জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি।। মরে যাচ্ছে এশিয়া মহাদেশের বৃহত্তম ও প্রাচীন বটগাছটি। এরই মধ্যে অসংখ্য ডালপালা মরে পড়ে গেছে। বটগাছটি দেখভালে বনপ্রহরী থাকলেও বিন্দুমাত্র যতœ নেন না। তবে স্বেচ্ছায় আব্দুল খালেক নামে একজন গাছটির যত্ন নিচ্ছেন।
বৃহত্তম বটগাছটি ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ শহর থেকে ৯’কিলোমিটার পূর্বে কালীগঞ্জ-আড়পাড়া পাকা সড়কের পাশে। প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে অসংখ্য মানুষ ৩০০ বছরের পুরনো এ গাছটি দেখতে আসেন। ১১’একর জমিজুড়ে রয়েছে গাছটির অস্তিত্ব, উচ্চতা আনুমানিক ২৫০-৩০০’ফুট। বর্তমানে গাছটি ৪৫’টি বটগাছে রূপ নিয়েছে। এ গাছের উৎপত্তি সম্পর্কে সঠিক কোনো তথ্য জানা না গেলেও এলাকার বয়োবৃদ্ধদের মুখে জানা যায়, একটি কুয়ার পাড়ে ছিল গাছের মূল অংশ। তখন জনবসতি ছিল খুবই কম। সড়কের পাশে গাছটি ছিল ডালপালা পাতায় পরিপূর্ণ। গাছের তলায় রোদ-বৃষ্টি পড়ত না, মাঘ মাসের শীতের রাতেও গাছের নিচে গরম থাকত। গ্রীষ্মে গাছের নিচে লাগত ঠাণ্ডা, পথচারীরা গাছের তলায় শুয়ে-বসে বিশ্রাম নিতেন। বাস্তবে সুইতলা নামে কোনো স্থানের অস্তিত্ব নেই তাই বয়োবৃদ্ধদের ধারণা, পথশ্রান্ত পথিকরা যখন মনোরম স্থানে শুয়ে-বসে বিশ্রাম নিতেন, তখন থেকেই অনেকের কাছে এটি সুইতলা বটগাছ বলে পরিচিতি লাভ করে। আর এর থেকেই নামকরণ হয় সুইতলা বটগাছ। মূল গাছ এখন আর নেই।
বর্তমানে প্রায় দু-তিনশ ‘ব’ নেমে প্রায় ১১’একর জমি দখল করে নিয়েছে বৃহত্তম গাছটি। গাছটি কেন্দ্র করে পাশেই বাংলা ১৩৬০’সালের দিকে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে মল্লিকপুরের বাজার। বটগাছটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব বিবেচনা করে ও পর্যটকদের সুবিধার্থে এখানে ১৯৯০ সালে সরকারিভাবে একটি রেস্ট হাউস নির্মাণ করা হয়।
রক্ষণাবেক্ষণ না করায় রেস্ট হাউসটি এখন আর বাসযোগ্য নয়। ফলে দেশ-বিদেশ থেকে পর্যটকদের আসাও বন্ধ হয়ে গেছে। এদিকে, ঐতিহাসিক এ বটগাছটি দেখভালের জন্য বাংলো বানিয়ে শাহিন কবির নামে একজনকে বনপ্রহরী হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। কিন্তু তিনি মানুষকে অবাধ যাতায়াতের সুযোগ করে দিচ্ছেন। ফলে লোকজন গাছের ডালপালা কেটে নিয়ে যান। তবে এ ব্যাপারে কথা বলতে রাজি হননি শাহিন। তিনি বলেন, বন কর্মকর্তার নিষেধ আছে।
ঝিনাইদহ নিউজ ডেস্ক ।। বিডি টাইম্স নিউজ