আমরা একা নই। আমাদের মতোই আরও একটি সৌরজগত আছে বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে। সেটার গঠন ও প্রকৃতিও অবিকল আমাদের সৌরজগতের মতোই। আমাদের যেমন বুধ থেকে নেপচুনকে নিয়ে রয়েছে আটটি গ্রহ, সেই সৌরজগতেরও গ্রহের সংখ্যা আট। শুধু তাই নয়, আমাদেরটা ঠিক যে ভাবে একের পর এক সুবিন্যস্ত রয়েছে, ২ হাজার ৪৪৫ আলোকবর্ষ দূরে, ‘ড্রাকো’ গ্যালাক্সিতে সেই সৌরজগতে আটটি গ্রহ রয়েছে একই ভাবে। বুধ, মঙ্গল, শুক্র, পৃথিবীর মতো ছোট আকারের পাথুরে গ্রহগুলি যেমন সূর্যের কাছাকাছি আর বৃহস্পতি, শনি, ইউরেনাস ও নেপচুনের মতো গ্যাস ও বরফে ভরা বড় গ্রহগুলি রয়েছে সূর্যের থেকে দূরে; সদ্য আবিষ্কৃত সৌরজগতের আটটি গ্রহ ঠিক সেই ভাবেই রয়েছে।
বৃহস্পতিবার নাসার সদর দফতরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানানো হয়। বলা হয়, এটা একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। নাসার অ্যাস্ট্রোফিজিক্স ডিভিশনের বিজ্ঞানী পল হার্টজ বলেছেন, ‘‘অবিকল আমাদের মতো এই সৌরজগতের সাতটি গ্রহের হদিশ আগেই মিলেছিল। এ বার জানা গেল সেখানে রয়েছে অষ্টম গ্রহ। যার নাম ‘কেপলার-৯০-আই’। এই গ্রহটিকে দেখতে অবিকল পৃথিবীর মতো। পাথুরেও। সেটি তার নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করে প্রায় ১৫ দিনে। তবে সেটি তার নক্ষত্রের (কেপলার-৯০) বেশি কাছে আছে বলে এর তাপমাত্রা অনেক বেশি।’’
নাসার তরফে জানানো হয়েছে, যেহেতু গঠন ও প্রকৃতিতে আমাদের সৌরজগতের মতোই, তাই সেখানে প্রাণের হদিশ পাওয়ার সম্ভাবনা জোরালো হয়ে উঠল। শুধু তাই নয়, ওই সৌরজগতের আরেকটি গ্রহ ‘কেপলার-৯০-এইচ’ তার নক্ষত্রের থেকে ঠিক সেই দূরত্বেই রয়েছে, আমাদের পৃথিবী সূর্য থেকে রয়েছে যতটা দূরে। এই গ্রহটিতে জল তরল অবস্থায় থাকতে পারে বা পৃথিবীর মতো বায়ুমণ্ডলও থাকতে পারে। ফলে, প্রাণের সৃষ্টি বা তার টিকে থাকার পক্ষে সহায়ক হয়ে উঠতে পারে এই গ্রহটির পরিবেশ।
নাসার তরফে জানানো হয়েছে, আরও একটি গ্রহের হদিশ মিলেছে আমাদের সৌরজগতের চেহারারই আরও একটি নক্ষত্রমণ্ডলে। যার নক্ষত্রের নাম ‘কেপলার-৮০’। সেই সৌরমণ্ডলে যে গ্রহটির সন্ধান মিলেছে, তার নাম ‘কেপলার-৮০-জি’। এটি ঐ সৌরজগতের ষষ্ঠ গ্রহ। ফলে আগামীতে সেখানে আমাদের মতোই আটটি বা তার বেশি গ্রহের সন্ধান মিললেও মিলতে পারে। এ বছরের গোড়ার দিকে ‘ট্রাপিস্ট’ নক্ষত্র মণ্ডলের হদিশ মিলেছিল, যেখানে গ্রহের সংখ্যা সাত। এবং তাতে পৃথিবীর মতো জল বা বায়ুমণ্ডল আছে, এমন অন্তত তিনটি গ্রহের হদিশ মিলেছে।
ভিনগ্রহ খুঁজতে এবং ভিনগ্রহে প্রাণের সন্ধান পেতে ২০০৯ সালে নাসা মহাকাশে পাঠিয়েছিল কেপলার স্পেস টেলিস্কোপ। সেই টেলিস্কোপ ২০১৩ সাল পর্যন্ত পৃথিবীর মতো ‘বাসযোগ্য’ প্রায় আড়াই হাজার গ্রহের সন্ধান পায়।
অনলাইন ডেস্ক, বিডি টাইম্স নিউজ