গ্লোবাল ফিনান্সিয়াল ইন্টেগ্রেটি রিপোর্ট অনুসারে, বাংলাদেশ থেকে ৭০ শতাংশ অর্থপাচার হয় বাণিজ্যিক লেনদেনের মাধ্যমে। এর আগে চট্টগ্রাম বন্দরে ভোজ্য তেলের চালানে তরল কোকেন ও গৃহস্থালি সামগ্রীর আড়ালে ভারতীয় রূপীসহ মিথ্যা ঘোষণায় আনা একাধিক পণ্যের চালান আটক হলেও ব্যাংকের এলসি ও ইএক্সপি জাল করে ২৯০ কনটেইনার পোশাক পণ্য রপ্তানি করে বিদেশে অর্থপাচারের ঘটনা শুল্ক গোয়েন্দার অনুসন্ধানে এই প্রথম ধরা পড়লো।
তৈরি পোশাক রপ্তানির নামে বিদেশে ১০০ কোটি টাকা পাচারকারী এস এন ডিজাইন নামের কথিত গার্মেন্টস মালিক শহিদুল ইসলামের হদিস পাচ্ছেনা শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ। এদিকে বিজিএমইএ জানিয়েছে এই গার্মেন্টস তাদের সদস্য নয়। তবে কোন ব্যাংক ও রপ্তানি প্রক্রিয়ার সাথে যুক্ত সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কারো যোগসাজশ ছাড়া ২৯০টি কনটেইনার জাল কাগজপত্রে রপ্তানি সম্ভব নয় বলে মনে করেন বিজিএমইএ’র সভাপতি। শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ জানায়, যে বা যারাই জড়িত থাকুক তদন্তে বেরিয়ে আসবে।
শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মইনুল খান জানান, অর্থ পাচারকারী গার্মেন্টস মালিকের হদিস না পেলেও তার সংযুক্ত লিংকেজগুলো সংগ্রহ করে জড়িত অন্যান্যদেরও বের করা হবে। তিনি বলেন, ‘তার প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা আমরা সংগ্রহ করেছি। সেই ঠিকানায় আমরা লোক পাঠিয়ে দেখেছি সেই ঠিকানাটা অস্তিত্বহীন। তার ব্যক্তিগত যে প্রোফাইল দেখছি আমরা, আরো কোন সম্পর্ক আছে কিনা আমরা সেটাও দেখছি। শুধু যে একজন ব্যক্তি জড়িত সেটা আমরা বিশ্বাস করছি না।’ এদিকে ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ পণ্য রপ্তানি হলেও বিষয়টি কারো নজরে না পড়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আইনের আওতায় আনার আহবান জানিয়েছেন বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান।
টিআইবি’র মতে এ ঘটনায় ব্যাংক ও সংশ্লিষ্ট সরকারী সংস্থার কর্মকর্তাদের যোগসাজশ থাকতে পারে। এক্ষেত্রে জড়িতদের চিহ্নিত করার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে সমন্বিত পদক্ষেপ নিয়ে অর্থ ফেরত আনার আহ্বান তাদের। টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, দুর্নীতি দমন কমিশন এবং অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিস এই চারটি প্রতিষ্ঠান যদি সংঘবদ্ধভাবে কাজ করে তাহলে যে দেশে অর্থপাচার হয়েছে সেখান থেকে অর্থ ফিরিয়ে আনা সম্ভব।’
ভুয়া ডকুমেন্টে গত পাঁচ বছরে তৈরি পোশাক রপ্তানির নামে বিদেশে ১০০ কোটি টাকা অর্থ পাচারের অভিযোগে এস এন ডিজাইনের বিরুদ্ধে বুধবার রাজধানীর মতিঝিল থানায় এন্টি মানি লন্ডারিং আইনে মামলা করে শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ। গত ডিসেম্বরে রপ্তানির আগে চট্টগ্রামের একটি কনটেইনার ডিপো থেকে এই প্রতিষ্ঠানের সাতটি কনটেইনার আটকের পর অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে ব্যাপক জালিয়াতির তথ্য।