পুরনো বছরকে বিদায় দিয়ে নতুন বছরকে বরণ করার নানা পরিকল্পনা নিয়ে যখন সবাই ব্যস্ত, ঠিক এমন সময়ে গত বছর বিশ্বে আগমন হয় করোনাভাইরাসের। চীনের উহান থেকে শুরু, এরপর ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন দেশে। ২০১৯ এর ডিসেম্বরে উহানে এই ভাইরাস সংক্রমণে অসুস্থ হতে শুরু করে অনেকেই। ১১ই জানুয়ারি এই ভাইরাস সংক্রমণে বিশ্বে প্রথম মৃত্যুর খবরটি আসে। এরপরই নড়েচড়ে বসে অন্যদেশগুলোও। ভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে উহান থেকে আসা যাত্রীদের বিশ্বের বিভিন্ন বিমানবন্দরে স্ক্রিনিং করা হয় শুরু হয়। কিন্তু তাতেও ঠেকানো যায়নি সংক্রমণ। ইতালি, স্পেনসহ ইউরোপের কয়েকটি দেশে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই দেখা দেয় করোনার প্রাদুর্ভাব।
ফেব্রুয়ারির শেষ নাগাদ করোনায় বিশ্বে আক্রান্ত ছাড়ায় ৮২ হাজার, মৃত্যু হয় প্রায় ৩ হাজার। তারপর ১১ই মার্চ করোনাভাইরাসকে মহামারি ঘোষণা দেয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।মার্চের শেষ সপ্তাহ নাগাদ করোনার নতুন কেন্দ্রে পরিণত হয় যুক্তরাষ্ট্র। ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে লকডাউন শুরু হয় মার্চের শেষেই।
করোনাভাইরাসের কারনে এবছর হজপালন করা হয় সীমিত পরিসরে, আর সংক্রমণ রোধে পবিত্র কাবা শরীফ ও মসজিদে নববীতে রমজান মাসে সাধারণ মানুষের নামাজ আদায়ে দেয়া হয় নিষেধাজ্ঞা। করোনা শুধু মানুষের স্বাস্থ্যে আঘাত হানেনি, টানা লকডাউনে ধস নামে বিশ্ব অর্থনীতিতে, আর বিনোদন কেন্দ্রগুলো বন্ধ থাকায় পর্যটন খাতও পড়ে লোকসানের কবলে।
লকডাউনের কারণে ঘরে আবদ্ধ মানুষগুলো সময় কাটাতে বেছে নেয় অভিনব কায়দা। বিভিন্ন দেশে বেড়ে যায় বেলকনি কনসার্টের প্রবণতা। সেই সঙ্গে হোম অফিসের কারণে বাড়তে থাকে ভার্চুয়াল যোগাযোগ। এমনকি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্লাস ও পরীক্ষাও নেয়া শুরু হয় অনলাইনে। তবে পুরো বিশ্ব যখন করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর হিসেব কষতে ব্যস্ত, তখনই প্রকৃতি জেগে ওঠে নতুন সাজে, চলে জাগরণের খেলা। সমুদ্র সৈকতে অবাধে ঘুরতে থাকা কচ্ছপ, কিংবা ফাঁকা রাস্তায় ময়ূরের নির্ভয়ে চলাচল মানুষকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় এ পৃথিবী, তাদেরও বটে।
তথ্যঃ ডিবিসি