জহির সিকদার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সংবাদদাতাঃ বাংলা সাহিত্য অঙ্গনে একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ হিসেবে ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কবি আল মাহমুদ গবেষণা কেন্দ্র ও স্মৃতি পরিষদ’ গঠন করা হয়েছে।
এ উপলক্ষে শনিবার টি এ রোডের অস্থায়ী কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত যৌথ এক আলোচনা সভায় কবি আল মাহমুদ গবেষণা কেন্দ্র ও স্মৃতি পরিষদ’ গঠন করা হয়।
সভায় উপস্থিত সকল সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে ১৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। এর ফলে আনুষ্ঠানিকভাবে কমিটি গঠনের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠানটির যাত্রা শুরু করা হয়েছে। কবি আল মাহমুদের সাহিত্যকর্ম ও জীবন নিয়ে গবেষণা এবং তার স্মৃতিকে সংরক্ষণ করার লক্ষ্যেই উক্ত গবেষণা কেন্দ্র ও স্মৃতি পরিষদ গঠন ও প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে।
কবি আল মাহমুদ গবেষণা কেন্দ্র ও স্মৃতি পরিষদ গঠনকল্পে অনুষ্ঠিত সভায় সর্বসম্মতিক্রমে বিশিষ্ট সাংবাদিক, কবি, ও গীতিকার মোঃ ইব্রাহিম খান সাদাতকে সভাপতি, কবি লিটন হোসাইন জিহাদকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচন করে প্রাথমিকভাবে ১৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন সহ সভাপতি প্রভাষক রাবেয়া জাহান তিন্নি, সাংবাদিক জাহাঙ্গির খান পলাশ, কবি ও গবেষক গাজী তানভীর আহমেদ, সহ-সম্পাদক সালাউদ্দিন খান, কবি রাকিবুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক সায়মন মৃধা, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক কবি রিয়াজ ইনসান, কোষাধ্যক্ষ কবি গোলাম মোস্তফা, প্রচার সম্পাদক: জাকির হোসাইন জিকু, সদস্য: কবি জমির হোসেন পারভেজ, সদস্য:ইমি আক্তার। সংগঠনটি
প্রতিষ্ঠার পর কমিটির সভাপতি মোঃ ইব্রাহিম খান সাদাত বলেন, “কবি আল মাহমুদ বাংলা সাহিত্যের অমূল্য রত্ন। তার অমূল্য সাহিত্য সৃষ্টি ও জীবনদর্শন নিয়ে গভীর গবেষণা এবং নবীন প্রজন্মের মধ্যে তা ছড়িয়ে দেওয়াই আমাদের মূল লক্ষ্য।” এ গবেষণা কেন্দ্রটি কবি আল মাহমুদের সাহিত্য ও জীবনী সংরক্ষণ, প্রকাশনা, সেমিনার করবে। সারা বিশ্বে বাংলা ভাষার কবি ও সাহিত্যিকদের মধ্যে প্রতি বছর উক্ত গবেষনা কেন্দ্র থেকে সম্মাননা পদক প্রদান করা হবে। কবি আল মাহমুদের অমর সৃষ্টি সোনালী কবিন এর নামানুসারে এই পদকের নাম হবে ” সোনালী কাবিন” যা একটি মর্যাদাপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রদান করা হবে এবং প্রতি বছর ১৫ ফেব্রুয়ারী কবির জন্মস্থান ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কবি আল মাহমুদ সাহিত্য মেলা করা সহ অন্যান্য সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের মাধ্যমে তার স্মৃতি অম্লান রাখতে কাজ করবে বলে নবগঠিত কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়। উল্লেখ্য কবি আল মাহমুদ বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কণ্ঠস্বর হিসেবে পরিচিত, তার কবিতায় গ্রামবাংলার প্রকৃতি, জীবনযাত্রা, এবং ঐতিহ্যের সজীব প্রতিচ্ছবি তিনি এঁকেছেন। কবি আল মাহমুদ ১৯৩৬ সালের ১১ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মৌড়াইল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। আল মাহমুদ বাংলা কবিতার আধুনিক যুগের অন্যতম প্রভাবশালী কবি হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন। তিনি বায়ান্নোর ভাষা আন্দোলন,একাত্তরের রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। সাংবাদিক হিসাবে তার যথেষ্ট ব্যুৎপত্তি ছিল। ২০১৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় মৃত্যুবরণ করা এই মহান কবি তার সৃষ্টিকর্মের মাধ্যমে আজও বাংলা সাহিত্যের আকাশে দীপ্যমান। তার সাহিত্যকর্ম নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রেরণা দিয়ে চলেছে, এবং বাংলা সাহিত্যে তিনি চিরকাল বেঁচে থাকবেন।
উল্লেখ্য আমার মায়ের সোনার নোলক হারিয়ে গেল শেষে/হেথায় খুঁজি হোথায় খুঁজি সারা বাংলাদেশে।’ কিংবা সোনালি কাবিন কবিতায়- ‘বধূবরণের নামে দাঁড়িয়েছে মহামাতৃকুল/গাঙের ঢেউয়ের মতো বলো কন্যা কবুল কবুল।’ আবার ‘আম্মা বলেন, পড়রে সোনা/ আব্বা বলেন, মন দে/পাঠে আমার মন বসে না/কাঁঠালচাঁপার গন্ধে।’ এমন অসংখ্য কালজয়ী কবিতা ও শিশুতোষ কবিতার স্রষ্টা, আবহমান বাংলা ও বাঙালি ঐতিহ্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রূপকার, আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদের জন্ম ১১ জুলাই ১৯৩৬ সাল।এই দিনে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মৌড়াইল গ্রামের মোল্লাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। ।কবিতা, গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, ভ্রমণকাহিনী, আত্মজীবনীসহ বিভিন্ন বিষয়ে বহু গ্রন্থ রচনা করেছেন বরেণ্য এই কবি।
কবি আল মাহমুদের উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে- ‘সোনালী কাবিন’, ‘অদৃষ্টবাদীদের রান্নাবান্না’, ‘একচক্ষু হরিণ’, ‘মিথ্যাবাদী রাখাল’, ‘আমি দূরগামী’, ‘দ্বিতীয় ভাঙন’, ‘উড়ালকাব্য’ ইত্যাদি। ‘কাবিলের বোন’, ‘উপমহাদেশ’, ‘ডাহুকি’, ‘আগুনের মেয়ে’, ‘চতুরঙ্গ’ ইত্যাদি তার উল্লেখযোগ্য উপন্যাস। ‘পানকৌড়ির রক্ত’সহ বেশকিছু গল্পগ্রন্থও রচনা করেছেন তিনি। এ ছাড়া ‘যেভাবে বেড়ে উঠি’ তার আত্মজীবনী গ্রন্থ। কবি আল মাহমুদ বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কণ্ঠস্বর হিসেবে পরিচিত তার কবিতায় গ্রাম বাংলার প্রকৃতি,জীবনযাত্রা এবং ঐতিহ্যের সজীব প্রতিচ্ছবি তিনি একেঁছেন। ১৯৩৬ সালের ১১ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মৌড়াইল গ্রামে জন্মগ্রহন করা আল মাহমুদ বাংলা কবিতার আধুনিক যুগের অন্যতম প্রভাবশালী কবি হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন। তিনি বায়ান্নোর ভাষা আন্দোলন একাত্তরের রনাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। সাংবাদিক হিসেবে তার যথেষ্ঠ বু্যৎপত্তি ছিল। ২০১৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারী ঢাকায় মৃত্যু বরন করা এই মহান কবি তার সৃষ্টি কর্মের মাধ্যমে আজও বাংলা সাহিত্যের আক্শে দীপ্যমান। তার সাহিত্যকর্ম নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রেরণা দিয়ে চলেছে এবং বাংলা সাহিত্যে তিনি চিরকাল বেচেঁ থাকবেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া নিউজ ডেস্ক। বিডি টাইমস নিউজ