ভারতের উড়িষ্যায় ঐতিহাসিক পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে পরিচয় গোপন রেখে অবৈধ অনুপ্রবেশের চেষ্টার অভিযোগে ৯ বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে রাজ্যটির পুলিশ। সোমবার এই বিষয়ে একটি অফিসিয়াল বিবৃতি জারি করে মন্দির কর্তৃপক্ষ।
বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, রোববার(৩’রা মার্চ) সন্ধ্যায় মন্দিরের রীতিনীতি লঙ্ঘন করে ভিতরে ঢুকে পড়েন ওই ৯’বাংলাদেশি। বিষয়টি নজরে আসতেই বিশ্ব হিন্দু পরিষদের তরফে থানায় অভিযোগ জানানো হয়। অভিযোগের ভিত্তিতে ৯’জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে প্রথমে আটক ও পরে গ্রেপ্তার দেখিয়ে স্থানীয় সিংহদ্বার থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। পুরীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুশীল মিশ্র বলেন, ‘আমরা একটি অভিযোগ পেয়েছি যে বাংলাদেশ থেকে কিছু অহিন্দু মন্দিরে প্রবেশ করেছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে নিয়ম লঙ্ঘন করে অহিন্দুরা মন্দিরের ভিতরে প্রবেশ করেছেন। প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমরা ধৃতদের পাসপোর্ট যাচাই করছি। যারা নিয়ম লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পুলিশ সূত্রে খবর, বাংলাদেশ থেকে কলকাতা হয়ে তারা সবাই পুরী শহরের একটি হোটেলে উঠেছিলেন। তাদের থেকে পাওয়া নথি অনুযায়ী কেউই হিন্দু ধর্মাবলম্বী নয়। মন্দির চত্তরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে এদের সবাইকে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে দ্রুত সিংহদ্বার থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। আটক সবারই বাংলাদেশি পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে এবং এই নয় জন যে হোটেলে ছিলেন তাদের সেই ঘরেও তল্লাশি চালানো হয়েছে বলেও নিশ্চিত করেছে পুলিশ। ১২ শতাব্দির এই মন্দিরে বরাবরই বিদেশি পর্যটকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ। রীতি অনুযায়ী, পুরীর মন্দিরের গর্ভগৃহে প্রবেশের অনুমতি রয়েছে কেবলমাত্র হিন্দুদেরই। এখানে ভগবান বিষ্ণুর অবতার হিসেবে পুজিত হন ভগবান জগন্নাথ। তার সঙ্গেই নিয়মিত পুজো পান বড় ভাই ভগবান বলরাম এবং বোন দেবী সুভদ্রা।
পুরীর মন্দিরের সেবায়েত যোগেন্দ্র দশমহাপাত্র বলেন, ‘আমরা অবাক হয়ে যাচ্ছি, কেন পুলিশ কিংবা নিরাপত্তারক্ষীরা পোশাক দেখেও অ-হিন্দুদের চিহ্নিত করতে পারলেন না? অ-হিন্দুদের পুরীর মন্দিরে প্রবেশ আইনের চোখে অপরাধ না হলেও মন্দির কর্তৃপক্ষের অধিকার রয়েছে নির্দিষ্ট জরিমানা ধার্য করার।’
পুরীর বিশ্ব হিন্দু পরিষদ-বজরং দলের কর্মী শান্তনু পাণ্ডে বলেন, ‘আমরা এই নয়জনকে চিহ্নিত করি এবং সঙ্গে সঙ্গে সিংহদ্বার পুলিশকে ঘটনাটি জানাই। পুলিশ তাদের আটক করে তদন্ত শুরু করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা পুলিশ এবং জেলা প্রশাসনকে মন্দিরে নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য অনুরোধ করেছি।