আব্দুর রউফ পাভেল,নওগাঁ প্রতিনিধি ।। নওগাঁর বদলগাছীতে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষে সফলতা পেয়েছেন চাষি সবুজ হোসেন। শখের বসে তরমুজ চাষ করে তিনি আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। কম পরিশ্রম ও ভালো দাম পেয়ে খুশি তিনি। তার তরমুজের ক্ষেত দেখতে এবং পরামর্শ নিতে আসছেন আশপাশের চাষিরা। উপরে সবুজ পাতা আর মাচার নিচে ঝুঁলে আছে কালো ও সাদা রঙের তরমুজ। গাছ থেকে ছিঁড়ে না পড়ে তার জন্য প্রতিটি তরমুজে দেওয়া আছে জালি। এমন দৃশ্য জেলার বদলগাছী উপজেলার মিঠাপুর গ্রামের মাঠে। এ জমিতে আগে পটল ও করোল্লা আবাদ করা হতো। কিন্তু এ বছর সবুজ হোসেন মৌসুমী সমন্বিত কৃষি ইউনিটের পরামর্শে মালচিং পদ্ধতিতে ২২ শতাংশ জমিতে ব্লাক বেবী এবং ব্লাক কীং জাতের তরমুজ চাষ করেছেন।

প্রতিটি তরমুজের ওজন প্রায় ২ থেকে ৪ কেজি। ক্ষেতে প্রায় ১ হাজার তরমুজে জালি দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে ক্ষেত থেকে তরমুজ উঠিয়ে বাজারজাত শুরু করেছেন তিনি। প্রতি কেজি তরমুজ ৪২ থেকে ৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন।

সবুজ হোসেন বলেন, পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে স্থানীয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা  মৌসুমী সমন্বিত কৃষি ইউনিটের পরামর্শে এ বছর শখের বসে তরমুজ চাষ করে আর্থিক ভাবেও লাভবান হচ্ছেন। মোট ২২শতাংশ জমিতে চাষাবাদ, বীজ ও মাচা তৈরিতে খরচ পড়েছে প্রায় ৩৫ হাজার টাকা। আড়াই মাসের এ আবাদে খরচ বাদে প্রায় ১ লাখ টাকা লাভ থাকবে বলে জানান সবুজ হোসেন। তার দেখাদেখি এখন বদলগাছীর অনেকেই তরমুজ চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

সবুজ হোসেন বলেন, জমিতে চাষ দিয়ে পরিমাণ মতো সার ও জৈব সার প্রয়োগ করা হয়। এরপর নির্দিষ্ট দূরত্বে মালচিং পেপার দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। এরপর চারা রোপণ করা হয়। এর দুই থেকে তিন দিন পর জমিতে সেচ দেওয়া হয়। গাছ বড় হওয়ার সাথে সাথে প্রতিটি গাছে খুঁটি এবং ১৫ থেকে ২০ দিন পর মাচা তৈরি করে দেওয়া
হয়। পোকামাকড়ের আক্রমণ খুবই কম। তিনি বলেন, ফল বড় হওয়ার সময় নেট বা জালি দিয়ে বেঁধে দেওয়া হয়। যেন গাছ থেকে ছিঁড়ে না যায়। গাছ লাগানোর ৭০ থেকে ৭৫ দিনের মধ্যে ফল উঠানো যায়।

বদলগাছী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ হাসান আলী বলেন, ধানের পাশাপাশি কৃষকদের বিভিন্ন ফল ও শাকসবজি চাষে উৎসাহিত করা হচ্ছে। রাজশাহী বিভাগের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় এর আগেও বদলগাছীতে ব্লাক বেবী এবং ব্লাক কীং তরমুজ চাষে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিপ্তরের পক্ষ থেকে কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হয়েছে। তবে বেসরকারি পর্যায়ে এই প্রথম মৌসুমী নামের একটি এনজিও পল্লী কর্ম -সহায়ক ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে এই তরমুজ এখানে চাষ করছে। তরমুজ একটি লাভজনক অর্থকারী ফসল। চাষিরা যেন গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষে ব্যাপকভাবে উৎসাহ পায় সেই বিষয়টি কৃষি অফিস থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে বলে তিনি জানান।

নওগাঁ নিউজ ডেস্ক ।। বিডি টাইম্‌স নিউজ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে