বাংলাদেশের কৃষি ও পল্লী উন্নয়নে অবদান রাখতে চায় দক্ষিণ কোরিয়া। যে কৌশলে পল্লী উন্নয়নের জোয়ারে নিজেদের শহর পর্যন্ত উন্নত হয়েছে, আজ বিশ্বের কাছে উন্নত হিসেবে পরিচিতি লাভ বরেছে। সেই কৌশলেই বাংলাদেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে চায় দেশটি।
আজ শনিবার সাভারে ব্র্যাক সিডিএমএ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত দু’দেশের পল্লী উন্নয়নে তুলনামূলক অবস্থানের বিশ্লেষণমূলক এক সেমিনারে এমন প্রত্যয়ের কথাই জানান দেশটির সাবেক মন্ত্রী ও দক্ষিণ কোরিয়ান রুর্যাল কমিউনিটি করপোরেশেনে সিইও ড. স্যাং মু লি।
বেসরকারি সংস্থা পল্লী বীর উন্নয়ন সংস্থা আয়োজিত সেমিনারে অংশ নেন দু’দেশের পল্লী উন্নয়ন বিশেষজ্ঞসহ সরকারি ও বেসরকারি প্রতিনিধিরা।
সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য সামছুল আলম। বিশেষ অতিথি ছিলেন দক্ষিণ কোরিয়ার এফএও অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক চেয়ারম্যান ইয়ং কিউ চয়, গ্লোবাল এগ্রিকালচার পলিসি ইনস্টিটিউটের ভাইস প্রেসিডেন্ট বাং হোয়ান চো, বগুড়া রুর্যাল ডেভেলপমেন্ট একাডেমির মহাপরিচালক এম এ মতিন, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার মন্ডল, বেসরকারি সংস্থা পল্লী বীর উন্নয়ন সংস্থার প্রেসিডেন্ট সাইফুল্লাহ সাইয়িদ, ইন্টারন্যাশনাল ওয়াটার অ্যাসোসিয়েশনের এশিয়া বিষয়ক কমিউনিকেশন অফিসার জুবায়দুর রহমান শরিফ।
সেমিনারে দক্ষিণ কোরিয়ান রুর্যাল কমিউনিটি করপোরেশেনে সিইও ড. স্যাং মু লি বলেন, ‘১৯৬১ সালে বাংলাদেশ (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্থান) ও দক্ষিণ কোরিয়ার মাথা পিছু গড় আয় ছিল সমান। আজ দক্ষিণ কোরিয়া উন্নত দেশ আর বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ।’
তিনি বলেন, ‘সে সময় মাথা পিছু আয় ৯১ ডলার থাকলেও আজ দক্ষিণ কোরিয়ার ২৭ হাজার ডলার আর বাংলাদেশের গড় আয় ১৩০০ ডলার। আসলে এই পরিবর্তনের সূচনাই করেছে দক্ষিণ কোরিয়ার স্যামুয়েল আনডং আন্দোলন। যে আন্দোলনের ফসল গ্রাম থেকে ছড়িয়ে পড়েছে শহরে। ১৯৭০ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি পার্ক চুং হি এই আন্দোলনকে এগিয়ে নেন।’
সীমিত গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে প্রতিযোগিতায় সক্ষমতা অর্জন নিশ্চিত করাই ছিল সেই আন্দোলনে মূল লক্ষ্য বলে জানান তিনি।
দক্ষিণ কোরিয়ার গ্লোবাল এগ্রিকালচার পলিসি ইনস্টিটিউটের ভাইস প্রেসিডেন্ট বাং হোয়ান চো জানান, তার সংস্থার বার্ষিক বাজেট সাড়ে তিন বিলিয়ন ডলারের বেশি। তারাও বাংলাদেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে চান।
বাংলাদেশের পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য সামছুল আলম বলেন, বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়নে অনেক সাফল্য দেখিয়েছে। দু’দেশের বিশেষজ্ঞরা নিজ নিজ দেশের প্রেক্ষাপটে এগিয়ে যাবার কৌশলগুলো নিয়ে আলোচনা করেছেন।
দক্ষিণ কোরিয়ার উন্নয়ন পরিকল্পনার মডেল আমাদের দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।