২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ২রা মার্চ পর্যন্ত নেপালের রাজধানী কাঠমুন্ডুতে একটানা ৭ দিন ব্যাপী একটি আন্তর্জাতিক  টিচিং সেশন অনুষ্টিত হয়। এটি  33rd South Asia Teaching Session on International Humantarian Law at Kathmandu. এই  আন্তর্জাতিক সেমিনারটির আয়োজন এবং সার্বিক তত্তাবধান ও ব্যবস্থাপনায় ছিল International Committee OF Red Cross (ICRC) এবং  Kathmandu School of Law. এতে সার্কভুক্ত ৮টি দেশের প্রতিটি দেশ থেকে ৪জন করে প্রতিনিধি এবং এর বাইরে ইরান ও উত্তর কোরিয়ার প্রতিনিধিদের অংশগ্রহন ছিল যারা –ICRC এর আমন্ত্রনে এবং সম্পূর্ন খরচে এই আন্তর্জাতিক সেমিনারে অংশগ্রহন করেন।

প্রতিদিন সকাল পৌনে  ৯টা থেকে কাঠমুন্ডুর পার্ক ভিলেজ রিসোর্টে ক্লাস শুরু হত এবং বিকেল ৫.৩০- ৬ টা নাগাদ ক্লাস শেষ হত। ক্লাসের মাঝে মাঝে চা বিরতি সহ দুপুরের লাঞ্চ বিরতি থাকত। লাঞ্চ ব্রেকের পর গোল টেবিল বৈঠক শুরু হত। প্রতিদিনই আলাদা দেশের চারজন করে এই গোল টেবিল বৈঠক সেশন চলত। প্রত্যেক দেশের প্রতিনিধিদের পরিচিতির জন্য টেবিলে আলাদা আলাদা নেমপ্লেট ছিল। জেনেভা, ইংল্যান্ড, তুরস্ক,শ্রীলংকা, ইরান, দিল্লী, নেপাল সহ বিভিন্ন দেশের প্রফেসরদের লেকচার পর্ব অনুষ্টিত হত। এছাড়াও ICRC এর আঞ্চলিক লিগ্যাল এ্যাডভাইজার যারা জার্মানীসহ বিভিন্ন দেশের ছিলেন তারাও Humaintarian Law যা মূলতঃ Law of War বিষয়ক, তার উপর জ্ঞানগর্ভ আলোচনা করেছেন।

এর আন্তর্জাতিক সেমিনারে আমরা বাংলাদেশ থেকে চারজন প্রতিনিধি ছিলাম। আমি প্রফেসর ড রেবা মন্ডল, ডীন, আইন অনুষদ , ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া(শিক্ষা ক্যাটাগরি); DBC’র সাংবাদিক নবনিতা চৌধুরী; মোঃ আওরঙ্গজেব, অতিরিক্ত ডিআইজি, বাংলাদেশ পুলিশ;মেজর মোঃ রফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ আর্মি; এই সেমিনারে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছি।মোট সাত দিনের সেমিনারে প্রায় ৪৫টির বেশি ক্লাস হয়েছে। অনেক কিছু শিখেছি। অনেক রকমের শিক্ষাদান পদ্ধতি শিখেছি যা আমার গঠনমূলক উপকারে আসবে যেহেতু পেশায় আমি একজন শিক্ষক। ১০টি রাষ্ট্রের ৩৯ জন অংশগ্রহনকারী এবং ১২ জন শিক্ষকমন্ডলীর কাছ থেকেও অনেক কিছু শিখেছি। তাদের ভদ্রতা, সুন্দর আচরন,পান্ডিত্য আমাকে মুগ্ধ করেছে।

একদিন সন্ধ্যায় কালচারাল প্রোগ্রাম হয়েছে। যা থেকে  অংশগ্রহনকারী ১০টি দেশের সংস্কৃতি এবং কালচারাল হেরিটেজ বিষয়ে অনেক অজানা তথ্য জানতে পেরেছি যা আমার ভীষন ভালো লেগেছিল।বিভিন্ন দেশের খাবারের সংমিশ্রন করে তৈরী করা খাবারগুলোও খুব উপভোগ্য ছিল।সবচেয়ে ভালো লেগেছিল হিমালয় কন্য খ্যাত নেপালের মানুষদের ব্যবহার।চারিদিক পাহাড় ঘেরা কাঠমুন্ডুর ফাইভ স্টার হোটেলে ৯ দিন ছিলাম। অত্যন্ত আন্তরিক ব্যবহার পেয়েছি ম্যানেজমেন্টের কাছ থেকে। আমাদের কাঠমুন্ডূতে অবস্থানরত সময়ে সেখানে স্নো-ফল হচ্ছিল, আমাদের কয়েকজন সহকর্মী এই বিরল দৃশ্য দেখার সুযোগ পেয়েছিলেন মর্নিং ওয়াকে গিয়ে। সব মিলিয়ে মনে গেথে রাখার মত একটি সেমিনার ছিল নেপালের কাঠমুন্ডুতে ।

লেখকঃ ড রেবা মন্ডল ,ডীন
আইন অনুষদ,ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়,কুষ্টিয়া
নিউজ ডেস্ক।। বিডি টাইম্ নিউজ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে