ক্ষুদ্র ঋণ দারিদ্র্য বিমোচন নয় বরং দারিদ্র্যকে লালন করে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ডক্টর ইউনূসের প্রশংসা করায় অর্থমন্ত্রীর সমালোচনা করে একথা বলেন তিনি।
শনিবার দুপুরে রাজধানীর কৃষিবিদ ইন্সটিটিউটে মহিলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ক্ষুদ্র ঋণ প্রকল্প নয় বর্তমান সরকারের গৃহীত নানা কর্মসূচির কারণেই দেশে দারিদ্র্যের হার ২২ শতাংশে নেমে এসেছে। আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে জয়ী করতে নেতাকর্মীদের দলকে সুসংগঠিত করার পাশাপাশি বর্তমান সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালানোরও আহ্বান জানান তিনি।

দীর্ঘ ১৪ বছর পর সম্মেলন তাই শনিবার সকাল থেকেই সারাদেশ থেকে আসা নেতাকর্মীদের ভিড়ে মুখরিত ছিল রাজধানীর কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশন। প্রধানমন্ত্রীর আগমনের পর দেশত্বোবোধক গান ও নৃত্য পরিবেশনের মাধ্যমে শুরু হয় সম্মেলনের উদ্বোধনী আয়োজন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশকে দারিদ্র মুক্ত করতে সর্বপ্রথম আওয়ামী লীগ সরকারই সরকারিই কর্মসূচী দিয়েছিল। শেখ হাসিনা বলেন, ‘অনেকেই ক্রেডিট নেন। কদিন আগে আমাদের অর্থমন্ত্রী খুব ক্ষুদ্রঋণের প্রশংসা করে বললেন যে, ক্ষুদ্রঋণের জন্য নাকি দারিদ্র্য বিমোচন হয়েছে। দারিদ্র্য বিমোচন যদি তার জন্যই হতো, তাহলে আর ৬০ ভাগের মতো দারিদ্র্য থাকে কেন, কীভাবে এটা ২২ ভাগে নেমে এসেছে, কবে নেমে এসেছে।’

অর্থমন্ত্রীর উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি অর্থমন্ত্রীকেই বলব, উনি যদি হিসাব নেন, দারিদ্র্য যে ২২ ভাগে নেমে এসেছে, সেটা কাদের আমলে? আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগ সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ যেটা অর্থমন্ত্রীও কর্মসূচি দিয়েছেন আবার কিবরিয়া সাহেব যখন অর্থমন্ত্রী ছিলেন, তাকে দিয়েও আমি ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সালে যেসব কর্মসূচি নিয়েছিলাম, তারই ফলাফলে আজকে দারিদ্র্য বিমোচন হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এই আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর দারিদ্রের হার কমতে শুরু করেছে।

“আমি মাননীয় অর্থমন্ত্রীকে বলব, উনি একটু যাতে হিসাব নেন, এই যে ২২ ভাগে নেমে এসেছে, সেটা কাদের আমলে? আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর। আওয়ামী লীগ সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ.. যেটা মাননীয় অর্থমন্ত্রী এই কর্মসূচি নিয়েছেন।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ক্ষমতায় গেলে যেখানে বিএনপি জামায়াত নারীদের উপর পাশবিক নির্যাতন চালায়, সেখানে নারীর ক্ষমতায়নে কাজ করে আওয়ামী লীগ। ১৯৭১ সালে হানাদার বাহিনী যেমন বাংলাদেশের মানুষের ওপর পাশবিক অত্যাচার-নির্যাতন করেছিল, তেমনি বিএনপি-জামায়াত জোট ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগের নেত-কর্মী থেকে দেশের সাধারণ মানুষের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন চালিয়েছে। ১০ বছরের শিশু থেকে ৬৫ বছরের বৃদ্ধ, কেউ রেহাই পায়নি তাদের নির্যাতনের হাত থেকে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “ক্ষুদ্র ঋণে দারিদ্র্য লালন-পালন হয়। আর, যারা ক্ষুদ্র ঋণের ব্যবসা করে তারা সম্পদশালী হয়। তারা ধনশালী হয়। কারণ, সপ্তাহে সপ্তাহে সুদ ওই গরিবের। মাথার ঘাম পায়ে ফেলে যে টাকা কামাই করে, সেটা তার সুদ হিসাবে চলে যায়। কোনো মতে খেয়ে পরে বেঁচে থাকতে পারে, কিন্তু দারিদ্র্যের হাত থেকে উঠে আসতে পারে না। আর, যারা এই ব্যবসা করে তারা চায়ও না এই দারিদ্র্য থেকে উঠে আসুক। কারণ, দারিদ্র্য থেকে উঠে আসলে, তাদের ব্যবসাই চলে যাবে। তারা কাকে নিয়ে আর ব্যবসা করবে? দেশের উন্নয়নে নারীদের নিজের দক্ষতা কাজের লাগানোর আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

নিউজ ডেস্ক, বিডি টাইম্‌স নিউজ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে