রুদ্ধশ্বাস অপেক্ষায় পুরো বাংলাদেশ। ভোটগ্রহণের জন্য এখন শুধু ক্ষণগণনা। রোববার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে চলবে ভোট গ্রহণ।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীদের সব ধরনের প্রচার, প্রচারণা ও সভা সমাবেশ করার সময়সীমা শেষ হয়েছে। নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে ১৮ দিন প্রার্থী এবং তার কর্মী সমর্থকরা পেয়েছিলেন প্রচার, সভা সমাবেশের সময়। নির্ধারিত সেই সময় শেষ। কারণ গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ (আরপিও) অনুযায়ী ভোটগ্রহণ শুরুর ৪৮ ঘণ্টা আগে থেকে ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত সব ধরনের প্রচার প্রচারণা ও সভা সমাবেশ নিষিদ্ধ।
নিয়ম অনুযায়ী, নির্বাচনের দিন এবং তার আগের দুই দিন ও পরের দুই দিন (মোট পাঁচ দিন) সব ধরনের মিছিল, সমাবেশ ও শোভাযাত্রা নিষিদ্ধ। কোনো ব্যক্তি এই নির্দেশনা লঙ্ঘন করলে তিনি কমপক্ষে দুই বছর এবং অনধিক সাত বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। সারাদেশে ৩০০ আসনের পরিবর্তে ২৯৯টি আসনে ভোটগ্রহণ চলবে। শুধুমাত্র গাইবান্ধা-৩ আসনে ভোটগ্রহণ হবে না। কারণে ওই আসনের ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে ভোটগ্রহণ পিছিয়ে ২৭ জানুয়ারি নির্ধারণ করা হয়েছে। গাইবান্ধা–৩ আসন বাদে সারাদেশে মোট প্রার্থীর সংখ্যা ১ হাজার ৮৩১ জন। এরমধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থী আছেন ১ হাজার ৭৪৫ জন। স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন ৯৬ জন।
নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ১০ কোটি ৪২ লাখ ৩৮ হাজার ৬৭৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৫ কোটি ২৫ লাখ ৭২ হাজার ৩৬২ জন, মহিলা ভোটার ৫ কোটি ১৬ লাখ ৬৬ হাজার ৩১১ জন। এর মধ্যে নতুন প্রায় ১ কোটি ২৩ লাখ ভোটার প্রথমবারের মতো জাতীয় নির্বাচনে ভোট দেবেন। মোট ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ৪০ হাজার ১৮৩ টি এবং ভোট কক্ষের সংখ্যা ১ লাখ ৯৫ হাজার ৩১৬ জন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৬টি সংসদীয় আসনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন ব্যবহার করে ভোট গ্রহণ হবে। আসন ছয়টি হলো : ঢাকা-৬, ঢাকা-১৩, চট্টগ্রাম-৯, রংপুর-৩, খুলনা-২ এবং সাতক্ষীরা-২। আসনগুলোতে ৪৮ জন প্রার্থী নির্বাচন অংশ নিয়েছেন। এসব আসনে মোট ভোটার ২১ লাখ ২৪ হাজার ৫৪৪ জন।
নির্বাচনে মেট্রোপলিটন এলাকায় প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে পাহারায় থাকবেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১৬ জন সদস্য। এর মধ্যে অস্ত্রসহ পুলিশ সদস্য তিন জন, অঙ্গীভূত আনসার সদস্য ১২ জন ও একজন করে থাকবেন গ্রাম পুলিশ। অন্যদিকে ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রগুলোতে বাড়তি দুই পুলিশ সদস্যসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য থাকবেন মোট ১৮ জন। এর আগে গত ২৪ ডিসেম্বর থেকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সারাদেশে মাঠে নামেন সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা। তবে এই নির্বাচনে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে নয়, সিআরপিসির ১২৭ থেকে ১৩২ ধারা অনুযায়ী তারা দায়িত্ব পালন করবেন। নির্বাচনি পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি ব্যর্থ হলে তখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সশস্ত্র বাহিনী কাজ করবে।
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, সারাদেশে এইচএফ রেডিওর মাধ্যমে নির্বাচন ভবনের কন্ট্রোল রুম থেকে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। এবারের নির্বাচনে প্রথমবারের মত কেন্দ্রীয়ভাবে এ ধরনের নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
নিউজ ডেস্ক ।। বিডি টাইম্স নিউজ