বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, আওয়ামী লীগ নিজেদের নেতাদের গুরুত্ব না দিয়ে, গুম খুনে অভিজ্ঞ দলের লোকদের গুরুত্ব দিচ্ছে। আর তাতেই দেশে অস্থিরতা বাড়ছে। মঙ্গলবার রাজধানীতে ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ- আয়োজিত ইফতার অনুষ্ঠানে একথা বলেন তিনি। বেগম জিয়া অভিযোগ করেন, সন্ত্রাস দমন নয়, বরং সারাদেশে সন্ত্রাস ছড়িয়ে দিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করতে পরিকল্পিতভাবে কাজ করছে সরকার।

খালেদা জিয়া বলেন, তিনি (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) বিদেশিদের বলে বেড়াচ্ছেন সন্ত্রাস দমন করবেন। আসলে তিনি সন্ত্রাস দমন করবেন না, সারা দেশে সন্ত্রাস ছড়িয়ে দিয়ে জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটিয়ে দেশে অস্থির পরিবেশ সৃষ্টি করবেন। খুনি ও অত্যাচারীদের মূল্যায়ন করায় দেশের খুন-খারাপি বেড়েছে মন্তব্য করে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, আমরা আগেও বলেছি, সাধারণ লোকজনও জানে, তাদের দলের (আ’লীগ) লোকজনও এখন বলতে শুরু করেছে, আসল খুনি আওয়ামী লীগের সঙ্গেই রয়েছে। তাদের সঙ্গে এমন সব লোক রয়েছে, যারা খুন-খারাপিতে অনেক অভিজ্ঞ। অনেক আগে থেকেই খুন, গুম করে আসছে। স্বাধীনতার পর আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় ছিল, এ দলের লোকগুলোই তখন নিজেদের লোকজনকে গুম করত, খুন করত। তাদের নেতার সম্পর্কে খারাপ ভাষায় বক্তব্য দিত, অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করত। আজ নিজের দলের লোকগুলোকে মূল্যায়ন না করে হাসিনা ওই খুনি ও অত্যাচারীদের মূল্যায়ন করেছে, এজন্যই দেশের এ অবস্থা হয়েছে-বলেন খালেদা জিয়া। আসল খুনিদের বিদেশে পাঠিয়ে দিয়ে নিরীহ লোকদের ধরা হচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘হাসিনা নিজেই বলেছেন টার্গেট কিলিং ও গুপ্তহত্যায় কারা জড়িত তা তিনি জানেন। তাহলে কেন তাদের ধরছেন না। আসল ব্যক্তিকে না ধরে, তাদের আড়ালে রেখে বা ঘটনা ঘটার পর বিদেশে পার করে দিয়ে বিএনপিসহ অন্যান্য বিরোধী দলের নেতাকর্মী ও নিরীহ মানুষগুলোকে ধরছে। তাদের নামে মিথ্যে মামলা দিচ্ছে।’

সাঁড়াশি অভিযানের নামে চাঁদাবাজি ও গ্রেফতার বাণিজ্য চলছে অভিযোগ করে খালেদা জিয়া বলেন, এখন পর্যন্ত ৫ হাজার মানুষকে তারা জেলাখানায় ভরেছে। এদের মধ্যে বিএনপিরই আছে ২২শ’ লোক। প্রায় ৫০ জনকে ক্রসফায়ারে হত্যা করা হয়েছে। সাংবাদিক মাহমুদুর রহমানকে মিথ্যা মামলায় আটক রাখা হয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে ৭৮টি মামলা দেওয়া হয়েছে এবং সব মামলায় তিনি জামিন পেয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ এ জামিন বহাল রেখেছেন। তারপরও তাকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে না। স্বঘোষিত এই প্রধানমন্ত্রীর ছেলেকে যুক্তরাষ্ট্রে হত্যাচেষ্টা ও অপহরণের মিথ্যা মামলায় মাহমুদুর রহমানকে আটক রাখা হয়েছে।’

অ্যাব’র সভাপতি আ ন হ আখতার হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কিমিটর সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, চৌধুরী কামাল ইবনে ইউছুফ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন প্রমুখ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে