পবিত্র ঈদুল আজহা আর মাত্র কয়েকদিন পরেই। এ’সময়ে বাড়তি চাহিদার কথা মাথায় রেখে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজের আমদানি বাড়িয়েছেন বন্দরের আমদানিকারকরা। এতে করে গতকাল একদিনেই বন্দর দিয়ে রেকর্ড সংখ্যক পেঁয়াজের আমদানি হয়েছে। এদিন ৭৪টি ট্রাকে ২ হাজার ২১১ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। এদিকে আমদানির পরিমাণ বাড়লেও আবারও কেজিতে ১টাকা করে বেড়েছে পেঁয়াজের দাম।

হিলি স্থলবন্দর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, পেঁয়াজ আমদানির অনুমতির পর থেকেই হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ইন্দোর ও নাসিক জাতের পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত রয়েছে। তবে গতসপ্তাহের শেষের দিন থেকেই পেঁয়াজের দাম ঊর্ধ্বমুখি অবস্থায় বর্তমানে সেই ধারা অব্যাহত রয়েছে। বর্তমানে বন্দরে ইন্দোর জাতের পেঁয়াজ পাইকারিতে (ট্রাকসেল) ৩১ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে যা বৃহস্পতিবার ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল। এর আগের দিন বুধবার ২৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল। এছাড়া নাসিক জাতের পেঁয়াজ ৩৩ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে যা বৃহস্পতিবার বন্দরে ৩২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল। এর আগের দিন বুধবার এই নাসিক জাতের পেঁয়াজ ২৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল।

হিলি স্থলবন্দরে পেঁয়াজ কিনতে আসা পাইকার ইদ্রিস আলী বলেন, গতসপ্তাহ থেকেই পেঁয়াজের বাজার ঊর্ধ্বমুখি দামের কোন স্থিতিশীলতা নেই। প্রতিদিনই দাম বেড়েই চলছে দিন যাচ্ছে আর দাম বাড়ছে। গতসপ্তাহে যে ইন্দোর জাতের পেঁয়াজ আমরা বন্দর থেকে কিনলাম ২৬ টাকা কেজি দরে সেই পেঁয়াজ এখন ৩১ টাকা হয়ে গেছে। এছাড়া নাসিক জাতের পেঁয়াজ ২৮টাকা কিনে ছিলাম সেটি এখন বেড়ে ৩৩ টাকা হয়ে গেছে। মোটামুটি সব পেঁয়াজের দামই ঊর্ধ্বমুখি যার কারণে আমাদের কিনতে সমস্যা হচ্ছে পুঁজি বেশি লাগছে। দাম কম থাকলে সবাই কিনতে পারে বেচাকেনা ভালো হয় দেশের মানুষ কম দামে খেতে পারে তেমনি মোকামে পেঁয়াজের চাহিদা ভালো থাকে। তবে ঈদের কারণে টানা ৬ দিন স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ থাকবে যার কারণে বাকি যে কয়দিন আমদানি-রপ্তানি চালু রয়েছে এ সময়ে সকলেই ঘরে পেঁয়াজ রাখতে চাচ্ছে এতে করে মোকামগুলোতে পেঁয়াজের ভালো চাহিদা তৈরি হয়েছে।

হিলি স্থলবন্দরের পেঁয়াজ আমদানিকারক রহমত আলী বলেন, আর মাত্র কয়েকদিন পরেই পবিত্র ঈদুল আজহা এ সময়ে দেশের বাজারে পেঁয়াজের বাড়তি চাহিদা ঘিরে বন্দর দিয়ে পেঁয়াজের আমদানি অব্যাহত রেখেছেন বন্দরের আমদানিকারকরা। মাঝে অতিরিক্ত গরমের কারণে আমদানিকৃত পেঁয়াজের মান খারাপ হওয়ায় কম দামে বিক্রি করতে হওয়ায় লোকশান গুনতে হচ্ছিল। সেই সঙ্গে বৃষ্টির মাঝে পেঁয়াজ লোডিং হওয়ার কারণেও পেঁয়াজের মান খারাপ হচ্ছিল যার কারণে লোকশান থেকে বাঁচতে কিছুটা ক্রয়ের পরিমান কমিয়েছিলেন আমদানিকারকরা। কিন্তু ঈদুল আজহা উপলক্ষে আগামী ২৭ জুন থেকে ২ জুলাই পর্যন্ত টানা ৬ দিন হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি রপ্তানি বন্ধ থাকবে। এতে করে আজ ও আগামীকাল এই দুই দিন বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত থাকবে।

হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়ায় দীর্ঘ দুই মাস ২০ দিন বন্ধের পর গত ৫ জুন হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়। এরপর থেকেই বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত রয়েছে। তবে প্রথম দিকের তুলনায় দিন দিন পেঁয়াজ আমদানির পরিমান বাড়তে থাকে। এমন অবস্থা কিছুদিন চলার পর গতসপ্তাহের শেষের দিক থেকে আবারও পেঁয়াজের আমদানি কমে আসে। পূর্বে ৫০ থেকে ৬০ ট্রাক পেঁয়াজ আমদানি হলেও সেটি কমে ৩৫ থেকে ৪০ ট্রাকে নেমে এসেছিল। তবে শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির কারণে একদিন বন্ধের পর গতকাল শনিবার বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। এদিন বন্দর দিয়ে রেকর্ড পরিমানে পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। এদিন ৭৪টি ট্রাকে ২ হাজার ২১১ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে