সংবাদ হচ্ছে একটি সংবাদ পত্র কিংবা সমসাময়িকীতে প্রকাশিত তথ্য কিংবা একটি সাম্প্রতিক অথবা চলতি ঘটনার প্রতিবেদন। সাংবাদিকতা একটি গুরুত্বপূর্ন, মহৎ,মানবিক, পেশা। একজন সাংবাদিককে হতে হবে নিরপেক্ষ, পক্ষপাতহীন, নির্ভুল,অবিকৃত,ও বস্তুনিষ্ঠভাবে সংবাদ পরিবেশনকারী। কোন খবরই অর্ধেক সত্য তুলে ধরা যাবেনা পুরোপুরি সত্যটাই প্রকাশ করতে হবে। তবে সংবাদ পচনশীল। এটা সতেজ থাকতেই ভোক্তাদের কাছে অবশ্যই সরবরাহ করতে হব। অন্যথায় এটা কোনক্রমেই সংবাদ নয়।

অর্থাৎ নতুন নতুন সংঘটিত ঘটনাবলি যা, ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়াতে প্রকাশিত,প্রচারিত, উপস্হাপিত ও প্রদর্শিত হয়।এবং জানতে জনগন আগ্রহী ও কৌতুহলী হয় তাই News. বা সংবাদ,সংবাদ মূলত উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব,পশ্চিম অথাৎ চারিদিকের ব্যপার।বিষয়টি কাকতালীয় মনে হলেও এই ধারনাকে একেবারে অবহেলা করা যায় না কেননা সংবাদ নিঃসন্দেহে চারদিকের ঘটনাবলির প্রকাশরুপ। বর্তমানে সংবাদ বা সাংবাদিক News. শব্দটির সাথে সকলেই পরিচিত। সংবাদ বিষয়টি আপেক্ষিক। বিষয়টি দেশ থেকে দেশ, ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি এবং গনমাধ্যম থেকে গনমাধ্যমে বৈচিএপূর্ন রুপ ধারন করে তাই একজন সাংবাদিককে সবসময় মনে রাখতে হবে এক ঘন্টা আগে যা দুর্দান্ত সংবাদ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে, দু’ ঘন্টা পরে সাংবাদ হিসেবে এর কোন আবেদন নাও থাকতে পারে। এর অর্থ স্হান – কাল – পাএ পরিস্থিতিতে সংবাদের মূল্য ও উপাদান বদলে যায়। একজন সাংবাদিকের অবশ্যই কিছু কর্মপদ্ধতি, কৌশল,সম্পাদনা, ভাষা, কিছু টেকনিক্যাল টার্ম – সম্পর্কে ধারনা থাকা দরকার যা সংবাদ পর্যালোচনা সম্পর্কে সাধারন জ্ঞান প্রয়োজনীয় উল্লেখ উপলব্ধি প্রতিবেদনে ফুটে উঠবে। এখানেই একজন সাংবাদিকের বৈশিষ্ট্য সাংবাদিকতা পেশায় একজন সাংবাদিকের লেখালেখিতে ও ছন্দ থাকা অপরিহার্য।

সাধারনত কম কথায় সবচেয়ে আকর্ষণীয় বাা গুরুত্বপূর্ণ তথ্যটি পরিবেশন করতে হবে। সব ক্ষেএে শব্দ চয়নে কুশলী হতে হবে।যথার্থ শব্দ প্রয়োগ অপরিহার্য। একজন সাংবাদিক অবশ্যই মনে রাখতে হব। একটি শব্দের ব্যবহারের কারনে বাক্যের অর্থ ও তাৎপর্য দুই – ই বদলে যায়। সংবাদ পএে গদ্য হতে হবে সহজ সরল ও সরাসরি। প্রয়োজনে অলন্করনে আপত্তি নেই। কম কথায় লিখতে হবে সঠিক, তবে বক্তব্য স্পষ্ট করার স্বার্থে এক লাইন বেশি লিখতে কার্পণ্য না করা ভালো। সাংবাদিক সবসময় নতুন তথ্য, ঝরঝর গদ্য শব্দ চায়ন, অল্প কথায় নিখুঁত বর্ননা প্রতিবেদনে সজীব ও সুখপাঠ্য করে। মনে রাখতে হবে। জীর্ন শব্দ, বিশ্লষনের বাহুল্য ব্যবহার বাগাড়ম্বর কথা পাঠককে টানে না। অস্পষ্ট বক্তব্য ব্যবহার করলে সংবাদ হয় নিস্প্রান। পাঠক যেন ভারাক্রান্ত না হয়। সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। বাড়তি ভাববাহী বাক্য মানেই বিভ্রান্তি। তরুন সাংবাদিকের স্বভাবতই জিজ্ঞাসা থাকে – সূচনা কত শব্দের হবে?? একে বাক্য বলা যাবেনা। কারন অনেকে বলবে সূচনা,২৫ শব্দের হতে পারে। কেউ বলবেন ২০ শব্দের। ১৬ শব্দের হওয়াটাই ভালো এমন অভিমত ও আছে কারোকারো।কিন্ত মনে রাখতে হবে, শব্দ গুনে সংবাদ সূচনা লেখা যায় না।

যতটুকু কম ও সংক্ষিপ্ত লেখা যায় সে চেষ্টাই করতে হবে।প্রথমে ভাবুন পরে লিখুন, এটাই প্রচলিত রীতি। তখনি বাড়বে একজন সাংবাদিকের গুরুত্ব এবং জনপ্রিয়তা একই সাথে প্রয়োজনীয়তাও কোন সাংবাদিক ব্যক্তিগত বিদ্বেষপ্রসূত খবর লিখবেন না।। কবর সবসময় বস্তুনিষ্ঠ হতে হবে।

সাংবাদিকের অনুসরনীয় আচরণবিধিঃ
১) জাতিসত্তা বিনাশী এবং দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, রাষ্ট্রীয় অখগুতা,ও সংবিধান বিরোধী বা পরিপন্থী কোন সংবাদ অথবা ভাষ্য প্রকাশ না করা।

২) মুক্তিযুদ্ধ,মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও অর্জনকে সমুন্নত রাখা এবং এর বিরুদ্ধে প্রচারনা থেকে বিরত থাকা।

৩) সংবাদপএ ও সাংবাদিকের প্রাপ্ত তথ্যাবলি সত্যতা ও নির্ভুলতা নিশ্চিত করা

৪) বিশ্বাসযোগ্য সূএ থেকে প্রাপ্ত তথ্য কোনরুপ শাস্তি ঝুঁকি ছাড়াই জনস্বার্থে প্রকাশ করা। এ ধরনের জনস্বার্থে যা প্রকাশিত সংবাদ যদি সৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে থাকে এবং প্রাপ্ত তথ্য যৌকিতভাবে বিশ্বাসযোগ্য বিবেচিত হয়,তবে এ ধরনের প্রকাশিত সংবাদ থেকে উদ্ভূত প্রতিকূল পরিনতি তেকে সাংবাদিকে রেহাই দেয়া।

৫) জনগনকে আকর্ষণ করে অথবা তাদের উপর প্রভাব ফেলে এমন বিষয়ে জনগনকে অবহিত রাখা একজন সাংবাদিকের দায়িত্ব। জনগনের তথা সংবাদপএের পাঠকগনের ব্যক্তিগত অধিকার ও সংবেদনশীলতার প্রতি পূর সম্মানবোধসহ সংবাদ ও সংবাদভাষ্য রচনা ও প্রকাশ করা।

৬) যে সকল সংবাদের বিষয়বস্তু অসাধু এবং ভিক্তিহীন অথবা যেগুলোর প্রকাশনায় বিশ্বাসভংগের আশঙ্কা আছে সে সকল সংবাদ প্রকাশ না করা।

৭) গুজব ও অসমর্থিত প্রতিবেদন প্রকাশের পূর্বে সেগুলোকে চিহ্নিত করা এবং যদি এসব প্রকাশ করা অনুচিত বিবেচিত হয় তবে সেগুলো প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকা।

৮) সংবাদপএ ও সাংবাদিক বিতর্কিত বিষয়ে নিজস্ব মতামত জোরালোভাবে ব্যক্ত করার অধিকার রাখেন। কিন্তু এরুপ করতে গিয়ে যেন খেয়াল থাকে।
ক) সত্য ঘটনা এবং মতামতকে পরিছম্নভাবে প্রকাশ না করা।
খ) পাঠককে প্রভাবিত করার উদ্দেশ্যে কোন ঘটনাকে বিকৃত না করা
গ) মূলভাষ্যে অথবা শিরোনামে কোন সংবাদকে বিকৃতি না করা বা অসাধুভাবে চিহ্নিত না করা।
ঘ) মূল সংবাদের উপর মতামত পরিচ্ছন্নভাবে তুলে ধরা।

৯) কূৎসামূলক বা জনস্বার্থ পরিপন্থী না হলে,বাহ্যত ব্যক্তি বিশেষের স্বার্থবিরোধী হলেও যথাযথ কর্তৃপক্ষ স্বাক্ষরিত যেকোন বিজ্ঞাপন সংবাদপএে প্রকাশের অধিকার সম্পাদকের আছে। কিন্তু এরুপ বিজ্ঞাপনের প্রতিবাদ করা হলে সম্পাদককে তা বিনা খরচে মুদ্রনের ব্যবস্হা করা।

১০) সম্পাদকীয়ের কোন ভুল তথ্যের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষ যদি প্রতিবাদ করে, তবে সম্পাদককে নৈতিক দায়িত্ব হচ্ছে একই পাতায় ভুল সংশোধন করে দুঃখ প্রকাশ করা।

১১) বিদ্বেষপূর্ণ খবর প্রকাশ না করা।

১২) কোন দুর্নীতি বা কোন ব্যক্তি বিরুদ্ধে আর্থিক বা অন্য কোন অভিযোগ সংক্রান্ত প্রতিবেদন তৈরি করার ক্ষেএে প্রতিবেদকের উচিত ঘটনার সত্যতা সম্পর্কে সাধ্যমতো নিশ্চিত হওয়া এবং প্রতিবেদককে অবশ্যই খবরের ন্যায্যতা প্রতিপন্ন করার মত যথেষ্ট তথ্য যোগাড় করা।

লেখকঃ সৈয়দ শফিকুর রহমান(পলাশ), সভাপতি-মিরপুর প্রেসক্লাব, ঢাকা।
নিউজ ডেস্ক ।। বিডি টাইম্‌স নিউজ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে