কে এম মিঠু,টাঙ্গাইল প্রতিনিধি।। টাঙ্গাইলের গোপালপুরে হেলেনা আক্তার নামে পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। পরিবারের দাবি তাকে বিষ প্রয়োগে হত্যা করা হয়।
জানা যায়, হেলেনা মাহমুদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির ছাত্রী। বাবা হেলাল মিয়া দিনমজুর এবং মা কুলছুম বেগম মানসিক প্রতিবন্ধী। দারিদ্র্যতার কারণে হেলেনা দূর সম্পর্কের আত্মীয় মাহমুদপুর গ্রামের মোজাফফর তালুকদারের বাড়িতে থেকে লেখাপড়া করতো। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা খালেদা সওগাতুন্নেছা জানান, ৫ম শ্রেণিতে লেখাপড়া করলেও হেলেনার বয়স ছিল ১৪ বছর। গত রবিবার সে ক্লাস করেছে। বিকালে সে বমি করতে করতে অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আলীম আল রাজি জানান, রবিবার রাত আটটার দিকে মোজাফফর তালুকদারের দুই আত্মীয় হেলানাকে শোচনীয় অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করাতে আসে। পর্যবেক্ষণে দেখা যায় সে অজ্ঞাত বিষে আক্রান্ত হয়েছে। সোমবার সকালে অবস্থার আরো অবনতি ঘটলে টাঙ্গাইল শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। সেখানেই গত সোমবার দুপুরে সে মারা যায়।
হেলেনার বাবা হেলাল মিয়া ও চাচা দুলাল মিয়ার অভিযোগ, হেলেনাকে যৌন নির্যাতন করা হত। এক পর্যায়ে তাকে বিষ প্রয়োগে হত্যা করা হয়। অসুস্থ হেলেনাকে হাসপাতালে নেওয়ার বিষয়ে পরিবারকে কিছু জানানো হয়নি। হাসপাতালে মারা যাওয়ার পর মোজাফফর তালুকদার গোপনে নিহতের ময়না তদন্ত করান। পরে লাশ গোপালপুর থানায় নিয়ে হাজির হওয়ার পর পরিবারকে জানানো হয় যে, হেলেনা বিষাক্ত লবনপানে আত্মহত্যা করেছে। বিষ প্রয়োগে হত্যার বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার জন্য তারা লুকোচুরি করেছে। গোপালপুর থানার এস আই আনোয়ার হোসেন জানান, ময়নাতদন্ত শেষে লাশ গোপালপুর থানায় আনা হলে একটি অপমৃত্যু মামলা হয়। লাশ পরিবারকে বুঝিয়ে দেয়া হয়। মঙ্গলবার দুপুরে মাইজবাড়ী গ্রামে তার মরদেহ দাফন করা হয়।
এদিকে মোজাফফর তালুকদার জানান, ভুলক্রমে বিষাক্ত লবন পান করায় হেলেনা অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাকে সর্বোচ্চ চিকিৎসা দেয়া হয়।থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোশারফ হোসেন জানান, অজ্ঞাতনামা বিষে হেলেনা মারা গেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন হবে। ভিসেরা পরীক্ষার জন্য আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে।
টাঙ্গাইল নিউজ ডেস্ক ।। বিডি টাইম্স নিউজ