“বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নঃআন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতির মাধ্যমে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠা”র লক্ষে শনিবার ৭ জুলাই সকাল সাড়ে ১০ টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে ইন্টার রিলিজিয়ান হারমোনি সোসাইটির উদ্যোগে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নৌ পরিবহন মন্ত্রী মো. শাহজাহান খান এমপি। প্রধান অতিথি’র বক্তব্যে মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মানব জাতির জন্য কাজ করে ছিলেন। একটি ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেন, আমি একজন মানুষ, আমি বাঙালি এবং আমি একজন মুসলমান। এই লাইন থেকে আমরা বলতে পারি, তাঁর দর্শন ছিল অসাম্প্রদায়িক।
মন্ত্রী আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর চিন্তা চেতনা এবং দর্শন ছিল অসাম্প্রদায়িক। বিশ্ব শান্তির আহবান ছিল তার কন্ঠে সদা উচ্চকিত। পাকিস্থান সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র ভেঙ্গে ধর্ম নিরপক্ষ রাষ্ট্র গঠনে ২৩ বছর তার ত্যাগের ১২ বছর কারাবাস করে ফাসির মঞ্চে গিয়েও আত্মসমর্পণ না করে তিনি প্রমান করেছেন যে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসীদের মধ্যে তিনি অন্যতম। যার জন্য তিনি ১৯৪৭ সালে সদ্য স্বাধীনতা প্রাপ্ত সাম্প্রদায়ীক আদর্শের ভিত্তিতে স্বাধীনতা প্রাপ্ত একটি দেশের সকল সম্প্রদায়ের সব মানুষকে এক কাতারে এনে দাড় করতে সক্ষম হয়েছিলেন। পাকিস্তানি সাম্প্রদায়ীক রাষ্ট্র ভেঙ্গে পূর্ব পাকিস্তান কে অসাম্প্রাদায়ীক রাষ্ট্র হিসাবে বাঙ্গালী জাতিকে উপহার দেওয়া ছিল বড় চ্যালেঞ্জ। যা মোকাবেলা করে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেন বঙ্গবন্ধু। যার চার মূল নীতি হচ্ছে ধর্ম নীরপেক্ষাতা বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদ, গনতন্ত্র ও সমাজতন্ত্র। পাকিস্তানের সময় কবি শুরু ছিলেন নিষিদ্ধ, আর স্বাধীনতার পর কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি, হয়েছে বাংলাদেশের জাতীয় সংঙ্গীত। বঙ্গবন্ধু বলতেন বিশ্বের মানুষ দুইশিবিরে বিভক্ত, শোষক, আর শোষিত। আমি শোষিতের পক্ষে সে জন্য তিনি ল্যাটিন আমেরিকা, ভিয়েতনাম কম্বোডিয়া, লাওস, মোজাম্বিক, বিসাউ এর জনগনের অধীকারের পক্ষে ছিলেন। আজীবন সা¤্রাজ্যবাদ, উপনিবেশবাদ সাম্প্রোদায়িকতাবাদের বিরুদ্ধে তার ভূমিকা ছিল বিশ্বব্যাপী প্রসংশিত। তার কারণে ১৯৭২ সালের ১০ অক্টোবর চিলির রাজধানী সান্তিয়াগোতে বিশ্ব শান্তি পরিষদের প্রেসিডিয়াম সম্মেলনে বঙ্গবন্ধুকে জুলিওকুরি শান্তি পদকেভূষিত করা হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে সংগঠনের চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা লেখক গবেষক মিঞা মুজিবুর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধু একটি সাম্প্রাদায়িক রাষ্ট্র পাকিস্তান থেকে একটি ধর্মরিপেক্ষ দেশ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আমরা বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ার লক্ষে বাংলাদেশ ইন্টার রিলিজিয়ান হারমোনির সোসাইটির পক্ষ থেকে বিশ্বব্যাপি আন্তধর্মীয় সম্প্রীতি ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় আমরা কাজ করে যাচ্ছি। অনুষ্ঠানের সংগঠনের মহাসচিব মনোরঞ্জন ঘোষাল বলেন, বঙ্গবন্ধু আওয়ামী মুসলিম লীগ থেকে বাংলাদেশের সকল ধর্মের জন্য আওয়ামী লীগ প্রতিষ্টা করেছিলেন। তিনি নিজ ধর্মে বিশ্বাসী ছিলেন এবং অন্যান্য ধর্মের প্রতিও শ্রদ্ধাশীল ছিলেন।
অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে একটি ভিডিও উপস্থাপন করেন অধ্যাপক ডা. মতিয়ার রহমান, চেয়ারম্যান, কিউ. আর. এফ। এছাড়া অনুষ্ঠানের আরও বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়, সাবেক উপাচার্য ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, সামীম মোঃ আফজাল, মহাপরিচালক, ইসলামিক ফাউন্ডেশন,স্বামী স্থিরাত্মানন্দ, সম্পাদক, রামকষ্ণ মিশন, চাঁদপুর, শ্রীমৎ কান্তিবন্ধু ব্রহ্মচারী, সভাপতি জগদ্ববন্ধু মঠ, ঢাকা, অধ্যাপক হীরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস , সভাপতি, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু সমাজ সংস্কার সমিতি, অধ্যাপক ড. তপন ডি রোজারিও, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ভেনারেবল বুদ্ধপ্রিয় মহাথেরো, সহ-সভাপতি বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘ, মি. আজাদ বিন্দার সিং, গ্রন্থি, গুরুদোয়ারা, নানকশাহী, ঢাকা, ড. মোহাম্মদ আবদুল হাই,ইউ আর আই প্রতিনিধি, বাংলাদেশ ও সমীর দো শেখারা, সেক্রেটারি, শ্রীলংকা হাই কমিশন বাংলাদেশ।
মনোরঞ্জন ঘোষাল
মহাসচিব, ইন্টার রিলিজিয়ান হারমোনি সোসাইটি