দেশের ৮০ ভাগ মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ী খোদ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। কিন্তু দুর্বল আইনের কারণে তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা যায় না। এমন অভিযোগ করেছেন, মানবাধিকার কমিশনের বিদায়ী চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান। তিনি জানান, পুলিশ হেফাজতে একটি মৃত্যুর ঘটনায় ২২ বার চিঠি দিলেও, কোনো উত্তর দেয়নি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ অবস্থার সংস্থাটি রাখার যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান। দুই মেয়াদে গত ছয় বছর ধরে পালন করেছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব। প্রাতিষ্ঠানিক নিয়মে বিদায় বলতে হচ্ছে প্রিয় কর্মস্থলকে। বৃহস্পতিবার মগবাজারে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন কার্যালয়ের দৃশ্যগুলো ছিলো এমনই। ২০১০ সালে চারজন নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও এখন কমিশনের মোট কর্মকর্তা ৪৮জন। যারা নজর রাখেন দেশের ১৬ কোটি মানুষের মানববাধিকার বিষয়ে। বিদায় বেলা সফলতা ব্যর্থতার মুল্যায়ন হবে সেটাই স্বাভাবিক। ড. মিজানুর রহমানও নিজেকে , রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা থাকা বিষয়গুলো ছাড়া অন্য ইস্যুতে সফল মনে করেন।
সবচেয়ে বেশি মানবাধিকার লংঘনের ঘটনা যেহেতু আইন শৃংখলা আর বিচার ব্যবস্থার সাথে যুক্ত, সে হিসেবে বিদায়ী চেয়ারম্যানের মনে ক্রসফায়ার, গুম, সাদা পোষাকে গ্রেফতারসহ পুলিশি ব্যবস্থা নিয়েই বেশি ক্ষোভ। ২০১৪ সালের ৮ ফেব্রুয়ারী পল্লবী থানায় পুলিশ হেফাজতে মারা যাওয়া ঝুট ব্যবসায়ী জনির তদন্তের ব্যাপারে এখন পর্যন্ত ২২বার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে চিঠি দিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। কিন্তু মেলেনি কোন উত্তর। তাই নিজেকে অবজ্ঞার পাত্র মনে হয় ড. মিজানের।
রাষ্ট্র যদি না চায়, তবে কখনোই পাল্টাবে না দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি। সেক্ষেত্রে কমিশনের কাজ করার ক্ষমতা বাড়ানোর অনুরোধ আজই সাবেক হতে যাওয়া মানবাধিকার কমিশন চেয়ারম্যানের। আগত দিনে যেই দায়িত্ব পাবেন, যেন তিনি নির্ভয়ে কাজ করতে পারেন সরকারকে সেই অনুরোধ জানান ড. মিজানুর রহমান।