জার্মান ক্রিকেট বোর্ড গঠিত হয় ১৯৯৮ সালে৷ নাম “ডয়চার ক্রিকেট বুন্ড বা ডিসিবি”৷ এই বোর্ডে প্রেস সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বাংলাদেশের আদনান সাদেক ৷ গত ডিসেম্বরে তিনি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড, বিসিবি’র ঊর্ধ্বতন দুই কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক করেছেন৷ এঁরা হলেন, বিসিবির ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন চৌধুরী ও গেম ডেভেলাপমেন্ট ম্যানেজার নাজমুল আবেদিন৷
ডিডাব্লিউ’র সঙ্গে আলাপকালে আদনান সাদেক বলেন, বিসিবির কর্মকর্তারা জার্মানিতে ক্রিকেট খেলা হয় শুনে প্রথমে আশ্চর্য হয়েছেন৷ পরে জার্মানির ক্রিকেট উন্নয়নে আগ্রহ দেখিয়েছেন৷ গেম ডেভেলাপমেন্ট ম্যানেজার নাজমুল আবেদিন জার্মানিকে কোচ দিয়ে সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছেন বলে জানান সাদেক৷ তিনি বলেন, ‘‘জার্মানিতে কোনো প্রোফেশনাল কোচ বা খেলোয়াড় নেই৷ এই তথ্য জানার পর নাজমুল আবেদিন বলেন, বাংলাদেশে বেশ কয়েকজন কোর্স সম্পন্ন করা কোচ রয়েছেন৷ তাঁরা দুই-এক সপ্তাহের জন্য জার্মানিতে গিয়ে সেখানকার অ্যামেচার কোচ বা খেলোয়াড়দের প্রশিক্ষণ দিতে পারেন৷” এরপর আদনান সাদেক চলে যান বিসিবির প্রধান নির্বাহীর কথায়, যিনি আইসিসি পর্যায়ে জার্মানিকে সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছেন৷ ‘‘নিজাম উদ্দিন সাহেব আমাকে জানিয়েছেন, আইসিসি পর্যায়ে যদি কোনো ধরণের অনুদানের প্রশ্ন আসে যেখানে জার্মান ক্রিকেট জড়িত সেখানে হয়তো বাংলাদেশ সহায়তা করতে পারে৷”
আদনান সাদেক বলেন, জার্মান ক্রিকেট বোর্ড ১৯৯৮ সালে গঠিত হলেও জার্মানিতে ক্রিকেট খেলার ইতিহাস প্রায় দেড়শো বছরের পুরানো৷ মাঝখানে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও অন্যান্য কারণে ক্রিকেটের চলটা কমে গেলেও এখন আবার বাড়ছে৷ এ লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে ডিসিবি৷ আর তাদের সহায়তা করছে আইসিসি৷ তবে জার্মান সরকারের পক্ষ থেকে তারা কোনো আর্থিক সহায়তা পান না৷ কারণ ক্রিকেট বোর্ড এখনো জার্মান অলিম্পিক কমিটির অন্তর্ভুক্ত নয়৷
সাদেক বলেন, জার্মানিতে এখন ক্রিকেট ক্লাবের সংখ্যা প্রায় একশো৷ পুরো জার্মানিকে ছয়টি অঞ্চলে ভাগ করে প্রতি বছর টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয়৷ এরপর ছয়টি অঞ্চলের সেরা দলদের দিয়ে আয়োজিত হয় চ্যাম্পিয়নশীপ৷ সেখানে ৫০ ওভারের খেলা হয়৷ এছাড়া আলাদাভাবে টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টও হয়ে থাকে বলে জানান সাদেক৷
জার্মান ক্রিকেট বোর্ডের এই প্রেস সচিব বলেন, জার্মানিতে ক্রিকেট খেলে মূলত অভিবাসীরা৷ তবে স্থানীয় জার্মানদের মধ্যে খেলাটা জনপ্রিয় করতে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে৷ যেমন যে ক্রিকেট ক্লাবগুলো রয়েছে, তারা যদি আইসিসি’র কাছ থেকে সহায়তা পেতে চায় তাহলে তাদেরকে পূর্বশর্ত হিসেবে যুব ও মহিলা ক্রিকেটের উন্নয়নে কাজ করতে হয়৷ এতে দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন স্কুলের জার্মান শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্রিকেটের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে৷ অনেক জার্মান কিশোর জাতীয় দলে খেলারও ইচ্ছা পোষণ করছে৷ সাদেক বলেন, গত বছর যুব ক্রিকেট টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয়েছিল৷ তাতে ১২টি স্কুল অংশ নিয়েছিল৷ আশার কথা হচ্ছে, অংশগ্রহণকারী দলগুলোর খেলোয়াড়দের মধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশই ছিল জার্মান কিশোর৷ ‘‘আমাদের জাতীয় দলে এখন দুইজন খাঁটি জার্মান রয়েছেন৷ এছাড়া ক্লাবগুলোতেও জার্মানরা খেলছে৷”
বর্তমানে আইসিসির ব়্যাংকিং-এ জার্মানির অবস্থান ৩৯ নম্বরে৷ দুই বছর আগে যেটা ছিল ৪৯৷ সাদেক আশা করছেন, বাংলাদেশের সহযোগিতা পেলে জার্মানি ক্রিকেটে আরও এগিয়ে যাবে৷