মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর রিভিউয়ের আবেদন খারিজ করেছে আদালত। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ নিজামীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছে। এর ফলে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে নিজামীর দণ্ড কার্যকরে আর কোনো আইনি বাধা থাকল না। মতিউর রহমান নিজামী জামায়াতের আমীর এবং সাবেক বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের মন্ত্রী ছিলেন।
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাসহ চার বিচারকের আপিল বেঞ্চ বেলা সাড়ে ১১টায় এই রায় দেন। এর আগে, গত ২৯শে মার্চ রিভিউ আবেদন করেন নিজামীর আইনজীবীরা। এতে মোট ৪৬টি কারণ দেখিয়ে আপিল বিভাগের ফাঁসির রায় বাতিল করে খালাস ও অভিযোগ থেকে অব্যাহতি চাওয়া হয়।
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম জানান, রায় কার্যকরে আর কোনো বাধা নেই।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেয়া মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে গত ৬ই জানুয়ারি নিজামীর মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার রায় দেয় আপিল বিভাগ।
১৫ই মার্চ প্রকাশ হয় পূর্ণাঙ্গ রায়। আজ রিভিউয়ের রায়ে নিজামীর সর্বোচ্চ দণ্ড বহাল থাকলো।
উল্লেখ্য, একাত্তরে জামায়াতের ছাত্র সংগঠন- ইসলামী ছাত্র সংঘের বেশিভাগ নেতাকর্মীই যোগ দেয় আল বদর বাহিনীতে। আর এর সভাপতি মতিউর রহমান নিজামী ছিলেন বদর বাহিনীর প্রধান। তার নির্দেশ উস্কানি ও সহায়তায় স্বাধীনতাকামী জনগণের ওপর নৃশংস অত্যাচার চালায় রাজাকার ও আলবদর সদস্যরা।
মানবতাবিরোধী অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত নিজামীর আপিল আংশিক মঞ্জুর করে হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ ও বুদ্ধিজীবী হত্যাসহ তিন অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখে সর্বোচ্চ আদালত।
নিজামীর পরিকল্পনায় একাত্তরের ১০ই মে পাবনার বাউশগাড়ি গ্রামে হত্যা করা হয় অন্তত ৪৫০ জনকে। ধর্ষণের শিকার হন ৩০ থেকে ৪০ নারী। একাত্তরের ২৭শে নভেম্বর নিজামীর নির্দেশে রাজাকার ও পাক বাহিনীর অভিযানে পাবনার ধুলাউড়ি গ্রামে নিহত হয় ৫২ জন।
পরাজয় নিশ্চিত জেনে, একাত্তরের ১০ থেকে ১৫ই ডিসেম্বর পর্যন্ত চলে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড। ইসলামী ছাত্রসংঘ ও আলবদর প্রধান হিসেবে এর নীল নকশা করেন নিজামী। এ অভিযোগেও মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় তাকে।
এছাড়া আলোচিত ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায়ও ফাঁসির দণ্ড পেয়েছেন তিনি। ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলারও অন্যতম আসামি মতিউর রহমান নিজামী।