শারজাহ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এশিয়া কাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৭’উইকেটে হারলো বাংলাদেশ। টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১২৭ রান তোলে বাংলাদেশ। ১২৮ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৩ উইকেট হারিয়ে সহজ জয় তুলে নেয় আফগানিস্তান।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে অধিনায়ক সাকিবের মাইলস্টোন অর্জনের ম্যাচটিও জয় দিয়ে স্মরণীয় করে রাখতে পারল না টাইগাররা। হারল ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানেই। আর দুর্দান্ত এই জয়ে প্রথম দল হিসেবে সুপার ফোরে পৌঁছে গেল মোহাম্মদ নবির দল। শারজায় মঙ্গলবার রাতে টস জিতে আগে ব্যাটিং করে রশিদ-নবিদের বিপক্ষে মাত্র ১২৮ রানের লক্ষ্য দিতে পারে বাংলাদেশ। জবাবে মাত্র ৩টি উইকেট হারিয়ে ৯ বলে হাতে রেখেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় নজিবুল্লাহ-ইব্রাহিম জাদরানরা। মাত্র ১৭ বলে ৪৩ রানের উড়ন্ত ইনিংস খেলে ম্যাচ সেরা হন নজিবুল্লাহ জাদরান। তার এই তাণ্ডুবে ইনিংসে ছিল একটি চারের বিপরীতে ছয়টি ছক্কার মার। আর এতে তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন আরেক জাদরান, তিনে নামা ইব্রাহিম। মূলত অ্যাঙ্করিং রোল প্লে করলেও কম কৃতিত্ব দেয়া যাবে না তাকে। তার ৪১ বলে ৪২ রানের ইনিংসে কোনো ছক্কা না থাকলেও ছিল চারটি চারের মার। এর আগে জবাব দিতে নেমে শুরুটা দেখেশুনেই করেন আফগান দুই ওপেনার হজরতুল্লাহ জাজাই ও রহমানুল্লাহ গুরবাজ।
সাকিবের দ্বিতীয় ও ইনিংসের তৃতীয় ওভারে গুরবাজের তোলা সহজ ক্যাচ মাহমুদউল্লাহ মিস করলে হতাশ হয় বাংলাদেশ। তবে নিজের তৃতীয় ওভারে এসেই আফাগান ওপেনারকে ঠিকই ক্রিজ ছাড়া করেন টি-টোয়েন্টির শীর্ষ উইকেট শিকারি। মুশফিকের স্ট্যাম্পিং হয়ে গুরবাজ ফেরেন ১১ রান করে, ১৮ বল থেকে। যাতে দলীয় ১৫ রানে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এরপর দলীয় ৪৫ রানে জাজাইকে ফেরান মোসাদ্দেক হোসাইন। ২৬ বলে ৩ চারের মারে ২৩ রান করে সাজঘরে ফেরেন আফগান বাঁহাতি ওপেনার। আর ১৩তম ওভারে গিয়ে তৃতীয় উইকেটটি পায় বাংলাদেশ, সাইফুদ্দিনের বলে। দলীয় ৬২ রানে লেগ বিফোর হয়ে সাজঘরে ফেরেন অধিনায়ক মোহাম্মদ নবি। তবে টাইগারদের হতাশ করে পরের ৩৩ বলে ৬৯ রান তুলে ম্যাচ শেষ করেন নজিবুল্লাহ ও ইব্রাহিম।
বাংলাদেশের হয়ে এদিন একটি করে উইকেট লাভ করেন সাকিব, মোসাদ্দেক ও সাইফুদ্দিন। এদিন প্রয়োজনীয় মুহূর্তে আবারো ব্যর্থ হলেন পেসার তাসকিন আহমেদ। সঙ্গে যোগ দেন ডেথ ওভার স্পেশালিষ্ট কাটার মাস্টার মুস্তাফিজ। দুজনেই তিন ওভার করে হাত ঘুরিয়ে যথাক্রমে ২২ ও ৩০ রান দিয়েও উইকেট নিতে পারেননি একটিও। অন্যদিকে, শততম ম্যাচ খেলতে নামা সাকিব আল হাসান ৪ ওভারে ১৩ রানে বিনিময়ে নেন ১টি উইকেট।এর আগে শারজাহ স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে রীতিমত বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ দল। মোসাদ্দেক হোসাইন, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও মাহেদি হাসানের কল্যাণে শেষ পর্যন্ত ৭ উইকেটে ১২৭ রান তুলতে পারে সাকিবের দল।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৮ রান আসে মোসাদ্দেক হোসাইন সৈকতের ব্যাট থেকে। তার ৩১ বলের এই টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসে ছিল চারটি চার ও এক মাত্র ছয়ের মার। এছাড়া মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ করেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৫ রান। একটি মাত্র চারের মারে ২৭ বলে ওই রান করেন রিয়াদ। আর শেষ দিকে ১২ বলে ১৪ রান আসে শেখ মাহেদির ব্যাট থেকে, দুটি চারের সাহায্যে।
আফগানদের হয়ে এদিন ফারুকি কোনো উইকেট না পেলেও বাংলাদেশকে ধসিয়ে দেন মূলত দুই স্পিনার মুজিব উর রহমান ও তারকা লেগ স্পিনার রশিদ খান। দুজনেই নেন ৩টি করে উইকেট। মুজিব নেন ১৬ রানে এবং রশিদ নেন ২২ রানে।