অস্ট্রেলিয়ার তাসমানিয়া দ্বীপের উপকূলে আটকা পড়ে শত শত তিমি মরে পড়ে আছে সৈকতে। ধারণা করা হচ্ছে, প্রায় ৪০০ পাইলট তিমি মারা গেছে। বিশ্বে এটিই প্রথম ঘটনা। এর আগে এক স্থানে এত সংখ্যক তিমির মৃত্যু হয়নি।
বুধবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৯৬ সালে ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া রাজ্যে ৩২০টি তিমির সৈকতে আটকে পড়া রেকর্ড করা হয়েছিল। এ পর্যন্ত ৫০টি তিমিকে বাঁচাতে সক্ষম হয়েছেন উদ্ধারকর্মীরা। এখনো বেঁচে থাকা প্রায় ৩০টি তিমিকে রক্ষার চেষ্টা করছেন সমুদ্র বিষয়ক জীববিজ্ঞানীরা। এ জন্য অনেক তিমিকে ভেজা কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখাসহ নানান উপায়ে ঠান্ডা রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। এদিকে তাসমানিয়ান সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন,‘যতক্ষণ জীবিত প্রাণী থাকবে, ততক্ষণ তাদের উদ্ধার কাজ চলবে’।
কী কারণে তিমিগুলো তীরে চলে এসেছে, তা জানা যায়নি। সৈকতে তিমি চলে আসা ওই অঞ্চলের সাধারণ ঘটনা হলেও গত এক দশকে এত সংখ্যক তিমিকে সাগর থেকে উঠে আসতে দেখা যায়নি।
উপকূলের ম্যাককুয়েরি হেডস এলাকার বালুচর ও অগভীর উপকূলে আটকেরা পড়া এসব তিমি গত সোমবার প্রথম কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। তখন তাসমানিয়ান মেরিটাইম কনজারভেশন প্রোগ্রামের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, সেখানে কাছাকাছি দূরত্বে তিনটি ভাগে ২৭০টি তিমি রয়েছে। কিন্তু বর্তমানে দেখা যাচ্ছে, জীবিত ও মৃত মিলে সৈকতে আটকে পড়া তিমির সংখ্যা প্রায় ৫০০টি।
তাসমানিয়ানস পার্কস অ্যান্ড ওয়াইল্ডলাইফ সার্ভিসের আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক নিক ডেকা বলেন, ঠিক কতটি তিমি সৈকতে আটকে পড়েছে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। তিনি আরও জানান, মৃত তিমিগুলো উপকূলে মাটিচাপা দেওয়া হবে অথবা উন্মুক্ত সাগরে ফেলে দেওয়া হবে। গত সোমবার (২১’শে সেপ্টেম্বর) ৯০টি তিমির মৃত্যুর খবর জানানো হয়েছিল। কিন্তু এর পরের দিন মঙ্গলবার হেলিকপ্টারের সাহায্যে কাছে যেতেই আরও প্রায় ২০০ তিমিকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।
প্রথমে তাসমানিয়ান মেরিটাইম কনজারভেশন প্রোগ্রামের ৪০ কর্মী উদ্ধার অভিযানে অংশ নিলেও বর্তমানে উদ্ধারকর্মীর সংখ্যা ৬০ জনে পৌঁছেছে। উদ্ধারকারীরা বলছেন, তাদের অভিযানে বড় বাধা সমুদ্রের প্রচণ্ড ঢেউ। কারণ যখনই কোনো তিমি বালুচর থেকে কিছুটা আলাদা করা হয়, তখনই ঢেউ এদের কূলে ঠেলে দিচ্ছে।
অধিকাংশ তিমি ‘অপেক্ষাকৃত দুর্গম স্থানে’ রয়েছে, ফলে উদ্ধারকর্মীদের জন্য বিষয়টি চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে। তাসমানিয়ায় আটকে পড়া তিমিগুলো লম্বা পাখনাওয়ালা পাইলট তিমি। এ প্রজাতির তিমি ডলফিনের গোত্রভুক্ত। পাইলট তিমি ৭ মিটার (২২ ফুট) পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে, ওজন হয় তিন টন পর্যন্ত।
সমুদ্র বিষয়ক জীববিজ্ঞানীদের ধারণা, পথ ভুলে এসব তিমি উপকূলে চলে এসেছে। দলবদ্ধ হয়ে বসবাসকারী এসব তিমি দলনেতাকে অনুসরণ করে চলাচল করে। হয়তো দুই-একটি তিমি পথ ভুল করেছে, আর স্বভাবজাত কারণে অন্যরাও পিছু নিয়েছে।
নিউজ ডেস্ক ।। বিডি টাইম্স নিউজ