আপনার শিশুকে সফল করে গড়ে তুলতে অনেকটাই নির্ভর করে তার বেড়ে ওঠার সময় ও পরিবেশের ওপর এই কথাটা তো অস্বীকার করার উপায় নেই যে, একটি শিশুর আচার-আচরণ, চাল-চলন, অভ্যাস- এই সবকিছুর অনেকটাই নির্ভর করে তার বেড়ে ওঠার সময় ও পরিবেশের ওপর। ঠিক যেমনভাবে তাকে ছোটবেলা থেকে শেখানো হবে তেমনটাই তো সে হয়ে উঠবে ভবিষ্যতে। তাই একটি সফল শিশুর পেছনে যেমন রয়েছে তার অভিভাবক, তেমনি পেছনেও রয়েছে একজন ব্যর্থ শিশুর শৈশবের কাহিনী। কি করে একটি শিশুর শৈশবকে সফল করে তুলতে সাহায্য করা যায়? চলুন দেখে আসি।
১. তাকে দায়িত্ব নিতে উৎসাহিত করে
একজন মানুষ তখনই দায়িত্বশীল হতে শেখে যখন ছোটবেলা থেকেই এই শিক্ষা তাকে দেওয়া হয়। তাই বয়স যতটাই কম হোকনা কেন, আপনার শিশুকে একটু একটু করে দায়িত্ব নেওয়া শিখতে সাহায্য করুন। তাকে কাজ দিন। সংসারের সাথে জড়িত সিদ্ধান্তগুলো তার উপস্থিতিতে আলোচনা করুন এবং খুব গৌণ হলেও কিছু দায়িত্ব বুঝিয়ে দিন। যাতে করে সে নিজের গুরুত্ব ও নিজের নেওয়া দায়িত্বের গুরুত্ব বুঝতে পারে। তবে খেয়াল রাখুন যেন এই দায়িত্বটুকুন সে একদম ঠিকঠাকভাবে পালন করতে সক্ষম হয়। কারণ, এতে করে তার আত্মবিশ্বাস মজবুত হবে।
২. স্বপ্ন দেখতে সাহায্য করে
আপনার শিশুকে স্বপ্ন দেখতে সাহায্য করুন। খুব ছোটবেলাতেই নিশ্চয় নিজের ভবিষ্যতকে নিয়ে স্বপ্ন দেখবে না কেউ। সেই কাজটা তাই অনেকটা গিয়ে বর্তায় তার বাবা-মায়ের ওপরে। আর তাই অভিভাবক হিসেবে নিজের শিশুকে স্বপ্ন দেখান বড় হওয়ার, ভালো মানুষ হওয়ার। খেয়াল রাখুন যেন স্বপ্নটা হয় বাস্তবসম্মত ও অনেক বেশি বড়। যাতে করে সেটার দিকে এগোতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত স্বপ্নকে পুরোপুরি ধরতে না পারলেও আংশিকভাবে সেটাকে ছুঁয়ে যেতে পারে আপনার শিশু।
৩. মানিয়ে নেওয়ার শিক্ষা দিয়ে
এখানে নেতিবাচকভাবে ভালো-মন্দ সব রকমের বিষয় ও পরিস্থিতির সাথে না জেনে-বুঝেই মানিয়ে নেওয়ার কথা বলা হচ্ছেনা। বলা হচ্ছে জীবনের বিভিন্ন পরিস্থিতির সাথে নিজেকে মিশিয়ে নেওয়ার কথা। এমনটা হতেই পারে যে কলেজে গিয়ে একেবারে আলাদা কোন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হলো আপনার শিশুকে। কিংবা নতুন কোন স্থানে, নতুন কোন পরিবেশে নতুন কোন ঘটনার মুখোমুখি হল সে। সেই সময়টায় যাতে করে চারপাশটাকে ভালোমতন বুঝে সেটার সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে এমনভাবে তাকে গড়ে তুলুন।
৪. হারকে মেনে নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে
বর্তমানের পরাজয় ভবিষ্যতের জয়ের সংকেত মাত্র। তাই আপনার শিশুকে শেখান যাতে করে একবার হেরে গেলে ভেঙে না পড়ে সেটাকে ইতিবাচকভাবে নিয়ে সামনে এগিয়ে চলে সে। তার মানসিকতাকে এমনভাবে গড়ে তুলুন যাতে করে নিজের হারকে বাজে কোন অভিজ্ঞতা হিসেবে না নিয়ে সেটাকে ভবিষ্যতে সফল হওয়ার সোপান হিসেবে মনে করে সে।
৫. সামাজিক হওয়ার শিক্ষা প্রদান করে
পরিসংখ্যানে দেখা যায় যে, সেসব শিশুরাই ভবিষ্যতে সফল হয় যাদের ভেতরে সামাজিক যোগাযোগের প্রবণতা থাকে। মূলত, বর্তমান পৃথিবীতে যোগাযোগই পারে একজন মানুষকে আরো একটু ভালো সুযোগকে হাতের মুঠোয় নিয়ে নিতে। তাই মুখ লুকিয়ে না থেকে পৃথিবীর কাছে পৌঁছতে পরামর্শ দিন তাকে।