নগদ টাকার সংকটে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর হাত বাড়ছে কলমানি বাজারে। এতে বৃদ্ধি পাচ্ছে কলমানি রেটও। গেল দুই দিন এক যুগের সুদহারের রেকর্ড ভেঙেছে এই মার্কেট। এছাড়া এখনো নির্ধারিত দামের চেয়ে বাড়তি দরে এলসি খুলতে বাধ্য হচ্ছে ব্যাংকগুলো। ধোঁয়াশা রয়েছে ক্রলিং পেগ পদ্ধতি নিয়েও।
কলমানিতে টাকা ধার নিয়ে তাৎক্ষণিক প্রয়োজন মিটিয়ে থাকে ব্যাংকগুলো। নগদ টাকার চাহিদা মেটাতে গত কয়েক মাস ধরেই চাপ বাড়ছে কলমানি মার্কেটে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে বুধবার (২৪ জানুয়ারি) আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে কলমানিতে ৩ হাজার ২৯ কোটি টাকার বেশি ধার করেছে ব্যাংকগুলো। যার গড় সুদহার ৯ দশমিক ৫১ শতাংশ। আগের দিন মঙ্গলবার যা ছিল কিছুটা বেশি, ৯ দশমিক ৫৭ শতাংশ। ধার নেয়ার পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৪৭৬ কোটি টাকা। কলমানিতে এই সুদহার গেলো এক যুগের মধ্যে সর্বোচ্চ।
ব্যাংক নির্বাহীরা বলছেন, বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিদিন প্রায় ৬৩ হাজার কোটি টাকার সমপরিমাণ ডলার বিক্রি করে বাজার থেকে টাকা তুলে নিচ্ছে। এতে মার্কেটে তৈরি হচ্ছে সংকট। ফলে উচ্চ সুদে কলমানিতে ধার করতে বাধ্য হচ্ছে ব্যাংকগুলো। সিটিজেন ব্যাংক পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচলিক মোহাম্মদ মাসুম বলেন, সবশেষ ২৫ বেসিস পয়েন্ট সুদহার বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ৭ দশমিক ৭৫ থেকে তা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৮ শতাংশে। এর মধ্যে কলমানিতে সুদের হার বেড়েছে। যার অর্থ হলো তারল্য সংকটে পড়তে যাচ্ছে ব্যাংকগুলো। এটা দেশের অর্থনীতির জন্য মোটেও সুখকর নয়।
ডলার সংকট এখনো ভোগাচ্ছে ব্যাংক নির্বাহীদের। তারা বলছেন, বেঁধে দেয়া দরে ঋণপত্র খুলতে পরছেন না। ধোঁয়াশায় আছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ঘোষিত ‘ক্রলিং পেগ’ পদ্ধতি নিয়েও। ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক বলেন, রেপো রেটে টাকা ধার করে তারা কলমানিতে দিতো। এখন নীতি সুদহার ৮ শতাংশ। আর কলমানির সুদের হার সাড়ে ৯ শতাংশ। এক্ষেত্রে দেড় শতাংশ মুনাফা থাকছে। এতে নজরদারি বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। যে কারণে হয়তো সেটা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে, বৈদেশিক মুদ্রার মোট রিজার্ভ ২৫ দশমিক ২৬ বিলিয়ন ডলার। আর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাবে ২০ বিলিয়নের ঘরে।