সিনান আহমেদ শুভঃ পদ্মায় প্রচন্ড স্রোত ও ঘুর্ণনের ফলে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের ছয়টি গ্রামে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে।এ ভাঙ্গনের ফলে ইত মধ্যে পাঁচটি বাড়ি ও কয়েক হাজার বিঘা ফসলী জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে।ঘরবাড়ি ফসলী জমি হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পরেছে ভাঙ্গন কবলিত এলাকার মানুষ।ভাঙ্গন হুমকিতে,পরেছে বাজার স্কুল মসজিদ, কবরস্থান ও শত শত বাড়িঘর।

পদ্মার ভাঙ্গনে বিলীন হওয়া ভুক্তভোগী মরিয়ম বেগম ,একে একে পাঁচবার পদ্মার ভাঙ্গনের কবলে পরে বাড়িঘর, জায়গা জমি সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব জীবন যাপন করছেন দেবগ্রাম ইউনিয়নের আজিজ সদারের পাড়ার আমজাদ বেপারীর স্ত্রী মরিয়ম বিবি।এখন নদীর দিকে চেয়ে থাকা ছাড়া আর কোন উপায় নেই। তাকিয়ে তাকিয়ে শুধু চোখের পানি ফেলছেন তিনি। এখন জীবনের শেষ বয়সে এসে তার আর কোন চাওয়া পাওয়া কিছু নেই।বার বার ভাঙ্গনে এখন অসহায় জীবন যাপন করছেন তিনি।নেই আর বেঁচে থাকার কোন আশা।একই গ্রামের মর্জিনা বেগমেরও বাড়িঘর নদী ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে অন্যের জমিতে কোনরকম মাথা গোজার ঠাই করে নিয়েছেন। দেবগ্রাম গ্রামের আরেক কৃষক মোঃ খবির সরদার চোখের সামনে তার ফসলী জমি নদী গর্ভে বিলীন হতে দেখে স্তব্ধ হয়ে গেছেন।ফসলী জমি এভাবে হারিয়ে কিভাবে পরিবার নিয়ে বেঁচে থাকবেন তিনি। নেই কোন ভাষা, দিন রাত শুধু হতাশার ছাপ চোখে মুখে।এভাবেই বাড়ি, ঘর, জায়গা, জমি সব নদীতে বিলীন হচ্ছে আরো শত শত মানুষের।গত বিশটি বছর ধরে এভাবেই ভাঙ্গনের কবলে পড়ে নিঃশ্ব হচ্ছেন হাজার হাজার পরিবার।বেঁচে থাকার শেষ সম্বল হারিয়ে এখন অনেকের মাথা গোজার ঠাই টুকু খুজছেন অন্যেও জমিতে।

রাজবাড়ী জেলাটি নদী ভাঙ্গন কবলিত একটি জেলা।প্রতিবছরই ভাঙ্গনের কবলে পরে বসতভিটা,ফসলী জমি নদীতে বিলীন হয়ে।এরই মধ্যে গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া দেবগ্রাম ও ছোট ভাকলা ইউনিয়নের ৬ টি গ্রামে ভাঙ্গ দেখা দিয়েছে। দৌলতদিয়া ল ঘাট সংলগ্ন এলাকা থেকে ছোটভাকলা ইউনিয়নের অন্তারমোড় পর্যন্ত ভাঙ্গনে হাজার হাজার বিঘা জমি নদী গর্ভে চলে গেছে, নদীতে বিলীন হয়েছে আরো পাঁচটি বসত ভিটা।দুই সপ্তাহ ধরে ভাঙ্গন অব্যাহত থাকায় অতিষ্ঠ এখানকার বসবাসরত সাধারন খেটে খাওয়া মানুষগুলো।গত দেও মাসে দৌলতদিয়া ও ছোট ভাকলা ইউনিয়নে নভাঙ্গন শুরু হলেও এখন তা অব্যাহত আছে।এরই মধ্যে ১০ দিন আগে পদ্মার ভাঙ্গনের বিলীন হচ্ছে এসব ফসলী জমি ও জনবসতি এলাকা। রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী এমএ শামীম, বলেন, ইতমধ্যে ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শন করেছেন। পরিদর্শন করে উর্দ্ধতন কতৃপক্ষকে প্রয়েজনীয় তথ্যের ভিত্তিতে ভাঙ্গন কবলিত মানুষ ও তাদেও অবস্থার কথা অবহিত করেছেন।কতৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে কাজ বাস্তবায়ন করা হবে বলেন তিনি।

গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কমকর্তা জ্যাতি বিকাশ চন্দ্র বলেন,ইতমধ্যে সরোজমিন পরিদর্শন করছেন।সেখানে কয়েকটি বসতি ও ফসলী জমি নদীতে বিলীন হয়েছে।জেলা প্রশাসক ও পানি উন্নয়ন বোর্ড কতৃপক্ষের সাথে কথা হয়েছে।ভাঙ্গন স্থানে বালুভর্তি বস্তা ফেলার অনুমোদন হয়েছে।দুই একদিনের মধ্যে সেখানে বস্তা ফেলার কাজ শুরু করা হবে বলেন তিনি।

রাজবাড়ী নিউজ ডেস্ক।। বিডি টাইমস নিউজ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে