সরকারি অর্থে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে কর্মকর্তাদের বিদেশে প্রশিক্ষণ। তা সত্ত্বেও নানান চেষ্টায় চলছে ভ্রমণের ফন্দিফিকির। প্রশিক্ষণের নামে প্রকল্পের আওতায় নতুন করে দেয়া হচ্ছে বিদেশ ভ্রমণের নানান প্রস্তাব। যদিও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় বলছে, সরকারি অর্থের অপচয় ঠেকাতে নেয়া হয়েছে বাড়তি সতর্কতা।মাধ্যমিক শিক্ষার মান বাড়াতে নেয়া হয়েছে ‘লার্নিং এক্সিলারেশন ইন সেকেন্ডারি এডুকেশন’ প্রকল্প। এই প্রকল্পের আওতায় শিক্ষাদানের পদ্ধতি জানতে ইউরোপের দেশ জার্মানি-নেদারল্যান্ডে যেতে চায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিশাল একটি বহর। যেখানে থাকছেন ২ হাজার ৭৫৯ জন শিক্ষক-কর্মকর্তা। খরচ হবে প্রায় আড়াই’শ কোটি টাকা।

শুধু তাই না নগরের রাস্তাঘাট, ছোট ব্রিজ-কালভার্ট বানানো দেখতেও বিদেশ যেতে চান স্থানীয় সরকার বিভাগের কর্মকর্তারা। দেশি-বিদেশি নানা প্রশিক্ষণে খরচ ধরা হয়েছে প্রায় ৫০ কোটি টাকা। মাছ চাষ শিখতে ভিয়েতনাম আর ফিলিপাইনে যেতে চান মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ১০০ কর্মকর্তারা। এক্ষেত্রে খরচ ধরা হয়েছে ৭ কোটি টাকা। এছাড়াও কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে সুশাসন দেখতে বিদেশে যাওয়ার প্রস্তাবনা রয়েছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ‘সিটিজেন পারসেপশন সার্ভে’ প্রকল্পের।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় বলছে, সরকারি অর্থের অপচয় ঠেকাতে রয়েছে বাড়তি সতর্কতা। তারপরও বিভিন্ন দপ্তর থেকে ‘অস্বাভাবিক’ ও ব্যয়বহুল বিদেশ সফরের প্রস্তাব আসা থেমে নেই। পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, আমরা সার্বক্ষণিক চেষ্টা করি অহেতুক ভিজিট কমাবার জন্য। গভীর জ্ঞান বা গভীর প্রযুক্তির ব্যাপার আছে। আমার টাকায় আমি করব যেমন পদ্মা সেতু আমাদের টাকায় করেছি। কিন্তু অনেক প্রযুক্তির প্রয়োজন ছিল আমার বাইরে থেকে আনতে হয়েছে। কনসালটেন্ট, ইঞ্জিনিয়ার, যন্ত্রপাতি আনতে হয়েছে। সে ধরণের হলে তো বিদেশে যেতেই হবে। গেল তিন বছর ধরেই সরকারি টাকায় বিদেশে প্রশিক্ষণে লাগাম টানার চেষ্টা হচ্ছে কিন্তু তারপরও কেন সম্ভব হচ্ছে না এর কারণ ব্যাখ্যা করলেন বিশ্লেষকরা।

অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, প্রশিক্ষণ নিলেই যে সব শিক্ষিত হবে তাও নয়। অলরেডি প্রশিক্ষিত লোক সমাজে আছে, তাদের কোনো কাজে লাগানো হচ্ছে না। প্রশিক্ষণের চেয়ে প্রশিক্ষিত লোক এখানেই আছে তাদেরকে দায়িত্বটা দেয়া হয় না। সৎ লোকের দায়িত্ব পাওয়া এই সোসাইটিতে কঠিন। কারণ সৎ লোক তো পেছনে ঘুরবে না। তাকে ডেকে এনে দায়িত্ব দিতে হবে। আর দুর্নীতিবাজেরা পেছনে ঘুরে দায়িত্ব নিতে চায়। অর্থনৈতিক মন্দায় দেখে শুনেই খরচ করার নির্দেশনা রয়েছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে