বেড়ায় দুজন কেই। এই ভয়াবহ পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে প্রতিদিন হাসিবা খানকে।

পরিবারের সদস্যদের মায়া ত্যাগ করে কসবা উপজেলায় হাসিবা খান রাত-দিন কাজ করছেন দেশের জন্য, মানুষের জন্য।করোনা ভাইরাসের এই সময়ে জনগণকে সেবা দিতে ভয় নয়, সাড়ে সাত মাস বয়সী একমাত্র দুধের শিশু সন্তানকে নিয়ে বিপাকে পড়ে ছিলেন হাসিবা খান। তবে সব বাঁধা পেরিয়ে হাসিবা খান নিজেকে পুরোপুরি জনগণের সেবার জন্য নিয়োজিত করেছেন।

করোনাযুদ্ধে কসবার স্থানীয় বাজার গুলোতে দাম নিয়ন্ত্রণ করতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছেন প্রতিদিন তিনি। জনসাধারণের জরুরি সেবার জন্য তিনি সরকারি নাম্বারের পাশাপাশি তার ব্যক্তিগত নাম্বারটি ২৪ ঘণ্টা খোলা রেখেছেন। পাশাপাশি করোনা পরিস্থিতিতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে ও মানুষজনকে সচেতন করতে কসবা উপজেলা জুড়ে নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালতও পরিচালনা করছেন তিনি।

জনগণের কাছে গিয়ে সরকারের নির্দেশনা ও স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলারও অনুরোধ করছেন। শিশু সন্তান রেখে কর্মস্থলে সাধারণ মানুষের জন্য তার এই যুদ্ধকে প্রশংসনীয় বলে দাবি করছেন স্থানীয়রা।ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় কসবা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মাসুদ উল আলমের নির্দেশনায় মাঠ পর্যায়ে কাজ করছেন হাসিবা খান। তিনি এই সময়ে স্বামীর সাপোর্টটাও পাচ্ছেন না। পুলিশে কর্মরত বিধায় তিনি আছেন নিজ দায়িত্বে।এই ব্যাপারে কসবা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) হাসিবা খান জানান, এখন ব্যক্তিগত সমস্যার চেয়ে জনস্বার্থ অনেক জরুরি।তাই ঘরে ৭ মাসের সন্তানকে রেখে ছুটে  চলেছি মানুষের পাশে। কারন এখন  দেশের ক্রান্তিকাল। জনগনের সেবাটা এখন সবচেয়ে বেশি জরুরী।

তিনি আরও বলেন, সাড়ে সাত মাস বয়সী মেয়ে আনাবিয়া-নূরকে সামলাতে ভার্সিটি পড়ুয়া আমার ছোট বোন ইসরাত জাহানকে নিয়ে এসেছি। কিন্তু এমনও হয়েছে যে কাজের মধ্যেই খবর পেলাম মেয়েটা কাঁদছে তখন ছুটে আসতে হয়। আবার কখনো তাৎক্ষণিক ছুটে আসাও সম্ভব হয় না। দেশের এই ক্রান্তি লগ্নের কথা মাথায় রেখে এভাবেই মানিয়ে চলছি। এতে তিনি নিজেও আনন্দিত বলে জানান। তার এই ত্যাগ জাতি কোন দিন ভুলবেনা বলে ভুক্তভোগী মহল মনে করছেন। আবার অনেকে বলছেন, আপনাদের মত মানুষ আছে বলেই দেশটা আজ এত সুন্দর।

জহির সিকদার
নিউজ ডেস্ক ।। বিডি টাইম্‌স নিউজ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে