জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে আগামী ৩০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশের প্রায় ১৭ শতাংশ এলাকা পানিতে তলিয়ে যেতে পারে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ। এতে দুই কোটি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা করেছে সংস্থাটি।

সোমবার সংস্থাটির মানবাধিকার কাউন্সিলের হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট এ কথা জানান।এছাড়া, ২০৫০ সালের মধ্যে ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড এবং ভিয়েতনামসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বেশির ভাগ অঞ্চল উচ্চ জোয়ারের প্রভাবে তলিয়ে যাবে বলে সতর্ক করেছেন তিনি।তাদের প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০১৯ সালে চীন, বাংলাদেশ, ভারত এবং ফিলিপাইনে অন্যান্য দেশের তুলনায় দুর্যোগের কারণে বাস্তুচ্যুতির ঘটনা বেশি ঘটেছে। যা বিশ্বের মোট ৭০ শতাংশ।

এদিকে বিবিসির এক গবেষণায় বলা হয়, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বে অত্যধিক উষ্ণ দিনের সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়েছে। ১৯৮০ সাল থেকে প্রতি দশকে গ্রীষ্মকালে প্রায় দিনেই, ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রা অনুভূত হচ্ছে। আরেক গবেষণায় দেখা গেছে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রতিক্রিয়া নিয়ে সবচেয়ে বেশি উদ্বিগ্ন তরুণরা।চলতি বছর করোনার পাশাপাশি নানা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে নাকাল বিশ্ববাসী। এরই মধ্যে বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, দাবানল ও মৌসুমি ঝড়ের সম্মুখীন হয়েছে ইউরোপ, আমেরিকা ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশ। এসবের জন্য দায়ী জলবায়ু পরিবর্তন।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক গবেষণায় বলা হচ্ছে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বিশ্বে দ্বিগুণ হারে বেড়েছে উষ্ণতম দিনের সংখ্যা।১৯৮০ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত প্রতি বছরের গড়ে ১৪ দিনে তাপমাত্রা ছিল ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে। যা ২০১০ থেকে ২০১৯ সালে এসে ২৬ দিনে দাঁড়িয়েছে।নগরায়ন, বৃক্ষনিধন এবং পরিবেশের ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করায় পৃথিবীর তাপমাত্রা ক্রমে বাড়ছে বলে জানিয়েছে গবেষকরা। এতে জনজীবন ও প্রকৃতি দিন দিহুমকির সম্মুখীন হচ্ছে বলে শঙ্কা প্রকাশ করে তারা।

যুক্তরাজ্যের আবহাওয়াবিদ এইডান ম্যাকগিভার্ন জানিয়েছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের মাত্রা আরও বাড়তে পারে। এভাবে চললে তাপদাহ আরও দীর্ঘস্থায়ী। যা পরিবেশ ও মানুষ দুইয়ের জন্যই বড় হুমকি।এদিকে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব নিয়ে সবচেয়ে বেশি চিন্তিত তরুণরা। ১০ দেশের ১০ হাজার মানুষকে নিয়ে করা বিবিসির এই গবেষণায় দেখা যায়, প্রতি ১শ জনের ৬০ জন তরুণ এই বিষয়ে খুবই উদ্বিগ্ন। ৪৫ ভাগের দাবি, জলবায়ু পরিবর্তন তাদের দৈনন্দিন জীবনকে প্রভাবিত করে। এছাড়া দুই তৃতীয়াংশরা পরিবেশ দূষণের জন্য আগের প্রজন্মের উপর ক্ষোভ জানায়।

তথ্যঃ ইন্ডিপেনডেন্ট

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে