করজাল বাড়াতে বিভাগীয় শহরে বাড়ির মালিকদের টিআইএন ও রিটার্নের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। হোল্ডিং নম্বর ধরে ধরে বাড়ির মালিকের টিআইএন আছে কি না, থাকলে নিয়মিত রিটার্ন জমা দেন কি না- সেই তথ্য যাচাই শুরু হয়েছে।
ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সঙ্গে মঙ্গলবার প্রাক-বাজেট আলোচনায় এ তথ্য জানান জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। এনবিআরের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন ইআরএফ সভাপতি শারমিন রিনভী ও সাধারণ সম্পাদক এসএম রাশিদুল ইসলাম। এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, নেট (করজাল) বাড়ানো এবং রেট (করহার) কমানোর স্লোগান নিয়ে এনবিআর কাজ করছে। যত দ্রুত নেট বাড়ানো এবং রেট কমানো দরকার, সেটা হয়তো হচ্ছে না। তবে এক সকালেই সেটা সম্ভবও নয়। ধীরে ধীরে এগোচ্ছি। করপোরেট করহার কমানো হয়েছে। করজাল বাড়ানোর জন্য বিভাগীয় শহরের বাড়ির মালিকদের টিআইএন যাচাইয়ের কাজ চলছে। তিনি আরও বলেন, অনলাইনে রিটার্ন জনপ্রিয় করতে পারলে করজাল বাড়বে। এখন একজন মানুষকে রিটার্ন জমা দিতে আয়কর আইনজীবীর শরণাপন্ন হতে হয়। এটি কীভাবে আরও সহজ করা যায়, সে পরিকল্পনা আছে।
দেশে কর সংস্কৃতি গড়ে উঠেনি মন্তব্য করে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘করজাল বাড়ানোর বড় অন্তরায় কর সংস্কৃতি গড়ে না ওঠা। কর দেব কেন, কর দিয়ে কী পাই- এসব প্রশ্নের উত্তর দিতে না পারলে মানুষ কেন কর দেবে। এখন এসব প্রশ্নের উত্তর দৃশ্যমান। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেলের মতো বড় বড় প্রকল্প করা হচ্ছে। এখন বলতে পারি মানুষের করের টাকায় এগুলো হয়েছে, হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ‘শুধু সাধারণ মানুষ নন, সরকারি প্রতিষ্ঠানও কর দিতে চায় না, ছাড় চায়। তারা বলে সরকারের টাকা সরকারের কাছেই তো যাচ্ছে। কিন্তু এতে কর সংস্কৃতির বিকাশ হচ্ছে না। বিদেশি কর্মীদের বিষয়ে তিনি বলেন, বিদেশি নাগরিকরা ট্যুরিস্ট ভিসায় দেশে কাজ করলে এনবিআরের পক্ষে সেটা দেখা সম্ভব নয়। এটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাজ। তারপর বিমানবন্দরে আয়কর বুথ করা আছে। সেখানে নজর রাখা হয়ে থাকে। তবে এক্ষেত্রে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো ভূমিকা রাখতে পারে। কারণ তারাই জানে কোন কোন প্রতিষ্ঠান বিদেশিদের নিয়োগ দিয়েছে।
ইআরএফের প্রস্তাবনা : আগামী বাজেটে বিবেচনার জন্য শুল্ক-করসংক্রান্ত ২০টি প্রস্তাব দিয়েছে ইআরএফ। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়িয়ে ন্যূনতম করহার কমানো, বিদেশি নাগরিকদের কাছ থেকে কর আদায় করতে জরিপ চালানো, অনলাইনে রিটার্ন জমা বাড়ানো, প্রচার-প্রচারণা চালানো, অর্থ পাচার রোধে দক্ষিণ কোরিয়ার মতো আইনি বিধান প্রণয়ন, সবুজ শিল্পায়নকে উৎসাহিত করতে করপোরেট করের ব্যবধান ৫ শতাংশ করা, ভ্যাট আদায়ে ইএফডি মেশিন ব্যবহার নিশ্চিত করতে মনিটরিং বাড়ানো এবং বোতলজাত পানির সম্পূরক শুল্ক শিথিলের প্রস্তাব দেওয়া হয়।
নিউজ ডেস্ক ।। বিডি টাইম্স নিউজ