নামসর্বস্ব জরুরি বিভাগ দিয়ে দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোতে দেয়া হচ্ছে জরুরি সেবা। একটি ইমার্জেন্সি রুমে সব ধরনের জরুরি চিকিৎসার সুযোগ না থাকায় রোগীদের ঘুরতে হয় হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে। প্রতিটি সেকেন্ড যখন মহামূল্যবান তখন টিকেট কাটা, জরুরি ওষুধ সরবরাহসহ নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হয় ভুক্তভোগীদের। সমস্যা সমাধানে নীতিমালা তৈরির পরামর্শ চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের।
মুমূর্ষু বাবাকে নিয়ে ঢাকা মেডিকেলের বিভিন্ন ওয়ার্ডে দৌড়চ্ছেন দুই সন্তান। স্ট্রোকসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত পিতাকে হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নেয়া হলেও কর্তব্যরত চিকিৎসকদের নির্দেশনায় বিভিন্ন পরীক্ষার জন্য সার্জারি, মেডিসিনসহ ছুটতে হয় কয়েকটি বিভাগে। প্রতিদিনই ক্যাজুয়ালটিসহ কয়েকধরণের রোগীদের জরুরী বিভাগে তৎক্ষণাৎ চিকিৎসা দেয়া হলেও বাকিদের বিভিন্ন ওয়ার্ডে স্থানান্তরের পর দেয়া হয় জরুরী সেবা। জীবনের এই মূল্যবান সময়ে যথাসময়ে হাসপাতালের জরুরী বিভাগে এসেও নানা বিড়ম্বনায় অনেককেই হার মানতে হয় মৃত্যুর কাছে।ভুক্তভোগীরা জানান, অন্য ওয়ার্ডে ট্রান্সফার করতে চেষ্টা করা ছাড়াও পেশাদারিত্বের অভাব রয়েছে এখানে।
ইমার্জেন্সি ট্রিটমেন্টের জন্য ইমারর্জেন্সি মেডিসিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, দক্ষ নার্স ও টেকনিশিয়ান আবশ্যক। অথচ দেশে ইমারর্জেন্সি মেডিসিনের ওপর পড়াশোনা বা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় সাধারণ ক্যাটাগরির চিকিৎসকদের দিয়ে চলছে জরুরী চিকিৎসা সেবা। সমস্যা সমাধানে ইমারর্জেন্সি চিকিৎসা প্রদানের বিষয়ে নীতিমালা তৈরির পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের। ইমার্জেন্সি মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ওমর ফারুক বলেন, ‘ইমারজেন্সি বিভাগে রোগীরা গেলে সেখানে কি চিকিৎসা পাবে এবং সেখানে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি আছে কিনা এবং এসকল যন্ত্রপাতি চালানোর মতো লোক আছে কিনা সেটা দেখা দরকার। আমরা কিন্তু এসকল দিক থেকে পিছিয়ে আছি।’
ইমারজেন্সি রুমের ডাক্তারদের যেনো প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয় সেজন্য সরকারের কাছে আবেদন করা হবে বলে জানান ইমার্জেন্সি মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক জিয়াউদ্দিন আহমেদ।সমস্যা সমাধানে নার্স ও চিকিৎসকদের বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রদানের আশ্বাস স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীর। স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘স্পেশালাইজড যে সব ডাক্তার যারা বিশেষ মুহূর্তে রোগী দেখে থাকেন এবং যারা নার্স আছেন তাদেরকেও আমরা প্রশিক্ষণ দিচ্ছি।’
দেশের ৬০৩ টি সরকারি হাসপাতালের প্রায় সবকটিতেই দেয়া হয় না প্রকৃত জরুরী সেবা। রাজধানীর আগারগাওয়ের নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে অপেক্ষাকৃত আধুনিক জরুরী বিভাগ থাকলেও তা আন্তর্জাতিক মানের নয়। পাশাপাশি সারাদেশের চাপ সামাল দেয়ায় সর্বাধিক বড় জরুরী বিভাগ থেকেও ডিএমসির প্রকৃত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে রোগীরা।
নিউজ ডেস্ক, বিডি টাইমস নিউজ ।