যদিও বাংলা ভাষাভাষি মানুষের দেশ হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ, কিন্তু বহুজাতির বহুভাষার বৈচিত্র্যও বিদ্যমান। প্রায় পঞ্চাশটি, সংখ্যায় ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী চল্লিশটি পৃথক ভাষায় কথা বলে।
ষোল কোটির দেশে আটানব্বই ভাগ মানুষ বাংলা ব্যবহার করলেও সমতল ও পাহাড়ী এলাকায় বিভিন্ন ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর ত্রিশ লাখ মানুষ পৃথক চল্লিশটি ভাষা ব্যবহার করে। এধরনের ৪১টি ভাষার মধ্যে ১৪টি ভাষা নানা কারণে বিপন্নের পথে।
আবির্ভাবের শুরুতে মানুষ চিত্রের মাধ্যমে কোন কিছুর প্রতীকধর্মী ছবি এঁকে মনের ভাব জানাতো। এরপর ধ্বনি থেকে লিপি, তারপর অক্ষরলিপির মাধ্যমে মনের ভাব প্রকাশ করে। ব্রাহ্মি লিপির নানা বিবর্তনের ধারাবাহকতায় বাংলা লিপি আজকের জায়গায় এসেছে।
পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি এবং বান্দরবানসহ সিলেট, গাজীপুর, মধুপুরের বনাঞ্চলে সংখ্যায় ক্ষুদ্র প্রায় ৩০ লক্ষ জাতিগোষ্ঠীর বাস। তারা দেশের মোট জনসংখ্যার দুই শতাংশ। এই জনগোষ্ঠীগুলো ৪০টি পৃথক ভাষায় কথা বলে। সেগুলোর কয়েকটি ভাষায় দূর অতীতে সাহিত্য রচিত হলেও এখন হারিয়ে যেতে বসেছে।
মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষার ব্যবস্থা না থাকা, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের অভাব ও জীবিকার প্রয়োজনে নিজের আদি নিবাস ত্যাগ করে শহরে বসবাসসহ নানা কারণে চাক, কোডা, কোল, কন্দ, খুমিসহ প্রায় ১৪টি ভাষা বিপন্ন হবার পথে। গাজীপুরের ২৫ বছর বয়সী সুশান্ত বর্মন স্নাতকের ছাত্র। নিজের মাতৃভাষায় কথা বলতে পারেন না। তাই অনুশোচনায় ভোগেন জানালেন। সুশান্ত বর্মন একা নন, এ গ্রামের অন্যান্য বাসিন্দারাও নিজের ভাষা নিয়ে উদ্বিগ্ন।
বিবর্তনের ধারায় পৃথিবীতে অগণিত ভাষা বিলুপ্ত হয়েছে। দেশে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর বয়োজ্যেষ্ঠরা নিজের ভাষার চর্চা করলেও নতুন প্রজন্ম পড়ালেখা আর পেশার কারণে সেই চর্চার প্রয়োজন হারিয়েছে।
নিউজ ডেস্ক ।। বিডি টাইম্স নিউজ